পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / opinion

মোদির ব্রুনেই-সিঙ্গাপুর সফরে কী লাভ হল ভারতের ? - MODI VISIT TO SINGAPORE AND BRUNEI

Modi’s Bilateral Visit to Brunei and Singapore: সম্প্রতি ব্রুনেই ও সিঙ্গাপুর সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির জন্য এই দুই দেশে প্রধানমন্ত্রীর সফর কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল ? এই সফর থেকে নয়াদিল্লির কী লাভ হল ? সেটাই ব্যাখ্য়া করা হয়েছে ৷

Modi’s Bilateral Visit to Brunei and Singapore
সিঙ্গাপুরের শিল্পপতিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (এএনআই)

By DR Ravella Bhanu Krishna Kiran

Published : Sep 7, 2024, 8:43 PM IST

গত 3 থেকে 5 সেপ্টেম্বর ব্রুনেই ও সিঙ্গাপুরে দ্বিপাক্ষিক সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ এমন একটা সময়ে এই সফর হয়েছে, যখন বাংলাদেশ এবং মায়ানমারে সংঘাত ও গোলযোগের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে রয়েছে এবং দক্ষিণ চিন সাগরে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে চিনা ও ফিলিপিন্সের জাহাজের মধ্যে ঘন ঘন সংঘর্ষের জেরে ৷ এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির এই সফর ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি বাস্তবায়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল ৷ এই সফরে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ব্রুনেই এবং সিঙ্গাপুরের সঙ্গে প্রতিরক্ষা, শক্তি, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের মতো খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সমর্থনকে প্রসারিত করা হয়েছে ৷ এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ককে উন্নীত করার জন্য একটি কূটনৈতিক উদ্যোগ হিসাবে বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির কৌশলগত গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছে ৷

ব্রুনেই সফরের ফলাফল কী

বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠক করেন ব্রুনেইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়ার সঙ্গে ৷ সেই আলোচনায় প্রতিরক্ষা, মহাকাশ গবেষণা, দীর্ঘমেয়াদী এলএনজি সরবরাহ এবং বাণিজ্য-সহ পারস্পরিক স্বার্থের সমস্ত ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দু’জনেই ৷ ফলে ভারত ও ব্রুনেই বুধবার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বর্ধিত অংশীদারিত্বের দিকে উন্নীত করেছে ৷

সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ (পিআইবি)

উভয় নেতা প্রধানত আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং সামুদ্রিক সুরক্ষার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে ৷ সেই জন্য প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সুবিধার্থে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হন দু’জনে । ভারত ও ব্রুনেই এই অঞ্চলের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা, নৌ-চলাচল ও ওভারফ্লাইটের স্বাধীনতা, বাধাবিহীন আইনি বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । বিশেষ করে সমুদ্রের আইন সংক্রান্ত রাষ্ট্রসংঘের কনভেনশন 1982-র ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।

ব্রুনেইয়ের সঙ্গে 2018 সালের মহাকাশ চুক্তি এই অঞ্চলে চিনের বাধা সত্ত্বেও নয়াদিল্লির জন্য একটি কৃতিত্ব ছিল । এবারের বৈঠকে মহাকাশ চুক্তির আরেকটি ঘোষণা প্রত্যাশিত ছিল ৷ তবে দুই নেতা মহাকাশ সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে আলোচনা করেছেন । সেখানে মহাকাশ গবেষণা ও উপগ্রহ প্রযুক্তি নিয়ে সহযোগিতায় উভয়ের স্বার্থরক্ষার বিষয়টি রয়েছে ৷

সিঙ্গাপুর থেকে নয়াদিল্লিতে ফেরার আগে৷ (পিআইবি)

এর আগে ব্রুনেই-ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সাম্প্রতিক বছরগুলিতে 500 মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি হ্রাস পেয়েছে ৷ কারণ, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে শুরু করেছে৷ ব্রুনেই থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে ৷ এছাড়াও ভারত বর্তমানে কাতার থেকে তার দীর্ঘমেয়াদী এলএনজি সরবরাহের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আমদানি করে । দুই দেশের নেতাদের বৈঠকের সময় ভারত ও ব্রুনেই ভারতে দীর্ঘমেয়াদী এলএনজি সরবরাহের বিষয়ে সম্মত হয়েছে । বাণিজ্য সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক সংযোগ প্রসারিত করতে তাঁরা বিনিয়োগ খাতে সহযোগিতার জন্য নতুন উপায় খোঁজার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন । তাঁরা খাদ্য নিরাপত্তাকে আলাদা করে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং কৃষি ও খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছেন । তাঁদের আলোচনার সময় উভয় নেতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, যোগাযোগ, সংস্কৃতি, অর্থ, স্বাস্থ্য ও ওষুধ, প্রযুক্তি এবং পর্যটনের ক্ষেত্রে শক্তিশালী সম্পর্কের আহ্বান জানিয়েছেন ।

ব্রুনেই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের কেন্দ্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বোর্নিও দ্বীপে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত ৷ এই দ্বীপ ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপিন্স ও ভিয়েতনাম দ্বারা পরিবেষ্টিত ৷ সেই কারণে ব্রুনেই সফর ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির জন্য গুরুত্বপূর্ণ । ব্রুনেইতে ভারতের একটি নৌ স্টেশন ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যপূরণ হবে ৷ কারণ, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনকে মোকাবিলা করার জন্য সেখানকার দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন হবে ।

সিঙ্গাপুর সফর থেকে কী ফল পাওয়া গেল

বিগত 15 বছরে ভারত ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে উর্ধ্বমুখী অবস্থায় রয়েছে ৷ একটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তিকে আপগ্রেড করে এখন নয়াদিল্লি ও সিঙ্গাপুর তাদের 'বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব' বৃদ্ধির কাজ করছে ৷ এই চুক্তি ভারতে সিঙ্গাপুরে রফতানির 81 শতাংশের উপর শুল্ক অপসারণ করেছে ৷ এখন দুই দেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর, স্বাস্থ্য সহযোগিতা ও শিক্ষাগত সহযোগিতা এবং দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে 4টি মূল মউ স্বাক্ষর করেছে । এছাড়াও, উভয় নেতাই উন্নত উৎপাদন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যোগাযোগ, সাইবার-নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, শিক্ষা, ফিনটেক, গ্রিন করিডোর প্রকল্প, জ্ঞানের অংশীদারিত্ব, মেরিটাইম ডোমেন সচেতনতা, নতুন প্রযুক্তি ডোমেন, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং স্থায়িত্ব সংক্রান্ত বিদ্যমান ক্ষেত্রগুলির ব্যাপক মূল্যায়ন করেছেন ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট থারমান শানমুগারত্নমের সঙ্গে বৈঠক করছেন৷ (পিআইবি)

সহযোগিতার একটি নতুন দিকের অংশ হিসাবে দুই দেশ সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্য খাতে নিজেদের মধ্য়ে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে । যেহেতু সিঙ্গাপুর বিশ্বব্যাপী সেমিকন্ডাক্টর সাপ্লাই চেইনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত সমস্ত চিপের 10 শতাংশ এবং সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জামের বৈশ্বিক উৎপাদনের প্রায় 20 শতাংশ সরবরাহ করে ৷ সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেম অংশীদারিত্বের উপর যে মউ সাক্ষরিত হয়েছে,তা ভারতের সেমিকন্ডাক্টর বাজার সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে । যা ভারতে 2026 সালের মধ্যে 63 বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে বলে আশা করা হচ্ছে । এটি ভারতে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকেও সহজ করবে এবং টাটা গ্রুপ ও সিজি পাওয়ার-সহ ফার্মগুলির দ্বারা 15 বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তিনটি সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট নির্মাণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে তাইওয়ানের মতো দেশগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জায়গায় পৌঁছানো যাবে ৷

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত মউয়ের লক্ষ্য স্বাস্থ্য পরিষেবা ও ওষুধ খাতে মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার বিষয়টিকে তুলে ধরা । এটা সিঙ্গাপুরে ভারতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবায় যুক্ত পেশাদারদের সম্বন্ধে প্রচার করবে । ডিজিটাল প্রযুক্তির উপর মউ সাইবার-নিরাপত্তা, 5জি, সুপার-কম্পিউটিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সুবিধার্থে সাহায্য করবে । শিক্ষাগত সহযোগিতা ও দক্ষতা উন্নয়নের মউ কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে উৎসাহিত করবে ।

সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ (পিআইবি)

সিঙ্গাপুর গত 24 বছরে ভারতে প্রায় 160 বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে । আরও বিনিয়োগ বাড়াতে এবং বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে প্রধানমন্ত্রী মোদি ব্ল্যাকস্টোন সিঙ্গাপুর, টেমাসেক হোল্ডিংস, সেম্বকর্প ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ক্যাপিটাল্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, এসটি টেলিমিডিয়া গ্লোবাল ডেটা সেন্টার, সিঙ্গাপুর এয়ারওয়েজের সিইওদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং তাদের ভারতে বিমান, শক্তি এবং দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান ।

অ্য়াক্ট ইস্ট পলিসি অ্য়ান্ড ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল

বাংলাদেশ ও মায়ানমার অ্য়াক্ট ইস্ট পলিসির কেন্দ্রস্থলে রয়েছে ৷ কারণ, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে এই দুই দেশের মধ্যে দিয়ে যুক্ত করার লক্ষ্য়েই এই দুই দেশ অ্য়াক্ট ইস্ট পলিসির কেন্দ্রস্থলে রয়েছে ৷ যেহেতু এই দুই দেশে ঝামেলা ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে ৷ তাই নয়াদিল্লির জন্য ব্রুনেইয়ের মতো আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গে এবং বিশেষ করে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করা প্রয়োজন ৷ এই দুই দেশ পূর্ব-পশ্চিম শিপিং রুটের কৌশলগত অবস্থানের সংযোগস্থলে থাকায়, তা আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ককে গভীর করার জন্য ভারতের প্রচেষ্টার সহজাত অংশীদার ৷ এই শিপিং রুট বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুটগুলির মধ্যে একটি । আসিয়ান-ইন্ডিয়া সামিট, ইস্ট এশিয়া সামিট ও আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের মতো বহুপাক্ষিক ফোরামে সহযোগিতার জন্য সিঙ্গাপুর ভারতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ।

ব্রুনেইয়ের সুলতানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি (পিআইবি)

মালাক্কা প্রণালীর পূর্বে ভারত কোনও উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক বা সামরিক শক্তি নয় । এই অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্ব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদি ব্যাখ্যা করেছেন যে "পূর্বে মালাক্কা প্রণালী এবং দক্ষিণ চিন সাগর ভারতকে প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে এবং ভারতের বেশিরভাগ প্রধান কৌশলগত অংশীদার - আসিয়ান, জাপান, কোরিয়া, চিন ও আমেরিকার সঙ্গে সংযুক্ত করে ।" ব্রুনেই ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা ত্বরান্বিত করা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ক্ষমতার স্থিতিশীল ভারসাম্য রক্ষার জন্য নয়াদিল্লির উদ্যোগকে সমর্থন করবে ৷

সিঙ্গাপুর আসিয়ান অঞ্চলে ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ৷ ব্রুনেইয়ের ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিসংখ্যান সর্বনিম্ন৷ 2009 সালে আসিয়ান ইন্ডিয়া ট্রেড ইন গুডস এগ্রিমেন্ট পর্যালোচনা করে, বিশেষ করে শুল্ক কমানোর ক্ষেত্রে ভারতকে অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে উন্নত করতে হবে । ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অবস্থা’ 2024 সমীক্ষা রিপোর্ট অনুসারে, ভারতের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক-কৌশলগত প্রভাব আসিয়ান-এর অংশীদারদের মধ্যে খুবই কম ছিল । সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অফ সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ (আইএসএএস)-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো অমিতেন্দু পালিত আশা করেছিলেন যে “এই সফরে ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রসপারটি (আইপিইএফ), যা ভারত, সিঙ্গাপুর ও ব্রুনেই-এর একটি অংশ, সেটাকে আরও গুরুত্ব দেওয়া হবে ৷" দেখে মনে হচ্ছে সেরকম কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি ।

উপসংহার

সর্বোপরী, ব্রুনেই ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে মোদির যোগাযোগ স্থাপনের প্রচেষ্টা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতি নয়াদিল্লির ফোকাসের প্রমাণ তুলে ধরছে ৷ চিনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামরিক প্রভাবকে প্রতিহত করার জন্য আঞ্চলিক জোটগুলির সঙ্গে একটি স্থিতিশীল এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক ল্যান্ডস্কেপ গঠন করা, যার বৃহত্তর লক্ষ্য অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির সঙ্গে সাজুয্য় রেখে তৈরি হয় ৷

সিঙ্গাপুরে সেমিকন্ডাক্টর ফেসিলিটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (পিআইবি)

ব্রুনেই এবং সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ভারতের অবিরত যোগাযোগ ভবিষ্যতে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির জন্য এই অঞ্চলের শক্তির জটিল ভারসাম্য পরিচালনার কাজে লাগবে ৷ আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরে তার স্বার্থ সুরক্ষিত করার জন্য যা অপরিহার্য । গ্লোবাল সাউথের একটি বৈশ্বিক শক্তি এবং প্রধান শক্তি হওয়ার পাশাপাশি, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বৃহত্তর উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য আরও জোরালো অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি প্রয়োজন ।

(এই নিবন্ধে প্রকাশিত মতামতগুলি লেখকের । এখানে প্রকাশিত তথ্য এবং মতামত ইটিভি ভারত-এর মতামতকে প্রতিফলিত করে না ৷)

ABOUT THE AUTHOR

...view details