হায়দরাবাদ: দেশে সাধারণ নির্বাচন ও একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে ৷ নির্বাচনে লড়াই করছে এমন রাজনৈতিক দলগুলি ইস্তাহার প্রকাশ করে, নানান প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ৷ বলা হচ্ছে, তাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতা আনলে একাধিক বিনামূল্য পরিষেবা দেওয়া হবে ৷ নানান সামাজিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা চালু করবে ৷
যাই হোক, তারা যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা সরকারের কোষাগার থেকে পূরণ করা হয় এবং এটি সংশ্লিষ্ট সরকারের আর্থিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলবে ৷ অনেক সময়ে সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য অত্যধিক পরিমাণে ঋণ গ্রহণ করে ৷ যার ফলে বিশাল সরকারি ঋণ জমা হয় ৷ যা সরকারি কোষাগার ও করদাতাদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেয় ৷ এই প্রেক্ষাপটে দেশের সরকারি ঋণ পরিস্থিতি যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন ৷ কীভাবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পরিকল্পনা পরিচালনা করা যায়, সে সম্পর্কে চিন্তা করা প্রাসঙ্গিক ৷
ভারত সরকারের অর্থ মন্ত্রকের তরফে সম্প্রতি প্রকাশিত পাবলিক লোন ম্যানেজমেন্টের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যে ভারত সরকারের মোট ঋণের দায় 2023 সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে 157.84 লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে 160.69 লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে ৷ এই প্রতিবেদনটিতে 2023 সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়কালের মধ্যে পাবলিক ঋণ এবং নগদ সংক্রান্ত একটি বিশদ বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে ৷ এটি ছাড়াও, এটি ঋণ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলির উপর বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেছে ওই প্রতিবেদন ৷ এই প্রতিবেদনে উদ্বেগ বাড়ানোর মতো বিষয় হল, 2023-24 অর্থবর্ষের ত্রৈমাসিকে দেশের মোট ঋণগুলির 90 শতাংশ সরকার নিজে নিয়েছে ৷
মূলত সরকারি ঋণ বা পাবলিক ঋণ হল রাজ্যগুলি ও কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা উত্থাপিত বকেয়া বিদেশি এবং অভ্যন্তরীণ ঋণ-সহ অন্যান্য দায় ৷ যার উপর তাদের সুদ ও ধার করা মূল অর্থের পরিমাণ মেটাতে হবে ৷ 'অন্যান্য দায়'-এর মধ্যে রয়েছে ভবিষ্যৎ তহবিল, ক্ষুদ্র সঞ্চয় স্কিম, ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া, ও তেল বিপণন সংস্থাগুলিতে জারি করা বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা ৷
যদিও সরকারের ঋণ নেওয়ার একটা সীমা রয়েছে ৷ 2003 সালে এনডিএ সরকার কর্তৃক লাগু করা ফিসকাল রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট (এফআরবিএম) আইন দ্বারা সেই ঋণের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৷ এই আইন অনুযায়ী, 2024-25 সালের মধ্যে সাধারণ সরকারি ঋণ জিডিপির 60 শতাংশে নামিয়ে আনার কথা ছিল ৷ এমনকি কেন্দ্রের নিজস্ব মোট বকেয়া ঋণগুলি সেই সময়সূচির মধ্যে 40 শতাংশের বেশি হবে না ৷ তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেইসব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যায়নি ৷ এর একটি প্রধান কারণ হল, 2020 সালে কোভিড-19 মহামারি ৷ যা দেশ তথা বিশ্ব অর্থনীতিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল ৷