ETV Bharat / bharat

সপ্তাহে 60 ঘণ্টার বেশি কাজ নয় ! বলছে প্রাক-বাজেট অর্থনৈতিক সমীক্ষা - NO 60 HR WORK WEEK

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে ডেস্কে কাটানো মানসিক সুস্থতায় আঘাত হানে ৷ উৎপাদনশীলতার সঙ্গে কর্মঘণ্টার সম্পর্ক নেই। বরং দীর্ঘক্ষণ কাজ উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয় ৷

No 60 Hr Work Week
সপ্তাহে 60 ঘণ্টার বেশি কাজ নয় ! (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 31, 2025, 8:12 PM IST

নয়াদিল্লি, 31 জানুয়ারি: 70 বা 90 ঘণ্টার কর্ম-সপ্তাহ নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ বাড়ছে ৷ তারমধ্যেই সামনে এল সংসদে পেশ করা প্রাক-বাজেট অর্থনৈতিক সমীক্ষা ৷ ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সপ্তাহে 60 ঘণ্টার বেশি কর্মক্ষেত্রে ব্যয় করা স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে ৷ বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার উদ্ধৃতিও রয়েছে ।

ওই সমীক্ষা বলছে, দীর্ঘ সময় ধরে ডেস্কে কাটালে মানসিক সুস্থতায় আঘাত লাগে ৷ যারা প্রতিদিন 12 ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় ডেস্কে কাটান, তাঁদের মানসিক সুস্থতার স্তর ‘হতাশাজনক’ (Distressed) । ওই সমীক্ষায় পেগা এফ, নাফ্রাদি বি (2021) এবং ডব্লিউএইচও/আইএলও জয়েন্ট এস্টিমেটস অফ দ্য ওয়ার্ক-সম্পর্কিত ‘বার্ডেন অফ ডিজিজ অ্যান্ড ইনজুরি’র ফলাফল উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘‘কর্মক্ষেত্রে কাটানো সময়কে আপাতদৃষ্টিতে উৎপাদনশীলতার অন্যতম প্রধান পরিমাপ হিসাবে বিবেচনা করা হয় ৷ তবে প্রতি সপ্তাহে কাজের সময় 55-60 ঘণ্টার বেশি কাজ করলে তা স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বলে উঠে এসেছে কয়েকটি গবেষণায়।’’

গবেষণায় স্যাপিয়েন ল্যাবস সেন্টার ফর হিউম্যান ব্রেন অ্যান্ড মাইন্ড দ্বারা করা একটি গবেষণার তথ্যও উদ্ধৃত করা হয়েছে । সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘নিজের ডেস্কে দীর্ঘ সময় কাটানো মানসিক সুস্থতার জন্য ক্ষতিকর । যারা 12 ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ডেস্কে কাটান, তাঁদের মানসিক সুস্থতার স্তর ‘হতাশাজনক’ ৷ যারা ডেস্কে দু’ঘণ্টা বা তার কম সময় কাটান, তাঁদের তুলনায় মানসিক সুস্থতার স্কোর প্রায় 100 পয়েন্ট কম ।

সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, উন্নত জীবনধারা, কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি এবং পারিবারিক সম্পর্ক প্রতি মাসে কর্মক্ষেত্রে 2-3 দিন কম নষ্ট করার সঙ্গে সম্পর্কিত । বসের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক এবং কর্মক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির কাজ করতে অক্ষম হওয়ার সঙ্গে দিনের সংখ্যা বৃদ্ধির অন্তত গুরুতর সম্পর্ক রয়েছে ।একাধিক কারণ উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে । এতে দেখা গিয়েছে যে সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থাপনাগত সম্পর্কযুক্ত চাকরিতেও, প্রতি মাসে প্রায় 5 দিন নষ্ট হয় ৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী পরিসংখ্যান বলছে, হতাশা এবং উদ্বেগের কারণে বছরে প্রায় 12 বিলিয়ন দিন নষ্ট হয় । ওই গবেষণায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ 1 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে অনুমান করা হয়েছে ।

কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ ?

অর্থনৈতিক সমীক্ষা 2024-24 ‘কিছু দেশে গড়ে সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টার ক্যাপ’ বিষয়ে আলোচনা করেছে ৷ সম্প্রতি লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (এল অ্যান্ড টি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান এসএন সুব্রহ্মণ্যম কর্মঘণ্টা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত মন্তব্য করার কয়েক সপ্তাহ পরেই এই সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে । সুব্রহ্মণ্যম বলেছিলেন, কর্মীদের ঘরে বসে থাকার পরিবর্তে রবিবার-সহ সপ্তাহে মোট 90 ঘন্টা কাজ করা উচিত । তিনি ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির 70 কর্মঘণ্টার পরামর্শের সঙ্গেও সহমত পোষণ করেন ।

এই মন্তব্যের পর সমালোচনার মুখে পড়েন সুব্রহ্মণ্যম ৷ প্রকাশ্যেই অন্য সুর শোনা যায় একাধিক শিল্পপতির গলাতেও ৷ আরপিজি গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষ গোয়েঙ্কা বলেন, ‘‘দীর্ঘ কর্মঘণ্টা সফলতার জন্য নয়, বার্ন-আউটের পথ ।’’ মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা সাফ জানিয়ে দেন, কাজের সময় ব্যয় করার চেয়ে কাজের মান এবং উৎপাদনশীলতার উপর মনোনিবেশ করা উচিত । আইটিসি লিমিটেডের চেয়ারম্যান সঞ্জীব পুরি জানান, একজন ব্যক্তি কত ঘণ্টা কাজ করেন তার চেয়েও কী কাজ করেন সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ৷ এবার অর্থনৈতিক সমীক্ষাতেও উঠে এলো একই তথ্য।

আরও পড়ুন

নয়াদিল্লি, 31 জানুয়ারি: 70 বা 90 ঘণ্টার কর্ম-সপ্তাহ নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ বাড়ছে ৷ তারমধ্যেই সামনে এল সংসদে পেশ করা প্রাক-বাজেট অর্থনৈতিক সমীক্ষা ৷ ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সপ্তাহে 60 ঘণ্টার বেশি কর্মক্ষেত্রে ব্যয় করা স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে ৷ বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার উদ্ধৃতিও রয়েছে ।

ওই সমীক্ষা বলছে, দীর্ঘ সময় ধরে ডেস্কে কাটালে মানসিক সুস্থতায় আঘাত লাগে ৷ যারা প্রতিদিন 12 ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় ডেস্কে কাটান, তাঁদের মানসিক সুস্থতার স্তর ‘হতাশাজনক’ (Distressed) । ওই সমীক্ষায় পেগা এফ, নাফ্রাদি বি (2021) এবং ডব্লিউএইচও/আইএলও জয়েন্ট এস্টিমেটস অফ দ্য ওয়ার্ক-সম্পর্কিত ‘বার্ডেন অফ ডিজিজ অ্যান্ড ইনজুরি’র ফলাফল উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘‘কর্মক্ষেত্রে কাটানো সময়কে আপাতদৃষ্টিতে উৎপাদনশীলতার অন্যতম প্রধান পরিমাপ হিসাবে বিবেচনা করা হয় ৷ তবে প্রতি সপ্তাহে কাজের সময় 55-60 ঘণ্টার বেশি কাজ করলে তা স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বলে উঠে এসেছে কয়েকটি গবেষণায়।’’

গবেষণায় স্যাপিয়েন ল্যাবস সেন্টার ফর হিউম্যান ব্রেন অ্যান্ড মাইন্ড দ্বারা করা একটি গবেষণার তথ্যও উদ্ধৃত করা হয়েছে । সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘নিজের ডেস্কে দীর্ঘ সময় কাটানো মানসিক সুস্থতার জন্য ক্ষতিকর । যারা 12 ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ডেস্কে কাটান, তাঁদের মানসিক সুস্থতার স্তর ‘হতাশাজনক’ ৷ যারা ডেস্কে দু’ঘণ্টা বা তার কম সময় কাটান, তাঁদের তুলনায় মানসিক সুস্থতার স্কোর প্রায় 100 পয়েন্ট কম ।

সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, উন্নত জীবনধারা, কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি এবং পারিবারিক সম্পর্ক প্রতি মাসে কর্মক্ষেত্রে 2-3 দিন কম নষ্ট করার সঙ্গে সম্পর্কিত । বসের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক এবং কর্মক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির কাজ করতে অক্ষম হওয়ার সঙ্গে দিনের সংখ্যা বৃদ্ধির অন্তত গুরুতর সম্পর্ক রয়েছে ।একাধিক কারণ উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে । এতে দেখা গিয়েছে যে সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থাপনাগত সম্পর্কযুক্ত চাকরিতেও, প্রতি মাসে প্রায় 5 দিন নষ্ট হয় ৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী পরিসংখ্যান বলছে, হতাশা এবং উদ্বেগের কারণে বছরে প্রায় 12 বিলিয়ন দিন নষ্ট হয় । ওই গবেষণায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ 1 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে অনুমান করা হয়েছে ।

কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ ?

অর্থনৈতিক সমীক্ষা 2024-24 ‘কিছু দেশে গড়ে সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টার ক্যাপ’ বিষয়ে আলোচনা করেছে ৷ সম্প্রতি লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (এল অ্যান্ড টি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান এসএন সুব্রহ্মণ্যম কর্মঘণ্টা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত মন্তব্য করার কয়েক সপ্তাহ পরেই এই সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে । সুব্রহ্মণ্যম বলেছিলেন, কর্মীদের ঘরে বসে থাকার পরিবর্তে রবিবার-সহ সপ্তাহে মোট 90 ঘন্টা কাজ করা উচিত । তিনি ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির 70 কর্মঘণ্টার পরামর্শের সঙ্গেও সহমত পোষণ করেন ।

এই মন্তব্যের পর সমালোচনার মুখে পড়েন সুব্রহ্মণ্যম ৷ প্রকাশ্যেই অন্য সুর শোনা যায় একাধিক শিল্পপতির গলাতেও ৷ আরপিজি গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষ গোয়েঙ্কা বলেন, ‘‘দীর্ঘ কর্মঘণ্টা সফলতার জন্য নয়, বার্ন-আউটের পথ ।’’ মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা সাফ জানিয়ে দেন, কাজের সময় ব্যয় করার চেয়ে কাজের মান এবং উৎপাদনশীলতার উপর মনোনিবেশ করা উচিত । আইটিসি লিমিটেডের চেয়ারম্যান সঞ্জীব পুরি জানান, একজন ব্যক্তি কত ঘণ্টা কাজ করেন তার চেয়েও কী কাজ করেন সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ৷ এবার অর্থনৈতিক সমীক্ষাতেও উঠে এলো একই তথ্য।

আরও পড়ুন

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.