মেদিনীপুর, 25 ফেব্রুয়ারি: সমবায় ব্যাংকের নির্বাচনে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র রণক্ষেত্র তৈরি হল মেদিনীপুরে ৷ মঙ্গলবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহরে তৃণমূল ও বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় ৷ পুলিশের বিরুদ্ধে তৃণমূলকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন সিপিএমের নেত্রী পাপিয়া সিংহ আচার্য ৷ যদিও তাঁর বিরুদ্ধেই পুলিশের দিকে থুতু ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন ওই নেত্রী ৷ এই নিয়ে অবশ্য পুলিশের তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷
মেদিনীপুর শহরের কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত পিপিলস ব্যাংক কো-অপারেটিভের পরিচালন সমিতির ভোট আগামী 23 মার্চ ৷ গত দশ বছর এই সমবায় ব্যাংকের ভোট হয়নি ৷ শেষবার যখন ভোট হয়, তখন সব আসনেই জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা ৷ এবারই প্রতিটি আসনে জয় নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর শাসক দল ৷ তবে লড়াইয়ে থাকার মরিয়া প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে সিপিএম-সহ বামেরা ৷
মঙ্গলবার এই সমবায় ব্যাংকের নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার দিন ছিল ৷ সেই কারণে সকাল থেকে তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা হাজির হন মনোনয়নপত্র তুলে তা জমা দেওয়ার জন্য ৷ সিপিএম নেত্রী পাপিয়া সিংহ আচার্যের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস হাজার হাজার লোক নিয়ে মনোনয়ন তুলতে যায় ৷ কিন্তু বাম প্রার্থীদের মনোনয়ন তুলতে দিতে বাধা দেওয়া হয় ৷ পুলিশের ভূমিকা পক্ষপাতিত্বমূলক ছিল ৷
বামেদের অভিযোগ, তারা একজোট হয়ে মনোনয়ন তুলতে যাচ্ছিলেন ৷ সেই সময় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা তাদের উপর হামলা চালায় ৷ মারধর করা হয় ৷ তখন পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা নেয় ৷ সেই কারণেই তিনি পুলিশের দিকে থুতু ছুঁড়ে প্রতিবাদ করেন বলে জানিয়েছেন সিপিএম নেত্রী পাপিয়া সিংহ আচার্য ৷
তিনি বলেন, "পাঁচশো হাজার লোক প্রথম থেকে জমায়েত করেছে শাসক দল । একটা গণতান্ত্রিক দেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোট হচ্ছে, সেখানে আমাদের কিছুতেই মনোনয়ন তুলতে দেয়নি ৷ আমাদের মাঝ রাস্তা থেকেই মেরে ধরে হাটিয়ে দিয়েছে তারা । পুলিশের কড়া পাহারা থাকলেও পুলিশ পুরোপুরি তৃণমূলের দলদাস হয়ে কাজ করে করেছে, তারা ছিল পুরো নিষ্ক্রিয় ।’’
তৃণমূল অবশ্য গোলমালের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ৷ তৃণমূলের যুব নেতা নির্মাল্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । শান্তিপূর্ণ মনোনয়নপত্র চলছিল সেই সময় সিপিএমের মহিলা ও পুরুষ হার্মাদ বাহিনী আক্রমণ করতে গেলে আমাদের একজন আক্রান্ত হয় । যা নিয়েই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে । আমরা কোনও প্ররোচনায় পা দেব না ৷ আমরা শান্তিপূর্ণ ভোট করাব । সেই সঙ্গে এর জবাব আমরা ভোটের জেতার মাধ্যমে দেব বামেদের ।’’
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে থুতু ছোড়ার অভিযোগ বামনেত্রীর (নিজস্ব ছবি)
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক গোলমাল হয় ৷ উত্তেজনা ছড়ায় মেদিনীপুর শহরে ৷ বেশ কয়েকজন আহতও হন ৷ এদিকে পুলিশের দিকে থুতু ছোড়ার ঘটনা নিয়ে এখনও পুলিশের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷ এমনকী, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত গোলমাল নিয়েও মুখ খুলতে নারাজ পুলিশের কোনও আধিকারিক ৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারকে মেসেজ করা হয়৷ তিনি কোনও উত্তর দেননি ৷