কলকাতা, 22 ফেব্রুয়ারি:মলদ্বারে লুকোনো ছিল সোনার বিস্কুট ! পাচারকারীদের থেকে সেই সোনার বিস্কুটগুলি উদ্ধার করল বিএসএফ ৷ আর এই সোনার বিস্কুটের পরিমাণ কয়েক লক্ষ টাকা ৷ সাধারণত এমনভাবে সোনার বিস্কুট বাজেয়াপ্ত করার ঘটনা বিমানবন্দরেই ঘটে থাকে ৷ কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ সোনা পাওয়া গিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে ৷
বুধবার আইসিপি পেট্রাপোলে নিয়মিত চেকিংয়ের সময় মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে 3 জনের থেকে এক কেজি ওজনেরও বেশি সোনা উদ্ধার করা হয় ৷ আটক করা সোনার মূল্য আনুমানিক 65 লক্ষ 53 হাজার 812 টাকা ৷ চোরাকারবারিরা এসব সোনা বাংলাদেশ থেকে ভারতে আনার চেষ্টা করছিল ৷
প্রথম ঘটনায় বিএসএফ জওয়ানরা মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে একজন বাংলাদেশি যাত্রীর শরীরের নীচের অংশে কিছু ধাতব পদার্থের উপস্থিতি অনুভব করে ৷ জওয়ানরা পুঙ্খানুপুঙ্খ চেকআপের জন্য যাত্রীকে শৌচাগারে নিয়ে যায় ৷ এরপর তার কাছ থেকে 6টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করা হয় ৷ ওই ব্যক্তি তার মলদ্বারে ওই বিস্কুটগুলি লুকিয়ে রেখেছিল ৷ জওয়ানরা সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে ৷
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ওই ব্যক্তি ঢাকার সাহেদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে সুশান্ত কুমার রনির কাছ থেকে সোনার বিস্কুটগুলি নিয়েছিল ৷ তারপর সেগুলি তার মলদ্বারে লুকিয়ে রাখে ৷ এই সোনা কলকাতার নিউমার্কেটের এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল ৷ সোনাপাচারের কাজে 20 হাজার টাকাও পাওয়ার কথা ছিল তার ৷
দ্বিতীয় ঘটনায়, 145 ব্যাটালিয়নের সতর্ক মহিলা কর্মীরা একজন মহিলা যাত্রীর নিয়মিত তল্লাশির সময় একটি মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে শরীরের নীচের অংশে কিছু ধাতব পদার্থের উপস্থিতি অনুভব করে ৷ সঙ্গে সঙ্গে মহিলা গার্ড মহিলা যাত্রীকে সম্পূর্ণ চেকআপের জন্য শৌচাগারে নিয়ে যান ৷ পরে মহিলার কাছ থেকে 3টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করা হয় ৷ সোনার বিস্কুটগুলি ওই মহিলাও মলদ্বারে লুকিয়ে রেখেছিল ৷ মহিলা রক্ষীরা মহিলা যাত্রীকে ধরে সোনার বিস্কুটগুলি বাজেয়াপ্ত করে ৷
তৃতীয় ঘটনায়, বিএসএফ জওয়ানরা এক বাংলাদেশি যাত্রীর রুটিন তল্লাশির সময়, মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে যাত্রীর জুতোয় কিছু ধাতব পদার্থের উপস্থিতি খেয়াল করেন ৷ তৎক্ষণাৎ জওয়ানরা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য যাত্রীর চপ্পল নিয়ে যায় ৷ এরপর স্লিপারের ভিতরে লুকিয়ে রাখা একটি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করা হয় ৷ সোনার বিস্কুট-সহ ওই যাত্রীকে আটক করে সেনারা ৷
জওয়ানদের এই সাফল্যে বিএসএফ আধিকারিক উচ্ছ্বসিত ৷ কুখ্যাত পাচারকারী চক্র সরাসরি চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িত নয় ৷ তাই তারা দুঃস্থ মানুষদের টার্গেট করে ৷ বিএসএফ সীমান্তে বসবাসকারী লোকদের কাছে আবেদন করেছে, তারা যদি সোনা চোরাচালান সম্পর্কিত কোনও তথ্য পায়, তবে তারা বিএসএফের সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর 14419-এ এই তথ্য দিতে পারেন ৷ এছাড়াও দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত আরও একটি নম্বর 99034 72227 জারি করেছে ৷ সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ভয়েস মেসেজও পাঠানো যেতে পারে ৷ সঠিক তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে উপযুক্ত পুরস্কারের পরিমাণ দেওয়া হবে এবং তার পরিচয় গোপন রাখা হবে ৷
আরও পড়ুন:
- সীমান্তে প্রায় 7 কোটির সোনা-সহ বিএসএফের জালে 1, পলাতক অপরজন
- 52 লক্ষ টাকার সোনা-সহ বনগাঁ-পেট্রাপোল সীমান্তে গ্রেফতার তামিলনাড়ুর বাসিন্দা
- ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উদ্ধার 5 কোটির সোনার ইট, গ্রেফতার পাচারকারী