মেদিনীপুর, 15 জানুয়ারি: আরও বিপাকে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালস ৷ ওই সংস্থার 14টি ওষুধ নিষিদ্ধ করল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ৷ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা এসেছে ৷ সঙ্গে বলা হয়েছে, হাসপাতালের স্টোরে ওই 14টি ওষুধের স্টক থাকলে, তা সরিয়ে ফেলতে ৷
জানা গিয়েছে, বাতিল ওষুধগুলির মধ্যে অত্যন্ত জরুরি সাতটি ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে বলা হয়েছে ৷ সেই ওষুধের টাকা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর মেটাবে বলেও নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে ৷ অন্যদিকে, বুধবার দ্বিতীয় দিনের তদন্তে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পৌঁছেছে সিআইডি-র তদন্তকারী দল ৷
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে যে 14টি ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেগুলি হল:
ডেস্কট্রোস ইঞ্জেকশন 10% এমওএসএম/650 মিলি হাইপারটনিক
লেভোফ্লক্সিসিন ইনফিউশন 5 এমজি/100 মিলি
মানিনটোল ইনফিউশন আইপি 20%/100 মিলি
অফ্লাক্সিন ইনফিউশন 200 এমজি/100 মিলি
পেডিয়াট্রিক মেন্টেনেন্স ইলেকট্রোলাইট সলিউশন
প্যারাসিটামল ইনফিউশন 1000 এমজি/100 মিলি
সোডিয়াম ক্লোরাইড ইঞ্জেকশন আইপি 0.9%
ডেস্কট্রোস সলিউশন আইপি 5%
রিংগার ল্যাকটেট সলিউশন আইপি ইঞ্জেকশন
রিংগার সলিউশন আইপি ইঞ্জেকশন
সোডিয়াম ক্লোরাইড ইরিগেশন সলিউশন
সোডিয়াম ক্লোরাইড 0.9%+ ডেস্কট্রোস 5% আইপি ইঞ্জেকশন
সোডিয়াম ক্লোরাইড ইঞ্জেকশন 0.45 শতাংশ ৷ ডেস্কট্রোস 5% পলিপ্রপেলিন বটল ইন এফএফএস টেকনোলজি
সোডিয়াম ক্লোরাইড ইঞ্জেকশন আইপি 0.9% নর্মাল
এই ওষুধগুলি এতদিন সরকারি হাসপাতালে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালস সরবরাহ করত ৷ সংস্থার সেই ওষুধগুলি নিয়ে কড়া নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে ৷ বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে এই ওষুধ মজুত থাকলেও, তা ব্যবহার করা যাবে না ৷ পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে এখনই ওষুধগুলি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ৷
পাশাপাশি বলা হয়েছে, তালিকার প্রথম সাতটি ওষুধ অন্য সংস্থা সরবরাহ করবে ৷ আর বাকি সাতটি ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হবে হাসপাতালগুলিকে ৷ এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ স্বাস্থ্য দফতর বরাদ্দ করবে ৷
প্রসঙ্গত, গত বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঁচজন গর্ভবতী প্রসব করেন ৷ সন্তান প্রসবের পরেই প্রসূতিরা অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ অভিযোগ, তাঁদের মূত্রত্যাগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না ৷ ফলে দ্রুত তাঁদেরকে আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয় ৷
এই ঘটনায় রোগীর পরিবারের সদস্যরা ডাক্তারদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার লিখিত অভিযোগ জানান ৷ সেই ঘটনায় গত শুক্রবার সকালে এক প্রসূতির মৃত্যুও হয়েছে ৷ এরপরই নড়েচড়ে বসে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ৷ তড়িঘড়ি স্বাস্থ্য ভবন থেকে 13 জনের একটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হয় প্রসূতি মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে ৷
পরবর্তী সময়ে বাকি চার প্রসূতির মধ্যে তিনজনের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয় ৷ জরুরি পরিস্থিতিতে তাঁদের লাইফ সাপোর্ট ও গ্রিন করিডর করে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে ৷ অন্যদিকে, রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মঙ্গলবার থেকে ৷ এ দিনও সিআইডি-র তদন্তকারী আধিকারিকরা হাসপাতাল সুপার এবং অধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করছেন ৷