কলকাতা, 16 জুলাই:বিরিয়ানির নামেই জিভে জল ! হলুদ-সাদা ভাতের গন্ধে মজে মন ৷ এদিকে সেই বিরিয়ানিতেই নাকি ভেজাল, যা থেকে হতে পারে নানা রোগ ৷ এই ভেজালের হদিশ মিলল কলকাতার পার্ক সার্কাসে একটি নামী বিরিয়ানি বিক্রেতার আউটলেটে ৷ কলকাতা কর্পোরেশনের আচমকা অভিযানে এমনটাই ধরা পড়েছে ৷ অভিযোগে কাঠগড়ায় বালিগঞ্জের একটি রেস্তোরাঁও ৷
যে বিরিয়ানিতে লক্ষ লক্ষ খাদ্যরসিক তৃপ্তি পাচ্ছেন, তাতে হলুদ রং আনতে মেশানো হচ্ছে মেটানিল ইয়েলো রঞ্জক, যা কাপড় রং করতে ব্যবহৃত হয় ৷ সেই বিষাক্ত রঞ্জকই দেদার মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিরিয়ানিতে ৷ এই বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্তা তরুণ সাপুই বলেন, "এই ক্ষতিকারক পদার্থ মানুষের পেটে গেলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা রোগ ৷ আমরা নমুনা এনে সেটা পরীক্ষা করায় ধরা পড়েছে ৷ কলকাতাজুড়ে আমাদের টিম অভিযান চালাচ্ছে ৷"বেশ কিছুদিন ধরেই কলকাতা কর্পোরেশনের খাদ্য সুরক্ষা বাহিনী এলগিন রোড, পার্ক স্ট্রিট, বাইপাস, পার্ক সার্কাস, বালিগঞ্জে অভিযান চালিয়েছে ৷
পার্ক সার্কাসে একাধিক খ্যাতনামা বিরিয়ানির দোকান রয়েছে ৷ বিরিয়ানির স্বাদে তারা একে অপরের সঙ্গে টেক্কা দেয় বলাই যায় ৷ সেই দোকানগুলির মধ্যে এই দোকানটি অন্যতম ৷ যারা বিরিয়ানিকে আরও সুস্বাদু, সুগন্ধি করে তুলতে এই বিষাক্ত রং মিশিয়ে চলেছেন ৷ এদিকে এই খ্যাতনামা দোকানটিতে বিরিয়ানির নানা পদ খেতে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় হয় ৷ লোভে পড়ে যে হলুদ রঙা বিরিয়ানি মানুষ একেবারে নিমেষে চেটেপুটে শেষ করে, তাতেই রয়েছে 'বিষ' ৷
সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে শহরজুড়ে অভিযান চালাচ্ছে কলকাতা পৌরনিগম ৷ বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে একটি খ্যাতনামা রেস্তোরাঁর জরিমানা হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা ৷ এবার পার্ক সার্কাসের বিখ্যাত এই বিরিয়ানি দোকানটিতে জরিমানা দিতে হল 3 লক্ষ টাকা ৷ কর্পোরেশন সূত্রে খবর, অনেক হোটেলে মাছ, মাংস দীর্ঘ দিন ধরে রাখা থাকে ৷ সেগুলিতে শুরু থেকে তারিখ লিখে রাখা দরকার ৷ এখনও পর্যন্ত এই হোটেল-রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে 25 লক্ষ টাকার মতো অর্থ কর্পোরেশনের কোষাগারে এসেছে ৷
এখন বেশ কিছু ছোট-বড় রেস্তোরাঁকে জরিমানা করা হয়েছে ৷ বিরিয়ানির মতো বিখ্যাত, জনপ্রিয় খাবারের দামও যথেষ্ট ৷ অথচ দাম নিলেও সেই বিরিয়ানিতে হোটেল-রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ এই ধরনের উপাদান ব্যবহার করায় ক্ষুব্ধ পুর-আধিকারিকরা ৷ বিরিয়ানি ছাড়া পার্ক স্ট্রিট এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় পনির, চিকেনের যে সমস্ত আইটেমে মশলা ব্যবহার করা হয়, সেগুলিও খুব নিম্নমানের ৷ যার ফলে শরীরে নানা ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে ৷