ETV Bharat / entertainment

বারাঙ্গনার নামে থিয়েটার হলে বাবুরা আসবে না, বিনোদিনীকে বলেছিলেন গিরিশ ঘোষ! - BINODINI DASI

গুর্মুখ রায়ের রক্ষিতা হয়ে বাংলা নাট্যজগৎকে একটি রঙ্গালয় উৎসর্গ করেছিলেন বিনোদিনী দাসী ৷ গুর্মুখ তাঁকে 50 হাজার টাকা দেন তাঁর সঙ্গে থাকার জন্য ।

ETV BHARAT
বাংলা নাট্যজগৎকে একটি রঙ্গালয় উৎসর্গ করেছিলেন বিনোদিনী (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Entertainment Team

Published : Dec 31, 2024, 7:49 PM IST

Updated : Dec 31, 2024, 8:06 PM IST

কলকাতা, 31 ডিসেম্বর: আজ হঠাৎই সব কথার কেন্দ্রে রঙ্গালয়ের স্টার, 'ফার্স্ট লেডি অফ বেঙ্গলি থিয়েটার' নটী বিনোদিনী । কারণ স্টার থিয়েটারকে এখন থেকে লোকে চিনবে 'বিনোদিনী থিয়েটার' হিসেবে । আর এটা হওয়ার কথা ছিল 1883 সালে । কিন্তু তা হয়নি বা হতে দেওয়া হয়নি । সেই ইতিহাসই আরও একবার সবিস্তারে ঝালিয়ে নেব । তথ্য সহায়তায় বিনোদিনী দাসীর আত্মজীবনী 'আমার কথা'।

বিনোদিনীকে গড়ে পিঠে সেদিন রঙ্গমঞ্চের সম্রাজ্ঞী বানিয়েছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ । আবার বিনোদিনীর নামে সেদিন রঙ্গমঞ্চ না হওয়ার নেপথ্যেও তাঁরই অবদান । গুর্মুখ রায় যখন বিনোদিনীর নামে রঙ্গমঞ্চ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অটুট, তখন গিরিশ ঘোষই খানিক ভয় পান । এক পরিচয়হীনার নামে রঙ্গালয়ের নাম হলে যদি তৎকালীন উপরতলার বাবুরা থিয়েটার দেখতে না আসেন ! ওদিকে জানা গিয়েছিল বিনোদিনীকে গুর্মুখ রায় 50 হাজার টাকা দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকার জন্য । এও শোনা যায়, বিনোদিনী সেই টাকা ফেরত দেন । তবে, তা বিশ্বাস হয়নি গিরিশ ঘোষের । তিনি মনে করেন, গুর্মুখ রায়ের রক্ষিতার নামে রঙ্গালয় হলে তাতে রঙ্গমঞ্চের সম্মান কমবে বই বাড়বে না !

ETV BHARAT
বিনোদিনী দাসীর আত্মজীবনী 'আমার কথা' (নিজস্ব চিত্র)

এরই মাঝে গুর্মুখের উদ্যোগে নতুন থিয়েটার তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায় । মজুরদের সঙ্গেও কাজে হাত লাগান বিনোদিনী । নতুন থিয়েটারের রেজিস্ট্রেশনের দিন বিনোদিনীকে গিরিশ ঘোষ বললেন, বিনোদ একটা দুঃসংবাদ আছে । "তোর নাম রেজিস্ট্রেশন করা যাবে না । বাবুরা প্রতিবাদ করছে শহরজুড়ে । বারাঙ্গনার নামে থিয়েটার হলে বাবুরা সেই থিয়েটারে আসবে না ।..." বিনোদিনী চুপ ।

1863 সালে তাঁর জন্ম । 145 নং, কর্নওয়ালিস স্ট্রিটে নিষিদ্ধপল্লির এক আঁধার ঘরে মা-দিদিমার কাছেই মানুষ পিতৃপরিচয়হীন পুঁটি অর্থাৎ বিনোদিনী । গিরিশের কাছে সেদিন কিছু চাইবারও ছিল না বিনোদিনীর । কেননা, স্বয়ং ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ স্টার থিয়েটারে এসে বারাঙ্গনা বিনোদিনীর মাথায় হাত রেখে বলে গিয়েছেন, ‘মা তোর চৈতন‌্য হোক’।

গিরিশবাবু সেদিন তাঁকে বললেন, "একটা উপায় বার করেছি বিনোদ, থিয়েটারের নাম হবে, ‘বি’ থিয়েটার । বিনোদের ‘বি’ টা তো রইল । সাপও মরল, লাঠিও ভাঙল না ।" কিন্তু সেই কথাও রাখেননি গিরিশবাবু । তিনি তাঁর, নতুন থিয়েটার দলের নাম রাখলেন, ‘ক‌্যালকাটা স্টার কোম্পানি ।’ আর নতুন রঙ্গালয়ের নাম দিলেন ‘স্টার থিয়েটার ।’ কোথাও রাখলেন না বিনোদিনীকে । 'বি' অক্ষরটুকু অবধি রাখেননি তিনি । এরপর একদিন তাড়িয়েই দিলেন বিনোদিনীকে, বয়সের দোহাই দিয়ে ।

ETV BHARAT
'ফার্স্ট লেডি অফ বেঙ্গলি থিয়েটার' নটী বিনোদিনী (নিজস্ব চিত্র)

অকাল অবসর গ্রহণ করার পর বিনোদিনী তাঁর দুটি আত্মজীবনী 'আমার কথা' এবং 'আমার অভিনয়জীবন'-এর জন্য কলম ধরেন । লেখেন, "আমার আত্মীয় নাই, সমাজ নাই, বান্ধব নাই, বন্ধু নাই, এই পৃথিবীতে আমার বলিতে কেহই নাই ।" প্রশ্ন তোলেন কেন নেই ? কী ছিল না তাঁর ? রূপ, যৌবন, প্রতিভা সবই তো ছিল তাঁর কাছে সযত্নে । জীবনে কোনওদিন পরচুল লাগাননি বিনোদিনী । মাত্র বারো বছরের অভিনয়জীবনে প্রায় 50টি নাটক, কমপক্ষে 60টি চরিত্রে অভিনয়, কোনও নাটকে একাই 7-8টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন রঙ্গিনী বিনীদিনী, চৈতন্যময়ী বিনোদিনী, পুরুষ-ভজা বিনোদিনী, একাকী নির্বাসিতা বিনোদিনী ।

তাঁর শৈশবহীন মেয়েবেলা অভিনয়কে আঁকড়ে ধরেছিল এক অনিবার্য মমতায় ৷ তিনি লেখেন, "এমনি মনের আনন্দে তখন অভিনয় করতাম, ওই ধ্যান, ওই জ্ঞান, ওই খেলা । খুব ভাল লাগত ৷ নতুন নতুন পার্ট সাজবার শখও সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে উঠত । আমি যে অভিনয় করতাম, তা আমার গুণে নয়, তখনকার শিক্ষকদের শেখাবার গুণে, তাঁদের পরিশ্রম ও যত্নে । কী কষ্ট করেই না তাঁরা আমার মতো একটা নেহাত বুনোকে 'হিরোইন' সাজিয়ে দর্শকের সামনে ধরে দিতেন...৷"

বাংলা থিয়েটারের আইডল হয়েও এতটুকু অহংভাবের লেশমাত্র পাওয়া যায় না তাঁর মধ্যে । রঙ্গালয় তৈরি করতে নিজের প্রায় সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন । লাহোরের গোপাল সিং-এর কামনা থেকে রাজস্থানি বৈষ্ণব গুর্মুখ রায়ের নাটকীয় প্রলোভন, কুমার বাহাদুরের লাগামছাড়া প্রেম প্রতিশ্রুতি থেকে রাঙাবাবুর দেওয়া বিবাহিতজীবন - তাঁর জীবনে কোনওদিন ভালো কিছুর সন্ধান দেয়নি । গুর্মুখের রক্ষিতা হয়ে বাংলা নাট্যজগৎকে একটি রঙ্গালয় উৎসর্গ করে গিয়েছেন তিনি । কিন্তু তাঁর সাধ পূরণ হয়নি ।

গুর্মুখ রায় স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, তাঁর নামেই হবে নতুন রঙ্গালয় । কিন্তু কোথায় কী ? 68 নং, বিডন স্ট্রিটে সেদিন 'বি থিয়েটার' বা 'বিনোদিনী স্টার থিয়েটার' নয় । গড়ে উঠল স্টার থিয়েটার । বিনোদিনী দেবী তাঁর আত্মজীবনী 'আমার কথা'তে লেখেন, "...থিয়েটার যখন প্রস্তত হয়, তখন সকলে আমায় বলেন যে - এই যে থিয়েটার হাউস হইবে, ইহা তোমার নামের সঙ্গে যোগ থাকিবে ।...কিন্তু কার্যকালে উঁহারা সে কথা রাখেন নাই কেন - তাহা জানি না ।"

সেই কথা কেউই জানে না আজও । তবে, এবার থেকে 'বিনোদিনী থিয়েটার'-এ যাবে সবাই । জয় হল বিনোদিনীর । কিন্তু সেখানে যে সিনেমা বেশি । থিয়েটারের আলো টিম টিম করে জ্বলে । তাই বাংলা থিয়েটারকে 'বিনোদিনী থিয়েটার' ফেরত দেওয়ার আর্জি রয়েছে বাংলার নাট্যজগতের একাংশের ।

কলকাতা, 31 ডিসেম্বর: আজ হঠাৎই সব কথার কেন্দ্রে রঙ্গালয়ের স্টার, 'ফার্স্ট লেডি অফ বেঙ্গলি থিয়েটার' নটী বিনোদিনী । কারণ স্টার থিয়েটারকে এখন থেকে লোকে চিনবে 'বিনোদিনী থিয়েটার' হিসেবে । আর এটা হওয়ার কথা ছিল 1883 সালে । কিন্তু তা হয়নি বা হতে দেওয়া হয়নি । সেই ইতিহাসই আরও একবার সবিস্তারে ঝালিয়ে নেব । তথ্য সহায়তায় বিনোদিনী দাসীর আত্মজীবনী 'আমার কথা'।

বিনোদিনীকে গড়ে পিঠে সেদিন রঙ্গমঞ্চের সম্রাজ্ঞী বানিয়েছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ । আবার বিনোদিনীর নামে সেদিন রঙ্গমঞ্চ না হওয়ার নেপথ্যেও তাঁরই অবদান । গুর্মুখ রায় যখন বিনোদিনীর নামে রঙ্গমঞ্চ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অটুট, তখন গিরিশ ঘোষই খানিক ভয় পান । এক পরিচয়হীনার নামে রঙ্গালয়ের নাম হলে যদি তৎকালীন উপরতলার বাবুরা থিয়েটার দেখতে না আসেন ! ওদিকে জানা গিয়েছিল বিনোদিনীকে গুর্মুখ রায় 50 হাজার টাকা দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকার জন্য । এও শোনা যায়, বিনোদিনী সেই টাকা ফেরত দেন । তবে, তা বিশ্বাস হয়নি গিরিশ ঘোষের । তিনি মনে করেন, গুর্মুখ রায়ের রক্ষিতার নামে রঙ্গালয় হলে তাতে রঙ্গমঞ্চের সম্মান কমবে বই বাড়বে না !

ETV BHARAT
বিনোদিনী দাসীর আত্মজীবনী 'আমার কথা' (নিজস্ব চিত্র)

এরই মাঝে গুর্মুখের উদ্যোগে নতুন থিয়েটার তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায় । মজুরদের সঙ্গেও কাজে হাত লাগান বিনোদিনী । নতুন থিয়েটারের রেজিস্ট্রেশনের দিন বিনোদিনীকে গিরিশ ঘোষ বললেন, বিনোদ একটা দুঃসংবাদ আছে । "তোর নাম রেজিস্ট্রেশন করা যাবে না । বাবুরা প্রতিবাদ করছে শহরজুড়ে । বারাঙ্গনার নামে থিয়েটার হলে বাবুরা সেই থিয়েটারে আসবে না ।..." বিনোদিনী চুপ ।

1863 সালে তাঁর জন্ম । 145 নং, কর্নওয়ালিস স্ট্রিটে নিষিদ্ধপল্লির এক আঁধার ঘরে মা-দিদিমার কাছেই মানুষ পিতৃপরিচয়হীন পুঁটি অর্থাৎ বিনোদিনী । গিরিশের কাছে সেদিন কিছু চাইবারও ছিল না বিনোদিনীর । কেননা, স্বয়ং ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ স্টার থিয়েটারে এসে বারাঙ্গনা বিনোদিনীর মাথায় হাত রেখে বলে গিয়েছেন, ‘মা তোর চৈতন‌্য হোক’।

গিরিশবাবু সেদিন তাঁকে বললেন, "একটা উপায় বার করেছি বিনোদ, থিয়েটারের নাম হবে, ‘বি’ থিয়েটার । বিনোদের ‘বি’ টা তো রইল । সাপও মরল, লাঠিও ভাঙল না ।" কিন্তু সেই কথাও রাখেননি গিরিশবাবু । তিনি তাঁর, নতুন থিয়েটার দলের নাম রাখলেন, ‘ক‌্যালকাটা স্টার কোম্পানি ।’ আর নতুন রঙ্গালয়ের নাম দিলেন ‘স্টার থিয়েটার ।’ কোথাও রাখলেন না বিনোদিনীকে । 'বি' অক্ষরটুকু অবধি রাখেননি তিনি । এরপর একদিন তাড়িয়েই দিলেন বিনোদিনীকে, বয়সের দোহাই দিয়ে ।

ETV BHARAT
'ফার্স্ট লেডি অফ বেঙ্গলি থিয়েটার' নটী বিনোদিনী (নিজস্ব চিত্র)

অকাল অবসর গ্রহণ করার পর বিনোদিনী তাঁর দুটি আত্মজীবনী 'আমার কথা' এবং 'আমার অভিনয়জীবন'-এর জন্য কলম ধরেন । লেখেন, "আমার আত্মীয় নাই, সমাজ নাই, বান্ধব নাই, বন্ধু নাই, এই পৃথিবীতে আমার বলিতে কেহই নাই ।" প্রশ্ন তোলেন কেন নেই ? কী ছিল না তাঁর ? রূপ, যৌবন, প্রতিভা সবই তো ছিল তাঁর কাছে সযত্নে । জীবনে কোনওদিন পরচুল লাগাননি বিনোদিনী । মাত্র বারো বছরের অভিনয়জীবনে প্রায় 50টি নাটক, কমপক্ষে 60টি চরিত্রে অভিনয়, কোনও নাটকে একাই 7-8টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন রঙ্গিনী বিনীদিনী, চৈতন্যময়ী বিনোদিনী, পুরুষ-ভজা বিনোদিনী, একাকী নির্বাসিতা বিনোদিনী ।

তাঁর শৈশবহীন মেয়েবেলা অভিনয়কে আঁকড়ে ধরেছিল এক অনিবার্য মমতায় ৷ তিনি লেখেন, "এমনি মনের আনন্দে তখন অভিনয় করতাম, ওই ধ্যান, ওই জ্ঞান, ওই খেলা । খুব ভাল লাগত ৷ নতুন নতুন পার্ট সাজবার শখও সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে উঠত । আমি যে অভিনয় করতাম, তা আমার গুণে নয়, তখনকার শিক্ষকদের শেখাবার গুণে, তাঁদের পরিশ্রম ও যত্নে । কী কষ্ট করেই না তাঁরা আমার মতো একটা নেহাত বুনোকে 'হিরোইন' সাজিয়ে দর্শকের সামনে ধরে দিতেন...৷"

বাংলা থিয়েটারের আইডল হয়েও এতটুকু অহংভাবের লেশমাত্র পাওয়া যায় না তাঁর মধ্যে । রঙ্গালয় তৈরি করতে নিজের প্রায় সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন । লাহোরের গোপাল সিং-এর কামনা থেকে রাজস্থানি বৈষ্ণব গুর্মুখ রায়ের নাটকীয় প্রলোভন, কুমার বাহাদুরের লাগামছাড়া প্রেম প্রতিশ্রুতি থেকে রাঙাবাবুর দেওয়া বিবাহিতজীবন - তাঁর জীবনে কোনওদিন ভালো কিছুর সন্ধান দেয়নি । গুর্মুখের রক্ষিতা হয়ে বাংলা নাট্যজগৎকে একটি রঙ্গালয় উৎসর্গ করে গিয়েছেন তিনি । কিন্তু তাঁর সাধ পূরণ হয়নি ।

গুর্মুখ রায় স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, তাঁর নামেই হবে নতুন রঙ্গালয় । কিন্তু কোথায় কী ? 68 নং, বিডন স্ট্রিটে সেদিন 'বি থিয়েটার' বা 'বিনোদিনী স্টার থিয়েটার' নয় । গড়ে উঠল স্টার থিয়েটার । বিনোদিনী দেবী তাঁর আত্মজীবনী 'আমার কথা'তে লেখেন, "...থিয়েটার যখন প্রস্তত হয়, তখন সকলে আমায় বলেন যে - এই যে থিয়েটার হাউস হইবে, ইহা তোমার নামের সঙ্গে যোগ থাকিবে ।...কিন্তু কার্যকালে উঁহারা সে কথা রাখেন নাই কেন - তাহা জানি না ।"

সেই কথা কেউই জানে না আজও । তবে, এবার থেকে 'বিনোদিনী থিয়েটার'-এ যাবে সবাই । জয় হল বিনোদিনীর । কিন্তু সেখানে যে সিনেমা বেশি । থিয়েটারের আলো টিম টিম করে জ্বলে । তাই বাংলা থিয়েটারকে 'বিনোদিনী থিয়েটার' ফেরত দেওয়ার আর্জি রয়েছে বাংলার নাট্যজগতের একাংশের ।

Last Updated : Dec 31, 2024, 8:06 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.