মালদা, 18 এপ্রিল: "জেলে যাওয়ার ভয়েই ইন্ডিয়া জোট ছেড়ে আত্মসমর্পণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কারণ দিদির খোকাবাবুর নাম ইডি-সিবিআইয়ের খাতায় চলে এসেছে ৷" মালদায় প্রথম নির্বাচনী প্রচারে এসে বুধবার তৃণমূলনেত্রীকে নিশানা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী ৷
চব্বিশের নির্বাচনী প্রচারে বুধবারই একসময়ের কংগ্রেসি গড়ে পা রাখেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা ৷ সঙ্গে ছিলেন সিপিআইএম নেতা শতরূপ ঘোষ ৷ এদিন উত্তর মালদার বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক আলমের সমর্থনে চাঁচল ও রতুয়ায় দু'টি জনসভা করেন তাঁরা ৷ কোনও সভাতেই মানুষের তেমন ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি ৷ যা উত্তর মালদার হাত শিবিরের কাছে অশনি সংকেত বলে মনে করছে এলাকাবাসী ৷
এদিন বিজেপির তুলনায় তৃণমূলের প্রতি বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন অধীর ৷ তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী এমন হল যে ইন্ডিয়া জোট ছেড়ে পালাতে হল ! মোদিকে খুশি করতে হল ! আমরা ক'দিন পর সেটা বুঝতে পেরেছি ৷ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে ইডি-সিবিআই গ্রেফতার করে তিহাড় জেলে পাঠিয়েছে ৷ দিদির প্রিয় খোকাবাবুর নাম ইডি-সিবিআইয়ের নথিতে যে এসেছে, তা আমরা সবাই জানি ৷ মালদায় যত বালি, কয়লা চুরি, গরুপাচার, শিক্ষক দুর্নীতি যা কিছু ঘটে তার সমাপ্তি ঘটে দিদি এবং দিদির পরিবারের দফতরে গিয়ে ৷ দুর্নীতির উৎপত্তিস্থল যেখানেই হোক, গন্তব্যস্থল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবারের ঘরের দরজা ৷ তাঁদেরও জেলে যেতে হতে পারে ৷ সেই আশঙ্কাতেই দিদি আত্মসমর্পণ করলেন ৷"
অধীর এদিন আরও বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, বিজেপির সঙ্গে লড়ব ৷ যখন বিজেপির সঙ্গে লড়াই করার জন্য ইন্ডিয়া শক্তি তৈরি হচ্ছে, যে জোটে তিনি সামিল হয়েছিলেন ৷ জোট থেকে প্রথম সরে যান পালটু কুমার নীতীশ কুমার ৷ দ্বিতীয় পালটু কুমারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ যখন বিজেপি ইন্ডিয়া জোটকে ভয় পাচ্ছে, সেই সময় তিনি জোট থেকে সরে এসেছেন ৷ এসব আসলে নাটক ৷ আমি জানি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, খোকাবাবু মালদায় আসবেন ৷ তাঁরা এলে প্রশ্ন করবেন ইন্ডিয়া জোট থেকে বেরিয়ে আসার কারণ কী ? রাহুল গান্ধির ন্যায়যাত্রাকে আটকাতে এখানে নানা ফরমান জারি করা হয়েছিল ৷ থাকার ব্যবস্থা, খাওয়ার ব্যবস্থা, শহরে মিটিং না করতে দেওয়া, এমনকি তাঁকে সঠিক নিরাপত্তাও দেওয়া হয়নি ৷ অথচ রাহুল গান্ধির বাবাই এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৈরি করেছিলেন ৷ যাদের হাত ধরে 2011 সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, এখন তাদেরই অপমান করছেন, অস্বীকার করছেন ৷ তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করতে পারেন ?"
আরও পড়ুন :
- অধীরের হাতে আক্রান্ত যুবকের বাড়িতে ইউসুফ পাঠান
- নিজের গড়েই প্রচারে বাধা, অধীরকে দেখেই গো-ব্যাক স্লোগান তৃণমূলের
- পরিযায়ী-মন্ত্রেই মুর্শিদাবাদ দখলের ছক! বিজ্ঞাপনই হাতিয়ার সিপিএমের