বিধাননগর, 11 সেপ্টেম্বর: জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে শুরু থেকেই রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের সর্বস্তরের মানুষ ৷ মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল, সেই ছবির কোনও ব্যতিক্রম ঘটেনি বিধাননগরে ৷ জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান বিক্ষোভে রাত থেকে সকাল খাবার-জল নিয়ে হাজির হয়েছেন বহু মানুষ ৷
খাবার-জল নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে সাধারণ জনগণ (নিজস্ব চিত্র) অনেকে আবার বিভিন্ন খাবারের সংস্থায় অর্ডার দিয়ে সেখানে খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছেন ৷ যা দেখে চিকিৎসকরা বলছেন যে এইভাবে মানুষের সমর্থন আন্দোলনকারীদের মনোবল বৃদ্ধি করছে ৷
খাবার-জল নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে সাধারণ জনগণ (নিজস্ব চিত্র) আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর থেকে লাগাতার আন্দোলন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে তাঁদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বলা হয় ৷ মঙ্গলবার বিকেল 5টা পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয় ৷
খাবার-জল নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে সাধারণ জনগণ (নিজস্ব চিত্র) কিন্তু রাতে জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়ে দেন যে দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন ৷ একই সঙ্গে স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের ডাক দেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ ঘোষণা মতো মঙ্গলবার বেলার দিকে এই অভিযান শুরু হয় ৷ তার পর স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা ৷
খাবার-জল নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে সাধারণ জনগণ (নিজস্ব চিত্র) তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ান বহু সাধারণ মানুষ ৷ মঙ্গলবার বিকেল থেকেই খাবার, জল নিয়ে অনেকে হাজির হয়েছিলেন সেখানে ৷ রাতেও খাবার নিয়ে আসেন অনেকে ৷ এছাড়া রাতে খাবার আসে আরজি কর হাসপাতাল থেকেও ৷ প্রায় 250 জনের জন্য সেখান থেকে রুটি, ডিম, আলুর তরকারি ও পায়েসের ব্যবস্থা করা হয় ।
খাবার-জল নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে সাধারণ জনগণ (নিজস্ব চিত্র) রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসের তরফেও ৷ তাদের তরফেও জানানো হয়, তারা প্রায় 800 জনের মতো খাবারের ব্যবস্থা করা হয় । খিচুড়ি ও আলুর দমের ব্যবস্থা করা হয় জুনিয়র চিকিৎসক ও আন্দোলনকারীদের জন্য । পাশাপাশি বলা হয় যে ক্যাম্পাসের শৌচালয় ব্য়বহারও করতে পারবেন আন্দোলনকারীরা ৷
খাবার-জল নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে সাধারণ জনগণ (নিজস্ব চিত্র) রাত পেরিয়ে সকাল হতেও দেখা যায় যে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানরত জুনিয়র চিকিৎসকদের জন্য অনেকেই খাবার নিয়ে এসেছেন ৷ কেউ নিয়ে এসেছেন জল ৷ এই নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকরা বলছেন, "মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন খাবারের সংস্থা থেকে খাবার আসছে । কারা অর্ডার করছে আমরা জানি না । শুধুমাত্র আমাদের বলা হচ্ছে, আমাদের জন্যই এই খাবার এসেছে ।’’
স্বাস্থ্য ভবন অভিযানে জুনিয়র ডাক্তাররা (নিজস্ব চিত্র) পরে সোশাল মিডিয়ার মাধ্য়মে ওয়েস্টবেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে ৷ সোশাল মিডিয়ায় তাদের তরফে লেখা হয়, ‘‘আমরা আপনাদের অকুন্ঠ ভালোবাসায় ও স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় অভিভূত । গতকাল থেকে যেভাবে আপনারা জল, খাবার ছাড়াও নানারকম ভাবে আমাদের সাহায্য করেছেন, মনোবল জুগিয়েছেন তাতে আমরা আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব ।’’
জুনিয়র ডাক্তারদের বার্তা (নিজস্ব চিত্র) ওই পোস্টে আরও লেখা হয়, ‘‘এই মুহূর্তে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত জল, খাবার রয়েছে ও মহিলাদের জন্য শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা গিয়েছে । এরপর আমাদের যদি কিছুর প্রয়োজন হয় আমরা অবশ্যই আপনাদের জানাব । ধন্যবাদান্তে, আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা ৷’’
স্বাস্থ্য ভবন অভিযানে জুনিয়র ডাক্তাররা (নিজস্ব চিত্র) দিনকয়েক আগে লালবাজার অভিযান করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ সেই অভিযানেও রাতভর অবস্থানে বসেছিলেন তাঁরা ৷ সেদিনও রাতে এবং পরে সকালে সাধারণ মানুষকে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে দেখা গিয়েছিল ৷ সেই ছবিরই পুনরাবৃত্তি হল বিধাননগরে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ৷