কলকাতা, 18 জুলাই: বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর সংক্রান্ত মামলা, কেস ডায়েরির কপি তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বৃহস্পতিবার এই কেস ডায়েরি আদালতে জমা করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ৷ আগামী 8 অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি ৷ ওই দিন সমস্ত মামলার কেস ডায়েরি হাজির করতে হবে আদালতে ৷
উল্লেখ্য বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এই মামলায় নির্দেশ দিয়েছিলেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করার আগে আদালতের অনুমতি নিতে হবে ৷ সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে শীর্ষ আদালত হাইকোর্টকেই মামলার নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয় ৷ তারপর মামলাটি আসে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চে ৷
2020 সালের ডিসেম্বরে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ তারপর থেকেই কার্যত তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয় ৷ পরস্পরের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় ৷ রাজ্যের পুলিশ বিভিন্ন থানায় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের করে ৷ তখন মামলার গেরোয় জেরবার হয়ে বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে ছুটতে হয় নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ককে ৷
এর আগে 2022 সালেই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একের পর এক এফআইআরের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আর্জি জানান বঙ্গ বিজেপির অন্যতম শীর্ষনেতা ৷ আদালতের কাছে তাঁর আবেদন ছিল, দলবদল করার পরে তাঁর বিরুদ্ধে 'ইচ্ছাকৃত' ভাবে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে ৷ তাই হয় ওই এফআইআরগুলি খারিজ করে দেওয়া হোক, নয়তো ওই সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ৷
সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ ছিল, শুভেন্দু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ৷ তিনি মানুষের ভোটে নির্বাচিত ৷ পুলিশ নিজে অথবা অন্য কারও নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ এনে জনগণের প্রতি বিরোধী দলনেতার কর্তব্য আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছে ৷ তাঁকে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে ৷ একইসঙ্গে বিরোধী দলনেতা হিসাবে তার একটা সম্মান ও মর্যাদা আছে তা ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে ৷
ওই যুক্তিতেই 2022 সালের 8 ডিসেম্বর শুভেন্দুর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া 26টি এফআইআরের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ বিচারপতি এই মামলায় নির্দেশ দিয়েছিলেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করার আগে আদালতের অনুমতি নিতে হবে ৷ সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্য সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হলে সেখানেও মুখ পুড়েছিল রাজ্যের ৷ শীর্ষ আদালত মামলাগুলি হাইকোর্টেই ফেরত পাঠায় এবং হাইকোর্টকেই মামলার নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছিল ৷