ETV Bharat West Bengal

পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

দুর্নীতির জন্য নিয়োগ বন্ধ, রাজ্য ছেড়ে বাইরে চলে যাচ্ছেন অনেকেই; রুষ্ট প্রধান বিচারপতি - CALCUTTA HIGH COURT

দুর্নীতির জন্য বন্ধ শিক্ষক নিয়োগ ৷ পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ হচ্ছে না ৷ এবার কলেজেও দুর্নীতি ! ক্ষোভ প্রকাশ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ৷

ETV BHARAT
দুর্নীতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 7, 2024, 3:14 PM IST

কলকাতা, 7 নভেম্বর:দুর্নীতির জন্য শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ, পুলিশে কনস্টেবল নিয়োগ বন্ধ, এখন কলেজেও শিক্ষায় দুর্নীতি । এই তো অবস্থা ! ছেলেমেয়েরা রাজ্য ছেড়ে বাইরে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে ৷ এই ভাষাতেই নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ।

বাবা সাহেব আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রায় 600-650টি বিএড কলেজ রয়েছে । কিন্তু অধিকাংশ কলেজের নেই পর্যাপ্ত পরিকাঠামো । এনসিটিই-র (ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন) গাইডলাইন অনুযায়ী কলেজে যে পরিকাঠামো থাকা প্রয়োজন, তার কিছুই না থাকা সত্ত্বেও কী করে কলেজ চলছে, কীভাবেই বা কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নিচ্ছে, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা ।

এই মামলায় একটি পক্ষ বলছে, তারা বৈধ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই কলেজ চালাচ্ছে । তবে কিছু দালাল সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে কলেজ খুলে ছেলেমেয়েদের থেকে বিএড করানোর নামে লাখ লাখ টাকা তুলেছে । তাদের জন্যই সমস্যায় পড়ছেন অন্যরা । বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতায় ওই সমস্ত কলেজের অ্যাফিলিয়েশন রিনিউ করা হয়নি । ফলে সেই কলেজগুলির ছেলেমেয়েরা এখন বিএড পরীক্ষায় বসতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ।

মামলাকারীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে উপাচার্য ও কিছু আধিকারিকের সঙ্গে যোগসাজশ না থাকলে এই ভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন কলেজকে স্বীকৃতি দিত না বিশ্ববিদ্যালয় । পরিকাঠামো আছে কি না তা খতিয়ে না দেখেই কী করে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ? উপাচার্য, রেজিস্ট্রারদের এর দায় নিতে হবে । এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবিও জানানো হয়েছে ।

এদিন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী কল্লোল বসুর উদ্দেশে বলেন, "উপাচার্যকে অবিলম্বে তাঁর পদ থেকে সরানো উচিত । উপাচার্য কিছু জানেন না এটা হতে পারেনা ।" যদিও আইনজীবী জানান, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে সওয়াল করছেন । উপাচার্যের হয়ে নয় ।

এরপর প্রধান বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, এ ব্যাপারে রাজ্য কী পদক্ষেপ করেছে । জবাবে রাজ্যের আইনজীবী জানান, এখানে সম্পূর্ণ দুটো পক্ষে ভাগ হয়ে মামলা দায়ের হয়েছে । একটা পক্ষের বক্তব্য মতো ব্যবস্থা না নিলে তারা বলছে কিছু করা হচ্ছে না । আবার অন্য পক্ষ বলছে, তাদের কথা ভালো ভাবে শোনা হচ্ছে না । এদিন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল শুনানির সময় উপস্থিত ছিলেন না । ফের দুসপ্তাহ পরে মামলাটি রাখা হয়েছে শুনানির জন্য ।

দু'পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর এদিন শুনানির শেষ পর্যায়ে রাজ্যে কর্মসংস্থানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ৷ তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে শিক্ষক, কনস্টেবলের নিয়োগ বন্ধ রয়েছে ৷ এইসব কারণেই রাজ্যে থাকতে চাইছেন না বর্তমান প্রজন্ম ৷ অনেকেই রাজ্য ছেড়ে বাইরে চলে যাচ্ছেন ৷

উল্লেখ্য, এর আগে বিভিন্ন কলেজের বেশ কয়েকজন বিএড পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসতে না পেরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন । তাঁদের বক্তব্য ছিল, 100 দিনের উপস্থিতি না থাকার যুক্তি দেখিয়ে তাঁদের পরীক্ষায় বসতে দিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় । কিন্তু বেশকিছু কলেজের ছাত্রছাত্রীদের থেকে টাকা নিয়ে তাঁদের প্রয়োজনীয় উপস্থিতি না থাকলেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়েছে । এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ব্যবস্থায় গলদের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে । যদিও কলকাতা হাইকোর্ট পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছিল । আপাতত দু'সপ্তাহ পরে ফের শুনানি হবে এই মামলার ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details