কলকাতা, 4 জুলাই: শহরে পা-দেওয়ার 12 ঘণ্টার মধ্যে কাজ শুরু করে দিলেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। মঙ্গলবার মধ্যরাতে কলকাতা বিমানবন্দরে পা-রাখেন। সঙ্গে সহকারি কোচেরা এবং সউল ক্রেসপো। বুধবার বিকেলে লাল-হলুদ সিনিয়র দলের প্রথম অনুশীলন হয়। প্রথমদিনের অনুশীলনে সিনিয়র দলের দশ ফুটবলার উপস্থিত ছিলেন। সৌভিক চক্রবর্তী, নবাগত প্রভাত লাকড়া, দেবজিৎ মজুমদার, মার্ক জোথানপুইয়া ছাড়াও দুই বিদেশি ক্লেইটন সিলভা ও সউল ক্রেসপো অনুশীলনে ছিলেন।
মাঝরাতে বিমানবন্দরে কিছু সমর্থক কোচকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন। প্র্যাকটিসেও একই ছবি। প্রত্যাশার পারদ যে এই মরশুমে কিছুটা হলেও বাড়বে, তা বিলক্ষণ কার্লেস কুয়াদ্রাত জানেন। তাই দলগঠন থেকে অনুশীলনে তৎপরতা বেশি। যতটা সম্ভব গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আপাতত দলের পাঁচ বিদেশি নেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ বিদেশিকে নেওয়ার বিষয়ে কোনও ইঙ্গিত প্রথম দিনের অনুশীলনের শেষে দেননি কার্লেস কুয়াদ্রাত। প্রাক-মরশুম প্রস্তুতি শুরু হলেও পরের সপ্তাহের মধ্যে বাকিরাও যোগ দেবেন।
কারণ হিজাজি মাহেরদের ভিসা পাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সব ফুটবলার যোগ দিলে এবং কলকাতার আবহাওয়া বেচাল না-হলে প্রাক মরশুম শহরেই হবে। নচেৎ প্রাক মরশুমের কিছুটা পর্ব শহরের বাইরে বা দেশের বাইরে হওয়ার ইঙ্গিত কর্তারা দিয়ে রাখলেন। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত বলেন, "এটা ইস্টবেঙ্গলে আমার দ্বিতীয় মরশুম। ফলে আরও ভালো খেলতে হবে। আমি আরও ভালো পারফর্ম করার বিষয়ে আশাবাদী। কারণ আমরা যে উন্নতির চেষ্টা করছি, সেটা প্রমাণের জন্য এটা একটা সুযোগ।"
তিনি আরও বলেন, "গত মরশুমে আমরা ক্লাবের ট্রফি খরা কাটিয়েছি। সেটা সমর্থকের জন্য গর্বের মুহূর্ত ছিল। ওরা আবার উৎসব করতে পেরেছিল। পাশাপাশি আমরা ওই ট্রফি জিতে এএফসি'র প্রতিযোগিতা খেলছি আমরা। এই দলের সবাই, ফুটবলার, সাপোর্ট স্টাফ, ম্যানেজমেন্ট সবাই দলের মান বাড়ানোর চেষ্টা করছে। গতবছর আমরা একটা যাত্রা শুরু করেছি। এবছর তারই দ্বিতীয় পর্ব হবে।"
গত মরশুমে আইএসএলে নয় নম্বরে শেষ করলেও সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। যা ছিল দীর্ঘদিনের খরা কাটিয়ে প্রথম জাতীয় পর্যায়ে ট্রফি জয়। পাশাপাশি ডুরান্ড কাপে রানার্স এবং ডার্বিতে জয় পরাজয় ড্র-এর তুল্যমূল্য পরিসংখ্যান। যা কুয়াদ্রাত বলছেন দলের ভালো পারফরম্যান্স। নতুন বছরে নতুনভাবে দলকে সাজিয়েছেন। সেইভাবেই দলকে এগিয়ে নিতে চান এবং আরও বেশি সাফল্য তুলে নিয়ে আসাই পাখির চোখ। ইতিমধ্যে ডেভলপমেন্ট দল কলকাতা লিগে নেমে পড়েছে।
প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতেছে। ডেভলপমেন্ট দলের এই পারফরম্যান্সের প্রশংসায় খুশি তিনি। তবে সিনিয়র দলের দৌড় শুরু হবে ডুরান্ড কাপ থেকে। যা শুরু হবে চলতি মাসের 27 তারিখ থেকে। মাঝের 24 দিনে দলকে গুছিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ। পুরো দল পেতে আরও কয়েকটি দিন। ফলে দলকে কতটা গোছানো যাবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যদিও কুয়াদ্রাত বলছেন, যাদের পাওয়া যাবে তাদের তৈরি করেই ডুরান্ডে ঝাঁপাবেন। ডুরান্ড কাপকে মরশুমের প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট হিসেবেই দেখছেন। এবছর এএফসি কাপের খেলাও রয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখেই দল গোছাতে চান। একইসঙ্গে আইএসএলের পারফরম্যান্সও উন্নতি করার ভাবনাও রয়েছে। সব মিলিয়ে কলকাতায় পা-দিয়েই অনুশীলনে কার্লেস কুয়াদ্রাত, প্রস্তুতি শুরু ইস্টবেঙ্গলের।