কলকাতা, 10 অগস্ট: গরিব, নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত কলকাতার মানুষ এবার বাড়ি তৈরিতে খানিক আর্থিক স্বস্তি পেতে চলেছে । কলকাতা কর্পোরেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ছোট জমি 1 থেকে 3 কাঠার মধ্যে বাড়ি তৈরি করলে আর নকশা অনুমোদনের জন্য মোটা টাকা গুনতে হবে না । সেই বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন ফি-এর উপর প্রায় 50 শতাংশ ছাড় মিলবে । ফলে ফি-এর পরিমাণ কমে হবে অর্ধেক । এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিল্ডিং বিভাগ ৷ মেয়র পারিষদের বৈঠকে সেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে ।
আসন্ন মাসিক অধিবেশনে সেটা গৃহীত হলে নয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে ৷ তবে এই ছাড় কিছু শর্তের বিনিময় পাবেন জমির মালিকরা ৷ কলকাতা পুরনিগম সূত্রে খবর, মেয়র পারিষদ বৈঠকে বিল্ডিং বিভাগের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়, 1 কাঠা পর্যন্ত জমির উপর বাড়ি করার আবেদন করলে, নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে এবার থেকে দিতে হবে 40 হাজার টাকা ৷ 2 কাঠা পর্যন্ত জমির উপর বাড়ি করলে দিতে হবে 70 হাজার টাকা ৷ 3 কাঠা পর্যন্ত জমির উপর বাড়ি করলে দিতে হবে 1 লাখ 20 হাজার টাকা ।
এতদিন পর্যন্ত 3 কাঠা পর্যন্ত জমিতে নির্মাণ করার জন্য নকশা অনুমোদনে লাগত 2 লক্ষ 40 হাজার টাকা ৷ কিন্তু এই ছাড় পাওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম কিছু শর্ত রেখেছে কলকাতা কর্পোরেশনের বিল্ডিং বিভাগ । শর্তগুলি হল, এই ছাড় তখনই মিলবে যখন আবেদনকারী নিজে জমির মালিক হবেন । প্রোমোটার দিয়ে নির্মাণ কাজ করলে এই ছাড় পাবেন না আবেদনকারীরা ৷ এই ছাড় শুধুমাত্র বসবাসের জন্য বাড়ি তৈরির আবেদনের ক্ষেত্রেই মিলবে । যদি কেউ বাণিজ্যিক কারণে কোনও নির্মাণ করেন বিল্ডিং বিভাগের তরফে নকশা অনুমোদন ক্ষেত্রে এই ছাড় মিলবে না ৷
এই প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "অল্প জমি যাঁদের আছে, একটা বাড়ি তৈরি করার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের অনেকটাই স্বস্তি মিলবে ৷ তাঁরা টাকা খরচের ভয়ে অনুমতি ছাড়া বানাবেন না ৷ তাই এমন সিদ্ধান্ত ৷ এতে বর্তমান নকশা অনুমোদনের ফি প্রায় কমে অর্ধেক হবে ৷ অতিরিক্ত আর কোনও টাকা দিতে হবে না ৷"
দীর্ঘ কয়েকবছর যাবৎ কলকাতা কর্পোরেশনের নজরে এসেছে বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রোমোটাররা বেআইনি নির্মাণ করছেন, তেমন ছোট বাড়ি, বস্তি এলাকায় বা ছোট জমিতে বেআইনি বাড়ি গজিয়ে উঠছে । কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগের ভিত্তিতে শুনানি শোনার পর আধিকারিক বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনুমোদন দিয়ে দিচ্ছেন ৷ অনেক ক্ষেত্রে বেআইনি অংশ ভাঙতে হচ্ছে । ফলে গরিব-মধ্যবিত্ত মানুষ জীবনের সঞ্চয় ভেঙে স্বপ্নের বাড়ি করলেও সেই টাকা জলে যাচ্ছে ।