নয়াদিল্লি, 13 ফেব্রুয়ারি: ধর্ষণ-বিরোধী অপরাজিতা বিল বাস্তবায়িত করতে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রয়োজন ৷ সেই সম্মতি আদায়ে এবং বিলটি কার্যকর করার আবেদন নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করলেন এগারো সদস্যের তৃণমূল সাংসদদের একটি প্রতিনিধি দল ৷ গত 3 সেপ্টেম্বর বিধানসভায় এই অপরাজিতা বিল, 2024 পাশ হয় ৷ এরপর রাজভবনের তরফে বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন ৷
এরপর বিলটি পৌঁছে গিয়েছে রাইসিনা হিলসে ৷ কিন্তু রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে অপরাজিতা বিল ৷ এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করেন লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন ৷ এছাড়া এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন- রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ, দোলা সেন এবং সুস্মিতা দেব, লোকসভার সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, মহুয়া মৈত্র, জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ, সাজদা আহমেদ ও মিতালী বাগ।
গত বছর অগস্টে আরজি করের এক তরুণী ডাক্তারি পড়ুয়ার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় আরজি কর হাসপাতালের চারতলায় সেমিনার রুম থেকে ৷ অভিযোগ, তাঁকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে ৷ এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে সারা রাজ্য ৷ বিরোধীদের চাপের মুখে পড়ে শাসকদল ৷ এই পরিস্থিতিতে ধর্ষণের অপরাধে কড়া শাস্তি নিশ্চিত করতে এবং এই জঘন্য অপরাধের ঘটনা নির্মূলের উদ্দেশে বিধানসভায় অপরাজিতা বিল পাশ করে রাজ্য সরকার ৷
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছিল, এই অপরাজিতা বিল কার্যকর করতে লড়াই চালিয়ে যাবে তারা ৷ প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতির কাছেও দরবার করবে দল ৷ বিধানসভার পর রাজভবনের পক্ষ থেকে অপরাজিতা বিলকে ছাড়পত্র দেওয়া হয় ৷ এবার শুধু অপেক্ষা রাষ্ট্রপতির সম্মতির ৷ তাই এবার রাষ্ট্রপতির দারস্থ হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা ৷
এই বিল প্রসঙ্গে লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "রাজ্য সরকার নারী নির্যাতন রুখতে বিধানসভায় ধর্ষণ বিরোধী কড়া আইন নিয়ে এসেছিল ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড বিল 2024 রাজ্য বিধানসভায় পাস হয়েছে ৷ কিন্তু এখনও সেই বিলের অনুমোদন আসেনি ৷ আজ মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে আমরা মহিলা সাংসদদের নিয়ে গিয়েছিলাম ৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর কাছে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি, ধর্ষণকারীদের শাস্তির ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড এবং কারাদণ্ডের সংস্থান রেখে আইনে একটি নতুন পথ খুলে দিয়েছে রাজ্য সরকার ৷ এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ভবনের পক্ষ থেকে মহিলাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে যত দ্রুত সম্ভব এই বিলে অনুমোদন দেওয়া হোক ৷ তাহলে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটা কড়া অবস্থান গ্রহণ করা সম্ভব হবে ৷"
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে তিনিও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ৷ তিনি কথা দিয়েছেন, এ বিষয়ে যা যা পদক্ষেপ করার প্রয়োজন, তা করবেন ৷