পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / politics

নৈহাটি উপনির্বাচনে ধাক্কা ! বামেদের ‘প্রতীক’ চিনতে পারেননি ভোটাররা, দাবি নেতৃত্বের

সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনে 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের থেকেও নৈহাটিতে কম ভোট পেয়েছে বামেরা ৷ লিবারেশনের প্রতীক চিনতে পারেননি অনেকে বলে দাবি নেতৃত্বের ৷

ASSEMBLY BYE ELECTION 2024
নৈহাটি উপনির্বাচনে লিবারেশন প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 5 hours ago

নৈহাটি, 26 নভেম্বর:নৈহাটি বিধানসভা উপনির্বাচনে বড়সড় ধাক্কা বামেদের । 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের থেকে 50 শতাংশের কম ভোট পেলেন উপনির্বাচনে বাম সমর্থিত লিবারেশন প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার । এককথায় শোচনীয় পরাজয় হয়েছে তাঁর । 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী ইন্দ্রানী কুণ্ডু মুখোপাধ্যায় পান 15 হাজার 825 ভোট । 2024-এর উপনির্বাচনে সেই ভোট কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে 7 হাজার 574 ভোটে ।‌

একসময় বামেদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল নৈহাটি । 1977 সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার অনেক আগেই নৈহাটিতে শক্ত ছিল বামেদের ব্যাটন । সিপিএম নেতা এবং বাম সরকারের মন্ত্রী রঞ্জিত কুন্ডু এই নৈহাটি বিধানসভা থেকে পরপর তিনবার বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন। উত্তর 24 পরগনা জেলা একদা ছিল বামেদের দুর্ভেদ্য দুর্গ ৷ সেখানে নৈহাটি বাম রাজনীতির মানচিত্রে ছিল একটি উজ্জ্বল বিন্দু ।

নৈহাটি বামেদের প্রাপ্ত ভোট (নির্বাচন কমিশন)

তাহলে 2021 সালের নির্বাচনী ফলাফলের সঙ্গে এবারের ফলাফলে এই বিশাল তফাতের কারণ কী ? এলাকায় যারা বামেদের একনিষ্ঠ সমর্থক, তারা কী লিবারেশনের সঙ্গে বামেদের এই জোট মেনে নিতে পারেননি ? উত্তরে লিবারেশন প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার বলেন, "প্রচারের জন্য সময় ছিল 19 দিন । তারমধ্যে উৎসবও ছিল । ফলে দেখতে গেলে মাত্র 8 দিন সময় পেয়েছিলাম । সেই জন্য সবার কাছে পৌঁছন সম্ভব হয়নি । আরও একটি বড় বিষয় হল 'প্রতীক' । আমরা সকলের সঙ্গে বিশেষ করে বাম ভোটারের সঙ্গে প্রতীকটির পরিচিত করাতে পারিনি । ফলে কম ভোট পড়েছে ।" আর 'কমিটেড ভোটার' ! তারাও কি লিবারেশন প্রার্থীকে কম ভোট দিয়েছেন ? দেবজ্যোতি বলেন, "কমিটমেন্ট শব্দটা কিন্তু এখন অনেকটাই ছোট হয়ে এসেছে ।"

সিপিএমের উত্তর 24 পরগনা জেলা কমিটির সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী নিজেও মনে করেন নৈহাটিতে তাঁদের প্রার্থীর প্রতীকের সঙ্গে সকলকে পরিচিতি করানো যায়নি । তাঁর কথায়, "প্রার্থীর প্রতীককে যথেষ্ট পরিচিত করানো যায়নি । প্রত্যন্ত অঞ্চলে যদি ঘরে ঘরে প্রতীককে পরিচিত না করানো যায় তবে একটা সমস্যা তৈরি হয় । সেই সমস্যার কথা স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলেছিলেন । সেইসঙ্গে, আরও একটা কথা মনে রাখতে হবে কমিটেড ভোটার বলতে আমরা যেটা বুঝি সেটা কোনও রাজনৈতিক দলেরই বিরাট সংখ্যায় হয় না ।"

বিধানসভা উপনির্বাচনে লিবারেশনের প্রতীক (সিপিআই (এমএল))

প্রতীক যদি প্রধান সমস্যা হয়, তবে সিপিএম কী নিজের প্রার্থী দিলে ভালো করত ? এই প্রসঙ্গে মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, "দেখুন প্রতীক একটি বড় বিষয় । অনেকের কাছে হয়তো পৌঁছন গিয়েছে ৷ কিন্তু প্রতীক নিয়ে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে ৷ যদিও এটি একটিমাত্র কারণ ৷ একমাত্র কারণ নয় ।" পাশাপাশি তাঁর দাবি, "উপনির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহটাও খানিক কম থাকে ।"

যদিও লিবারেশন ও সিপিএম, দুই তরফের দাবিই নস্যাৎ করেছে শাসক শিবির তৃণমূল কংগ্রেস । উপনির্বাচনে সদ‍্য জয়ী তৃণমূল বিধায়ক সনৎ দে বলেন, "বাজে যুক্তি । আসলে সিপিএম নিজেও জানত তারা হারবে । সেই জন্য, লিবারেশনকে দাঁড় করিয়েছিল ।"

পড়ুন:উপনির্বাচনে 6 আসনে উড়ল সবুজ আবির, জয় নিয়ে কী বার্তা তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্রের

ABOUT THE AUTHOR

...view details