মালদা, 10 সেপ্টেম্বর: 8 সেপ্টেম্বর আরজি কর-কাণ্ডে সুবিচারের দাবিতে মালদা শহরের ফোয়ারা মোড়ে চলছিল প্রতিবাদ ৷ ঠিক সেই সময় ফোয়ারা মোড় থেকে দু’শো মিটার দূরেই এক যুবতী এবং তাঁর দিদির শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল ৷ অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় তাঁদের উপর প্রাণঘাতী হামলাও চালিয়েছে চার মদ্যপ যুবক ৷ এই ঘটনায় আজ ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত যুবতী ৷
বছর ছাব্বিশের ওই যুবতী ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন, "রবিবার রাত আটটা নাগাদ দিদি আর আমি ফোয়ারা মোড়েই ছিলাম ৷ খিদে পেয়ে গিয়েছিল ৷ তাই সেখান থেকে দু’শো মিটার দূরে শুভঙ্কর শিশু উদ্যানের কাছে মোমোর দোকানে গিয়েছিলাম ৷ সাড়ে আটটা নাগাদ সেখানেই বসে থাকা চার যুবক আমাদের উদ্দেশে কটূক্তি করতে থাকে ৷ বাধ্য হয়ে আমরা সেখান থেকে চলে যাচ্ছিলাম ৷ তখন ওরা আমাদের পিছু নেয় ৷"
আক্রান্ত যুবতী অভিযোগ করেছেন, "একসময় ওদের একজন আমাকে পিছন থেকে টেনে ধরে ৷ এবার আমি রুখে দাঁড়াই ৷ আমার আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ নেওয়া আছে ৷ সেই সাহসেই ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম ৷ বাধা পেয়ে ওদের একজন আমার টি-শার্ট টেনে ধরে ৷ আমাকে মারতে উদ্যোত হয় ৷ বুঝে যাই, এরপরেও চুপ করে থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে ৷ তাই আত্মরক্ষার জন্য আমিও ওদের মারতে শুরু করি ৷ সেই সময় এক যুবক পাশের ঠাণ্ডা পানীয়ের দোকান থেকে একটি কাঁচের বোতল দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে ৷ আমার মাথা ফেটে যায় ৷ কোনওরকমে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি ৷ এরপর চিকিৎসার জন্য মালদা মেডিক্যালে যাই ৷"
আক্রান্ত যুবতী আরও জানিয়েছেন, "যে সময় এই ঘটনা চলছিল, তখন অন্তত দু’শো মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিল ৷ তারা সবাই যেন নাটক দেখছিল ৷ একজনও আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি ৷ যে সময় আরজি করের ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব শহর, তখন এই শহরেরই এক আক্রান্ত যুবতীকে রক্ষা করতে কেউ এগিয়ে আসবে না ? এই শহরের মানসিকতা কী এই পর্যায়ে চলে গিয়েছে ? যাই হোক, পুরো ঘটনা জানিয়ে আমি ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ আশা করি পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ করবে ৷"
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ ওই যুবতীর কথামতো অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে ৷ গোটা ঘটনা আমরা খতিয়ে দেখছি ৷"