কলকাতা, 4 জানুয়ারি: 2011 সালে বাম জমানার অবসান হয় পশ্চিমবঙ্গে ৷ ক্ষমতায় আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ৷ তার পর কেটে গিয়েছে 13 বছরেরও বেশি সময় ৷ এই সময়ের মধ্যে ক্রমশ সরকারি বিজ্ঞাপন কমেছে সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তির ৷ ইদানীং কমেছে বেসরকারি বিজ্ঞাপনের সংখ্যাও ৷ এই পরিস্থিতিতে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর উপরই আস্থা রাখতে চাইছেন সিপিএম নেতৃত্ব ৷
তাই সিপিএম নেতৃত্বের তরফে দলের কর্মীদের কাছে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে বছরের শেষে যেন ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর টাকা গণশক্তির তহবিলে দেওয়া হয় ৷ যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ৷ প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাতেই এবার পার্টির মুখপত্র চালাতে চায় সিপিএম ?
আসলে এই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে সিপিএমের মুখপত্রের 59তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে ৷ সেখানে এই প্রসঙ্গ তোলেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বিমান বসু ৷ বলেন, ‘‘অনেকেই অনেক বহুমূল্য জিনিস কেনেন । তার মধ্য থেকেই প্রতি মাসে টাকা জমাতে হবে । সেই টাকা জমিয়ে বছরে গণশক্তি তহবিলে দিতে হবে ।’’
এর পর তিনি পরামর্শ দেন ভাণ্ডার কিনে তাতে টাকা জমাতে । সেই অর্থ দান করতে । নিজেও তিনি পার্টি সদস্যপদ পাওয়ার আগে থেকেই প্রতি মাসে নিয়ম তিনি কীভাবে অর্থ সাহায্য করতেন সেই কথাও বলেন ৷
বাঙালির প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এই ধরনের ভাণ্ডার থাকে ৷ যা মূলত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত ৷ প্রতিটি বাড়ির মহিলারা মূলত এই ভাণ্ডারে অর্থ জমান ৷ কিন্তু 2021 সালের বিধানসভা ভোটের সময় থেকে এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মানেই বদলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ৷ বাড়ির মহিলাদের জন্য চালু হওয়া ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প ওই ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে বাজিমাত করতে অনেকটা সাহায্য করে ৷
পরবর্তীতে অন্যান্য অনেক রাজ্যেই দেখা গিয়েছে যে এই ধরনের প্রকল্প ভোটের হাওয়া ঘুরিয়ে দিয়েছে ৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে তাহলে কি সিপিএমও ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর উপর আস্থা রাখতে চাইছে ? যদিও বিমান বসু ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর কথা উল্লেখ করেননি ৷ তিনি ভাণ্ডার কিনে অর্থ জমাতে পরামর্শ দিয়েছেন ৷