কলকাতা, 4 নভেম্বর: আরজি কর আবহে নির্যাতিতার খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে একসঙ্গে সরব হয়েছিলেন তিনটি ক্লাবের সমর্থকরা। হাতে হাত ধরে সেদিন পথে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান-মহামেডান। সে সময় এই প্রতিবাদকে শাসকের বিরুদ্ধে সরব হওয়া হিসেবে দেখেছিল বিরোধী শিবির। শুধু তাই নয়, ময়দানও এমন প্রতিবাদকে নজিরবিহীনই বলেছিল। সোমবার আরও এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নৈহাটি বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী সনৎ দে'র হয়ে ব্যাটন ধরলেন তিন ক্লাবের কর্মকর্তারা।
নৈহাটিতে ভোট-
আগামী 13 নভেম্বর নৈহাটিতে বিধানসভার উপনির্বাচন। আর সেই নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন সনৎ দে। এবার তাঁকে ভোটের ময়দানে সমর্থন করলেন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান ক্লাবের প্রধানরা। শুধু তাই নয়, রাজ্য ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা আইএফএ-র সচিব অনির্বাণ দত্তও সনতকে নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় বিশেষ বার্তাও দিয়েছেন। এই অবস্থায় একযোগে সনতের সমর্থনকে নজির বিহীন বলছে রাজনৈতিক মহল।
কী ঘটেছে-
- এদিন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে তাদের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে, এই তিন ময়দানি ক্লাবের কর্মকর্তাদের বক্তব্য সম্বলিত একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার, মোহনবাগানের শীর্ষকর্তা দেবাশিস দত্ত এবং মহামেডানের শীর্ষকর্তা কামারুদ্দিন ফুটবল সংগঠক হিসেবে সনৎ দের প্রশংসা করেছেন। আর সেখান থেকেই উঠছে প্রশ্ন ৷ তাহলে কি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে জেতাতে জোট বাঁধল তিনক্লাব?
- তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল- এই তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে এদিন প্রশস্তি বাক্য সোনা গিয়েছে আইএফএ'র সেক্রেটারি অনির্বাণ দত্তের গলাতেও। ফুটবল ময়দানে তিনি কীভাবে তৃণমূল প্রার্থীর থেকে সাহায্য পেয়েছেন সে কথাই শুনিয়েছেন তিনি।
ইস্ট-মোহন কর্তাদের বক্তব্য-
- মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত জানান, ম্যাচ আয়োজন করতে স্থানীয় সংগঠকদের সঙ্গে তাঁদের সুসম্পর্ক রাখতে হয়। এর আগে যখন কল্যাণীতে আই লিগের ম্যাচ আয়োজন করতে হয়েছে তখনও স্থানীয় সংগঠকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। এখনও তা আছে। তাঁকে দক্ষ সংগঠক হিসেবে জানেন। সনৎবাবুকেও একইভাবে জানেন তিনি। এরপরই মোহনকর্তার সংযোজন, "আমার বক্তব্যটা যদি দেখেন তাহলে দেখবেন সনৎবাবুকে দক্ষ ক্রীড়াসংগঠক হিসেবে চিনি বলেছি। মোহনবাগান ক্লাব রাজনীতির ঊর্ধ্বে। এখানে প্রাক্তন মন্ত্রী যতীন চক্রবর্তী সদস্য ছিলেন। খেলা দেখতে আসতেন। আবার সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও ছিলেন। বামপন্থী যতীন চক্রবর্তীর সঙ্গে সুব্রতবাবু খেলা দেখতেন মোহনবাগানকে সমর্থন করার জন্য। জ্যোতি বসুও আমাদের সমর্থক ছিলেন। তাই মোহনবাগান রাজনীতির ঊর্ধ্বে ছিল এবং রয়েছে।
- এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া চেয়ে যোগাযোগ করা হলে ইস্টবেঙ্গল শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার মন্তব্য করতে রাজি হননি ৷
এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। বরাবরই ময়দানের ক্লাবগুলির সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক মধুর। রাজ্যের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এমনকী বিদেশ সফরেও তিন ক্লাবের কর্তাদের দেখা যায়। সেই আনুগত্য থেকে এধরনের ঘটনায় নতুনত্ব কিছু নেই বলছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা।
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য