প্রাক্তন বাম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের বক্তব্য বসিরহাট, 27 ফেব্রুয়ারি: জামিনে মুক্ত হয়েই মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনায় সরব হলেন সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার । জানালেন, বেআইনিভাবে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জেলে না-গেলে সেই অভিজ্ঞতা হত না তাঁর । যতদিন তাঁকে জেলে রাখা হবে, ততদিন চোখে ঘুম থাকবে না তৃণমূল নেত্রীর ।
হাইকোর্ট থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন মেলার পর মঙ্গলবার সন্ধে সাড়ে ছ'টা নাগাদ বসিরহাট উপ-সংশোধনাগার থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন নিরাপদ । সেখানে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের কর্মী-সমর্থকরা । জয়ধ্বনি দিয়ে গলায় মালা পরিয়ে স্বাগত জানানো হয় তাঁকে । সেই আবহেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিরাপদ বলেন, "আমাকে বেআইনিভাবে কলকাতার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জেলে এসে ভালো-মন্দ একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে বটে । সেটা জেলে না-ঢুকলে বোঝা যেত না। 80 শতাংশের বেশি যুবসমাজকে জেলের ভিতর রাখা হয়েছে। যে যুবসমাজ আমাদের ভবিষ্যৎ, তাঁদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মিথ্যে মামলায় জেলে রেখেছে । হাঁস-মুরগি চুরির অভিযোগে জেলে রাখা হয়েছে অনেককে। এভাবেই যুবসমাজের মেরুদণ্ড ভাঙতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।"
সন্দেশখালিকাণ্ডের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন রীতিমতো রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন নিরাপদ । তাঁর কথায়,"আমাকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তার জবাব সন্দেশখালির মানুষ দিয়ে দিয়েছে । 2013 সাল থেকেই বিধানসভার কক্ষে দাঁড়িয়ে আমি বলে আসছিলাম যে, সন্দেশখালিতে জমি লুট হচ্ছে, মায়েদের ইজ্জত কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, গরিব মানুষের জমি চলে যাচ্ছে, ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হচ্ছে না । বারবার বলেছি ৷ কিন্তু আমার কোনও কথা কানে তোলেনি তৃণমূল সরকার । বরং মাইক কেড়ে নেওয়া হয়েছে । আজ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে সন্দেশখালির মানুষের । তাই আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা ।"
এদিকে, 'ফেরার' তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে সাতদিনের মধ্যে গ্রেফতার করা হবে বলে দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। তা নিয়েও এদিন কটাক্ষের সুর শোনা গিয়েছে জামিনে মুক্ত প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের গলায় । এই বিষয়ে তিনি বলেন, "ঠেলায় না-পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না । আমি এবং আমার পার্টির লোকেরা বারবার বলে এসেছে শেখ শাহজাহানের গতিবিধি কোথায়? তারপরও তৃণমূল তাঁকে গার্ড করে রেখেছে ৷ পুলিশ তাঁকে সুরক্ষা দিয়েছে ৷ এখন বিপক্ষে যখন সবকিছু চলে গিয়েছে তখন সাতদিনে গ্রেফতার হবে ? ইয়ার্কি হচ্ছে নাকি? কেন সন্দেশখালির মানুষ আতঙ্কের মধ্যে জীবনযাপন করবে ? 144 ধারার মধ্যে থাকবে ?" প্রশ্ন তুলে সন্দেশখালির অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির জন্য তৃণমূলকেই দায়ী করেছেন এই সিপিএম নেতা।
আরও পড়ুন :
- সন্দেশখালি ঘুরে 'তিক্ত' অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন নাট্যকর্মীরা
- 'এতদিন জেলে থাকার ক্ষতিপূরণ কে দেবে ?', নিরাপদ সর্দারের জামিন মঞ্জুর করে প্রশ্ন আদালতের
- বিনা নথিতেই আদালতে নিরাপদ সর্দার ! সন্দেশখালি মামলায় পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারক