মা হওয়া এমন একটি অনুভূতি যা জীবনকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দেয় । এই সময়টি একজন নতুন মায়ের জন্য আনন্দপূর্ণ ৷ তবে এর সঙ্গে অনেক চ্যালেঞ্জও জড়িত । সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে একটি হল শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্তন্যপান করানো ৷
মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানো কেবল শিশুর পুষ্টির সর্বোত্তম উৎসই নয়, এটি মা এবং শিশুর মধ্যে একটি বিশেষ মানসিক সংযোগও তৈরি করে । তবে, অনেক সময় নতুন মায়েদের মাতৃদুগ্ধের অভাবের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় । এমন পরিস্থিতিতে সঠিক খাদ্য গ্রহণ মাতৃদুগ্ধের পরিমাণ এবং গুণমান উভয়ই বৃদ্ধিতে সহায়ক । জেনে নিন, এই সুপারফুডগুলি সম্পর্কে যা মাতৃদুগ্ধের পরিমাণকে ঠিক রাখে ৷
![health](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/04-02-2025/23469951_wb_oats.jpg)
ওটস: ওটস একটি পুষ্টিকর এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যা মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধিতে সহায়ক বলে মনে করা হয় । এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি এর মতো পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা একজন নতুন মায়ের শরীরে শক্তি সরবরাহ করে এবং দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করে । ওটসে উপস্থিত বিটা-গ্লুকান উপাদান প্রোল্যাকটিন হরমোনকে সক্রিয় করে ৷ যা মাতৃদুগ্ধ উৎপাদনে সহায়ক । নতুন মায়েরা তাদের খাদ্যতালিকায় ওটস, খিচুড়ি বা স্মুদির আকারে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন ।
![health](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/04-02-2025/23469951_wb_methi.jpg)
মেথি বীজ: মাতৃদুদ্ধ বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে মেথি বীজ শতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে । এই বীজগুলিতে ফাইটোয়েস্ট্রোজেন এবং ডায়োসজেনিনের মতো যৌগ থাকে ৷ যা দুধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । মেথি বীজ জলে ভিজিয়ে, চা তৈরি করে অথবা খাবারে মশলা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে । তবে, এটি সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত কারণ অতিরিক্ত খেলে পেটে গ্যাস বা অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে ।
![health](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/04-02-2025/23469951_wb_oats666666.jpg)
তিল: তিলের বীজে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে ৷ যা একজন নতুন মায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী । এই বীজগুলি মাতৃদুগ্ধের মান উন্নত করতে সাহায্য করে এবং শিশুর বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে । তিলের বীজ লাড্ডু, চিক্কি বা স্যালাডে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে । এছাড়াও, তিলের তেল স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী ।
![health](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/04-02-2025/23469951_wb_greennn.jpg)
সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, মেথি, সরিষার শাক এবং ব্রকলির মতো সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফোলেট এবং ভিটামিন এ থাকে । এই সবজিগুলি নতুন মায়ের শরীরে পুষ্টি সরবরাহ করে এবং বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে । এগুলিতে উপস্থিত ফাইটোয়েস্ট্রোজেন দুধ উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে । সবুজ শাকসবজি স্যুপ, সবজি বা পরোটা আকারে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে ।
![health](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/04-02-2025/23469951_wb_oatsytyyyyy.jpg)
বাদাম এবং ড্রাই ফ্রুট: বাদাম, কাজু, আখরোট এবং খেজুরের মতো ড্রাই ফ্রুট একজন নতুন মায়ের জন্য একটি দুর্দান্ত খাবার হতে পারে । এই বাদামগুলি স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ, যা বুকের দুধের গুণমান উন্নত করে । বাদামে উপস্থিত ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যও উপকারী । এগুলি সরাসরি খাওয়া যেতে পারে অথবা দুধে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে । রাতভর জলে খেজুর ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলেও উপকার পাওয়া যেতে পারে ।
রসুন: রসুন কেবল খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, বরং এটি মাতৃদুগ্ধর পরিমাাণ বাড়াতেও সহায়ক । রসুনে উপস্থিত গ্যালাকট্যাগ নামক উপাদান দুধ উৎপাদনে সহায়তা করে । এছাড়াও, রসুনে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে ৷ যা নতুন মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে । রসুন সবজি, স্যুপ বা ডালে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে ।
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/29193352/
https://pmc.ncbi.nlm.nih.gov/articles/PMC9573514/
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)