কলকাতা, 13 অগস্ট: ঋদ্ধিমান সাহার বাংলার ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের খবর নতুন নয় । কিন্তু তিনি এবার বাংলা দলে সামিল হওয়া মানে তো অভিষেক পোড়েলের প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে ৷ কারণ, ঋদ্ধির মতো অভিষেকও উইকেটকিপার ৷
সাংবাদিক বৈঠকে ঋদ্ধিমান সাহা ও সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্য়ায়৷ (ইটিভি ভারত) তবে সোমবার সেই অনিশ্চয়তার মেঘ নিজেই কাটিয়ে দিলেন শিলিগুড়ির পাপালি ৷ বুঝিয়ে দিলেন উইকেটের পিছনে তিনিই যতই ‘সুপারম্যান সাহা’ হোন না কেন, বাংলায় দলের স্বার্থে অভিষেক উইকেট কিপিং করলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই ৷ তিনি দলের হয়ে যেকোনও ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে রাজি ৷
সিএবি-র সাংবাদিক বৈঠকে ঋদ্ধিমান সাহা ও সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়৷ (নিজস্ব চিত্র) এ দিন ঋদ্ধির প্রত্যাবর্তনের খবরে সরকারি সিলমোহর দেয় সিএবি । ভারতীয় দলের প্রাক্তন উইকেটকিপারকে পাশে বসিয়ে সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় জানান, মনোজ তিওয়ারির অবসরের পরে বাংলা দলে ঋদ্ধিমান সাহার মতো একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের উপস্থিতি প্রয়োজনীয় ছিল । তাই দু’বছর পরে তাঁর প্রত্যাবর্তন স্বাগত । শুধু ঋদ্ধিমান নয়, সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কেও যে এবছরের বাংলা দলে দেখা যাবে, তা জানালেন স্নেহাশিস ।
সিএবি-র সাংবাদিক বৈঠকে ঋদ্ধিমান সাহা৷ (নিজস্ব চিত্র) দু’বছর আগে সিএবি কর্তাদের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণেই ত্রিপুরা চলে গিয়েছিলেন ঋদ্ধিমান । পরবর্তী সময়ে বহু জল গড়িয়েছে । সেদিনের অভিমান মিটেছে । কয়েকমাস আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ঋদ্ধির প্রত্যাবর্তনের পর্ব সারা হয় । বেঙ্গল প্রো টি টোয়েন্টি লিগে খেলেন তিনি । এবার দরজায় কড়া নাড়ছে রঞ্জি মরসুম । ইতিমধ্যে ঋদ্ধিমান বাংলার অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন । দলের রণনীতি ঠিক করাতেও সামিল হয়েছেন ।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে বাংলা দলের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নেতৃত্বের ব্যাটনও কি ঋদ্ধিমানের হাতে উঠবে ? ঋদ্ধিমান স্বয়ং বলছেন যে তিনি এই নিয়ে ভাবেননি । বাংলার হয়ে ফের প্রতিনিধিত্ব করাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন । অন্য কিছুকে নয় । সেই সঙ্গে অভিষেক পোড়েল নিয়ে অনিশ্চয়তা সংক্রান্ত যাবতীয় ধোঁয়াশা কাটিয়েছেন ৷ কেন তিনি যেকোনও ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে রাজি, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ঋদ্ধি ৷ জানিয়েছেন, ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে দলই তাঁর কাছে চিরকাল গুরুত্ব পেয়ে এসেছে । এবারও ক্রিকেট জীবনের প্রায় শেষপর্বে সেটাই প্রাধান্য পাবে ।
সিএবি-র সাংবাদিক বৈঠকে ঋদ্ধিমান সাহা৷ (নিজস্ব চিত্র) সিএবি-র সাংবাদিক বৈঠকে ঋদ্ধিমান সাহা ও সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়৷ (নিজস্ব চিত্র) ক্রিকেট থেকে অবসর নিলে তিনি যে সব ধরনের ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়াবেন, সেটাও ঘোষণা করে দিলেন শিলিগুড়ির পাপালি । তবে ভবিষ্যত নিয়ে এখনই কোনও ঘোষণার চেয়ে বর্তমানে দাঁড়িয়ে আগামীর রূপরেখা ঠিক করতে চান ঋদ্ধি । তাই আইপিএল এই চল্লিশ ছুঁইছুঁই বয়সে চালিয়ে যাবেন কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরও সরাসরি দিলেন না । আপাতত যেটুকু ক্রিকেট রয়েছে, তা দিয়ে বাংলার ক্রিকেটের উন্নতিতে সঁপে দিতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি ।
সিএবি-র সাংবাদিক বৈঠকে ঋদ্ধিমান সাহা৷ (নিজস্ব চিত্র) এমনকী, ক্রিকেটের ব্যাট-গ্লাভস তুলে রাখার পরে কোচিং যে প্রথম পছন্দ, তাও বুঝিয়েছেন । তাই ক্রিকেট জীবনের বেলাশেষে নিজের রাজ্য দলকে সাফল্য পাওয়ার জন্য সাহায্য যেমন পাখির চোখ, তেমনই জুনিয়র ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়ানো একইরকম গুরুত্বপূর্ণ ঋদ্ধিমান সাহার কাছে । যা সোমবার সিএবি প্রেসিডেন্ট ও সচিবের পাশে জানিয়ে দিলেন ।
সিএবি-র সাংবাদিক বৈঠকে ঋদ্ধিমান সাহা ও সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়৷ (নিজস্ব চিত্র)