বনগাঁ, 30 এপ্রিল: একসময়ে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বনগাঁ-তে এখন শুধুই গেরুয়া শিবিরের ধ্বজা ! বিজেপির দাপটে একপ্রকার দিশেহারা শাসক শিবির । মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ লোকসভায় 2019 সালে প্রথমবার পদ্ম ফুটিয়ে বিজেপির জায়গা পোক্ত করেন ঠাকুর বাড়ির সদস্য শান্তনু ঠাকুর । সেই নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী মমতাবালা ঠাকুরকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি । সেবার প্রায় 49 শতাংশ ভোট পেয়ে নিজের জয়ের পথ মসৃণ করেছিলেন শান্তনু । ইংরাজিতে স্নাতক এই শান্তনু ঠাকুরকেই ফের প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির । ফলে, জেলার নজরকাড়া কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম এটিও ।
একদিকে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভাবাবেগ এবং অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের সুনজরে থাকা সাংসদ শান্তনু ঠাকুর 2021 সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান পান ।তাঁকে বন্দর ও জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয় । লড়াকু এই সাংসদের কাজের মূল্যায়নে খুশি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব । সেই কারণে 2024-এর লোকসভা নির্বাচনেও শান্তনুর উপর আস্থা রেখেছে বিজেপি । তবে, তাঁর বিপরীতে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরে আসা বাগদার সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস । যিনি 2021 সালে বিজেপির টিকিটে এই কেন্দ্র থেকেই বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন । পরবর্তীতে দল বদলে ফের তিনি ফিরে আসেন শাসকদলে ।
গত বিধানসভা নির্বাচনে একমাত্র স্বরূপনগর বাদ দিলে বাকি ছ'টি বিধানসভাই যায় বিজেপির দখলে । ফলে, এবারও বাগদা, গাইঘাটা, বনগাঁ উত্তর ও দক্ষিণ, কল্যাণী এবং হরিণঘাটায় ফের বড় ব্যবধানে জয়ের বিষয়ে আশাবাদী বিজেপি নেতৃত্ব । তৃণমূলের দখলে থাকা স্বরূপনগর বিধানসভাতেও কীভাবে শাসক শিবিরকে পিছনে ফেলে ভোটের ব্যবধান বাড়ানো যায়, সেদিকেই এখন মনোনিবেশ করেছেন বনগাঁর এই পদ্ম প্রার্থী । শান্তনুর দাবি, উন্নয়ন এবং মতুয়া ভোটব্যাংকের উপর ভর করে এবারও তিনি বাজিমাত করবেন বনগাঁ লোকসভা থেকে ।
ক'দিন আগেই জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার হুমকি চিঠি পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর । যাতে লেখা ছিল, বাংলায় এনআরসি চালু হলে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে 'ঠাকুর বাড়ি!' যা ঘিরে কম জলঘোলা হয়নি । এসসি সংরক্ষিত বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে ভোট রয়েছে পঞ্চম দফায় । অর্থাৎ 20 মে । আর তারই মধ্যে জমে উঠেছে বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর বনাম তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের ভোট-যুদ্ধ ।