পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

মুখ্যমন্ত্রীর জেলার তিন-সহ হিমাচলে কেন 6 জন বিধায়ক হাত ছাড়ালেন কংগ্রসের ?

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 28, 2024, 9:12 PM IST

Himachal Rajya Sabha Election Result: হিমাচল প্রদেশে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেসের সরকার ছিল । তা সত্ত্বেও বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজন রাজ্যসভা নির্বাচনে জিতেছেন। কী হয়েছিল এবং কেন কংগ্রেস বিধায়করা হাত ছাড়লেন?

Rajya Sabha Election Result
রাজ্যসভা নির্বাচন

সিমলা, 28 ফেব্রুয়ারি: হিমাচল প্রদেশে সংকটের মুখে কংগ্রেস সরকার ৷ রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও রাজ্যসভার নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন হাত শিবিরের প্রার্থী । ক্রস ভোটের মাধ্যমে বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজন রাজ্যসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন । মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজ্যসভা ভোট ৷ 9 জন বিধায়ক ক্রস ভোট দিয়েছেন । এর মধ্যে 6 জন বিধায়ক ছিলেন কংগ্রেসের এবং 3 জন নির্দল । এই 9টি নিয়ে 25 জন বিধায়ক-সহ বিজেপি প্রার্থী মোট 34টি ভোট পেয়েছেন ।

যদিও হিমাচলে কংগ্রেসের 40 জন বিধায়ক রয়েছে ৷ 6 বিধায়ক বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন ৷ এর ফলে কংগ্রেসের প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভি পেয়েছেন মাত্র 34 ভোট । এরপরেই ড্র করে বিজয়ী নির্বাচন করতে হয় । তাতেই বিজেপি প্রার্থী জয়ী হন ৷ কংগ্রেস বিধায়করা দলের বিপক্ষে চলে যান ৷ তবে রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস জয় নিয়ে নিশ্চিত ছিল ৷ ভোট ময়দানে গিয়ে পরিস্থিতির বদল ঘটে ৷ হিমাচলের রাজনৈতিক সমীকরণও বদলে যায়।

এই বিধায়করা ক্রস ভোট দিয়েছেন:

  • সুধীর শর্মা- কাংড়া জেলার ধর্মশালার কংগ্রেস বিধায়ক সুধীর শর্মাও কিছুদিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন । সোশাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমেও নিজের সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন তিনি । সুধীর শর্মা 2003, 2007 এবং 2012 সালে বিধায়ক হয়েছেন । 2022 সালে তিনি চতুর্থবারের জন্য বিধায়ক হন । সুধীর শর্মা বীরভদ্র সরকারের মন্ত্রীও হয়েছেন ।
  • রাজেন্দ্র রানা-হামিরপুর জেলার সুজনপুরের বিধায়ক রাজেন্দ্র রানা ৷ কিছুদিন ধরে সরকারকে ক্রমাগত আক্রমণ করছিলেন তিনিও । টানা তিনবার বিধায়ক হয়েছেন রাজেন্দ্র । 2017 সালে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রেম কুমার ধুমালকে ভোটে হারিয়েছিলেন ।
  • ইন্দ্রদত্ত লখনপাল-ইন্দ্রদত্ত লখনপাল হামিরপুর জেলার বাদসার বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক । তিনি 2012, 2017 এবং এরপরে 2022 সালে টানা তৃতীয়বার বিধায়ক হয়েছেন ।
  • দেবেন্দ্র কুমার ভুট্টো- উনা জেলার কুটলাইহার বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক দেবেন্দ্র কুমার ভুট্টো । তিনি 2022 সালে প্রথমবার বিধায়ক হন ।
  • রবি ঠাকুর-লাহৌল স্পিতির কংগ্রেস বিধায়ক রবি ঠাকুরও ক্রস ভোট দিয়েছেন । তিনি 2012 সালের পর 2022 সালে দ্বিতীয়বার বিধায়ক হয়েছেন ।
  • চৈতন্য শর্মা- 29 বছর বয়সি চৈতন্য শর্মা উনা জেলার গাগ্রেট কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক ৷ তিনি 2022 সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথমবারের বিধায়ক হন ।
  • আশিস শর্মা- হামিরপুর জেলার হামিরপুরের নির্দল বিধায়ক আশিস শর্মাও ক্রস ভোট দেন । তিনি 2022 সালে প্রথমবারের বিধায়ক হয়েছেন ।
  • হোশিয়ার সিং- কাংড়া জেলার দেরার বিধানসভা কেন্দ্রের নির্দল বিধায়ক হোশিয়ার সিং । 2017 সালের পরে তিনি 2022 সালেও বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি ।
  • কেএল ঠাকুর- সোলান জেলার নালাগড়ের নির্দল বিধায়ক কেএল ঠাকুর ৷ দ্বিতীয়বার তিনি বিধায়ক হয়েছেন । কেএল ঠাকুর 2012 সালে বিজেপি বিধায়ক ছিলেন ৷ তাঁকে 2022 সালে দল টিকিট দেয়নি । এরপর তিনি দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়ান এবং বিধায়ক হন ।

মুখ্যমন্ত্রীর নিজ জেলা থেকে 3 জন বিধায়ক ক্রস ভোট দিয়েছেন

রাজ্যসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ক্রস ভোট দেওয়া 9 জন বিধায়কের মধ্যে 3 জন মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর নিজের জেলা হামিরপুরের । এর মধ্যে রয়েছেন সুজনপুরের কংগ্রেস বিধায়ক রাজেন্দ্র রানা এবং বাদসার থেকে ইন্দ্রদত্ত লখনপাল এবং হামিরপুরের নির্দল বিধায়ক আশিস শর্মা । হামিরপুর জেলায় মোট 5টি বিধানসভা আসন রয়েছে, যার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী এবং ভরাঞ্জ থেকে নির্বাচিট সুরেশ কুমারের ভোট দিয়েছেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভিকে ।

ক্রস ভোটিংয়ের কারণ কী?

হিমাচল কংগ্রেসের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছিল । সুধীর শর্মা এবং রাজেন্দ্র রানার মতো বিধায়করা সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন এবং সোশাল মিডিয়া থেকে রাস্তায় সরকারকে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দিতেন। উভয় বিধায়কই কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে যুব, বিধায়ক তহবিল এবং মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ সংক্রান্ত বিষয়ে খোলামেলা সরকারের সমালোচনা করেছেন । দু'জনেই মন্ত্রী পদের দৌড়ে ছিলেন ৷ কিন্তু সরকার গঠনের 14 মাস পরও তাদের মন্ত্রী করা হয়নি । রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে গত সপ্তাহে দুই বিধায়কই সরকারকে কটাক্ষ করেছিলেন এবং জানিয়েছিলেন, তাঁরা মন্ত্রী হবেন না ।

পাশাপাশি, সরকারের প্রতি কংগ্রেস সংগঠনের অসন্তোষ কারোর অজানা ছিল না। কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি প্রতিভা সিংও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কর্মীদের উপেক্ষা করার অভিযোগ তোলেন । প্রতিভা সিং রাজ্যের কর্পোরেশন এবং বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের দাবি তুলেছেন বেশ কয়েকবার । একইভাবে মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিংয়ের হাত থেকে সম্প্রতি দফতর চলে যাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হন ।

আরও পড়ুন:

  1. একদিন আগেই বাজেট পাশ করে মুলতুবি অধিবেশন, আপাতত রক্ষা হিমাচল সরকারের
  2. হিমাচলে সাসপেন্ড 15 বিজেপি বিধায়ক, সুখুর বিরুদ্ধে তোপ দেগে পদত্যাগ মন্ত্রী বিক্রমাদিত্যের
  3. রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে ভোট বিভাজনের দাবি বিজেপি বিধায়কদের

ABOUT THE AUTHOR

...view details