কলকাতা, 21 এপ্রিল: দু'দলের ইনিংস মিলিয়ে 443 রান। রবিবাসরীয় ইডেনে নাইট বনাম রয়্যালের ব্যাট-বলের লড়াইয়ে নাগরদোলার মত চড়াই উৎরাই, আদর্শ টি-20 ম্যাচের উদাহরণ। কলকাতা বনাম বেঙ্গালুরু ম্যাচ মানেই টেনশনের পারদ চড়তে থাকা। রবিবার পর্যন্ত 34টি ম্যাচের পরিসংখ্যান বলছে কুড়িটি ম্যাচে জয়ী কেকেআর।
তবে, পরিসংখ্যান ফলাফল নির্ধারণ করে না। গত চব্বিশ ঘণ্টা ধরেই এই ম্যাচ ঘিরে ভাতৃত্বের একটা আবহ চলছিল। বিরাট কোহলি চলতি আইপিএলে মারকুটে ব্যাটিংয়ের আদর্শ ম্যানুয়াল খুলে বসেছেন। এদিন 7 বলে 18 রানে ইনিংস সমাপ্ত হর্ষিত রানার হাতে। যদিও বলের উচ্চতা নিয়ে কোহলির সংশয় রয়েছে। আউট ঘোষণার পরে আম্পায়ারের সঙ্গে রাগত ভঙ্গিতে কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ম্যাচের পরেও আম্পায়ারদের কাছে নিজের আউটের ব্যাখ্যা বুঝতে চাইছিলেন। ম্যাচ পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলন কার্যত রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বয়কটই করেছিল। তারপর নিয়মের খাড়া এড়াতে জিম করতে ব্যস্ত থাকা রিস টপলেকে সাংবাদিক সম্মেলনে পাঠায় আরসিবি। দলের এই সিদ্ধান্তে তিনি অবাক। তবে খেলোয়াড় টপলেও কোহলির আউট ঘিরে দলের উষ্মা গোপন করলেন না।
সাতটি ম্যাচে পরাজয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে আরও বেশি করে বিদায়ে পথে ঠেলে দিল। দীনেশ কার্তিক বলছিলেন, সাজঘরে পুরো দলকে উজ্জীবিত করতে কোহলি সবচেয়ে বেশি সচেষ্ট। রবিবার ইডেনে তিনিই ছিলেন প্রাণভোমরা। নাইটরা যেমন তাঁর পিঠ দ্রুত দেখতে চেয়েছিল তেমনই ইডেনের দর্শক ব্যাটার বিরাট কোহলিকে অনেক বেশি সময় ধরে দেখতে চেয়েছিল। নাইটরা সফল। ব্যর্থ মনোরথ ইডেনের দর্শক। আইপিএল শুধু ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের দ্বৈরথ নয় তারকা পুজোর মঞ্চও বটে।
কোহলিকে ঘিরে উন্মাদনা কলকাতার তাপপ্রবাহেও অব্যাহত। কোহলির প্রতিটি কর্মকাণ্ডে ইডেনে যে পরিমাণ চিৎকার হয়েছে তা শুনে ভ্রম হচ্ছিল ম্যাচের আয়োজক কলকাতা না বেঙ্গালুরু। রবিবাসরীয় ইডেনে বিরাট কোহলি ঘাতক হর্ষিত রানা জানিয়েছেন তিনি শুধু বলটা জায়গায় রাখতে চেয়েছিলেন। বলের উচ্চতা নিয়ে সিদ্ধান্ত আম্পায়ারের। সেখানে তাঁর কিছু করার নেই।
চলতি আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বড় প্রাপ্তি ফিট আন্দ্রে রাসেল। ক্যারিবিয়ান অলরাউণ্ডার ব্যাটে-বলে সফল এবং ম্যাচের সেরা। ব্যাট হাতে 20 বলে 27 রান করার পরে বল হাতে তিন শিকার। শুধু তাই নয় তাঁর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নতজানু রয়্যাল ব্যাটাররা। 12 ওভারে রজত পাতিদার এবং উইল জ্যাকসের উইকেট নিয়ে দলকে ম্যাচে ফেরান। শেষের দিকে মোক্ষম সময়ে দীনেশ কার্তিককে ফিরিয়েও দলের জয়ে বড় ভূমিকা নিলেন। "রাসেলের এক ওভারে দুটো উইকেট নেওয়াই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট" বলেছেন হর্ষিত রানা।