হায়দরাবাদ, 27 মার্চ:সঠিক আয়কর ব্যবস্থা বেছে নেওয়া যে কোনও করদাতার পক্ষে বিভ্রান্তিকর। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস (CBDT), করদাতাদের কাছে দুটি বিকল্প দিয়েছে ৷ প্রথমটি হল পুরানো কর ব্যবস্থা। আরেকটি হল সরলীকৃত নতুন কর ব্যবস্থা যা 2020-র কেন্দ্রীয় বাজেটে চালু করা হয়েছিল। প্রতিটিরই নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কয়েকটি বিষয়গুলি বুঝে নেওয়া জরুরি। এখানে দুটি কর ব্যবস্থার খুটিনাটি তথ্য দেওয়া হল যাতে আপনি আপনার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী উপযুক্ত কর ব্যবস্থাটি বেছে নিতে পারেন।
- পুরানো আয়কর ব্যবস্থা:পুরানো আয়কর ব্যবস্থায় একটি পরিচিত এবং প্রতিষ্ঠিত কর কাঠামোর সুবিধা রয়েছে। এখানে এর মূল বৈশিষ্টগুলি রইল:
1. উচ্চতর আয়কর সীমা:
এই আয়কর ব্যবস্থায় বৃহত্তর ট্যাক্স স্ল্যাব রয়েছে ৷ যার অর্থ হল, আপনার আয়ের একটি বড় অংশ নিম্ন করের হারের অধীনে পড়ে। এটি উচ্চ-আয়ের উপার্জনকারীদের জন্য উপকারী হতে পারে যারা তাদের সামগ্রিক করের বোঝা কমাতে ট্যাক্স স্ল্যাবগুলি ব্যবহার করতে পারেন।
2. বেশ কিছু ক্ষেত্রে কর ছাড়:
পুরানো আয়কর ব্যবস্থায় একজন করদাতাকে আয়কর আইনের বিভিন্ন ধারায় বেশ কিছু ছাড় দাবি করার অনুমতি দেয়। এই ছাড়গুলি পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিপিএফ), ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম (ইএলএসএস), চিকিৎসা খাতের ব্যয়, বাড়ি ভাড়া ভাতা (এইচআরএ) এবং শিক্ষা ঋণের মতো বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কার্যকর। কৌশলগতভাবে এই কর ছাড়গুলি ব্যবহার করে, একজন আয়করদাতা তার করযোগ্য আয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে পারেন।
যেমন, স্ব-অধিকৃত সম্পত্তির জন্য, কেউ আয়কর আইনের 24(b) ধারার অধীনে প্রতি বছর 2 লক্ষ টাকা পর্যন্ত হোম লোনের জন্য প্রদত্ত সুদের উপর কর ছাড়ের দাবি করতে পারেন। নতুন আয়কর ব্যবস্থায় এই ছাড় পাওয়া যায় না। একইভাবে, আয়কর আইনের 10(13A) ধারার অধীনে বাড়ি ভাড়া ভাতা (এইচআরএ), আইনের 10(5) ধারার অধীনে LTC, আয়কর আইনের 80CCD(1B) ধারার অধীনে পেনশন (ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম) খাতের অবদানে পুরানো আয়কর ব্যবস্থায় কর ছাড় পাওয়া গেলেও নতুন কর ব্যবস্থার 115 BAC ধারার অধীনে কোনও কর ছাড় পাওয়া যায় না।
পুরনো আয়কর ব্যবস্থার ত্রুটি:
পুরনো আয়কর ব্যবস্থায় রেকর্ড বজায় রাখার প্রয়োজন ৷ কারণ, আয়করে ছাড় দাবি করার জন্য উপযুক্ত রসিদ এবং নথি থাকা প্রয়োজন, যা ট্যাক্স ফাইলিং প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তোলে। এই জটিলতা সময়সাপেক্ষ এবং ত্রুটির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
1. যাচাই করার সম্ভাবনা রয়েছে:
পুরানো আয়কর আইনের অধীনে বেশ কয়েকটি কর ছাড়ের সুবিধা পেতে একজন করদাতা আয়কর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যাচাই-বাছাই করার সুযোগ পেতে পারেন৷ তবে সেই দাবির ন্যায্যতা যাচাইয়ের জন্য অতিরিক্ত সময় এবং প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
- নতুন আয়কর ব্যবস্থা:
নতুন আয়কর ব্যবস্থা, যা এখন নির্ধারিত আয়কর ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে, 2020 সালের বাজেটে প্রথম প্রবর্তন করা হয়েছিল। নতুন আয়কর ব্যবস্থায় হ্রাসকৃত হারের সঙ্গে একটি সুবিন্যস্ত কর কাঠামো রয়েছে। এখানে নতুন আয়কর ব্যবস্থার মূল দিকগুলির উল্লেখ রয়েছে:
1. নতুন আয়কর ব্যবস্থার অধীনে কম করের হার:
নতুন আয়কর ব্যবস্থায় পুরানো আয়কর ব্যবস্থার তুলনায় কম ট্যাক্স স্ল্যাব রয়েছে৷ বিশেষ করে এই ব্যবস্থায় 15 লাখ টাকার কম আয়ের শ্রেণির জন্য স্বল্প আয়করে দায়বদ্ধতা রয়েছে।
2. নতুন আয়কর ব্যবস্থার অধীনে সরল ফাইলিং:
নতুন আয়কর ব্যবস্থা পুরানো আয়কর ব্যবস্থার অধীনে উপলব্ধ সর্বাধিক ছাড়গুলিকে সরিয়ে দিয়েছে৷ এর ফলে ট্যাক্স ফাইলিং প্রক্রিয়াটি উল্লেখযোগ্যভাবে সহজ হয়ে গিয়েছে। আয়করদাতাদের ফাইলিং-এর জন্য কম হিসাব এবং সামান্য নথির প্রয়োগ আয়কর রিটার্ন দাখিল করার প্রক্রিয়াকে কম সময়সাপেক্ষ এবং কম ত্রুটি-প্রবণ করে তুলেছে। যদিও, নতুন আয়কর ব্যবস্থাতেও বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা এবং ত্রুটি রয়েছে।
মোট অঙ্কের উপর করছাড়ের অংশ বাদ দিয়ে, একজন করদাতা তার বিনিয়োগ, চিকিৎসা খাতের ব্যয় এবং অন্যান্য ব্যয়ের সঙ্গে যুক্ত আয়কর ছাড়ের সুবিধা হারাতে পারেন। এটি আয়কর বাঁচানোকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে৷ বিশেষত, সেই ব্যক্তিদের জন্য যারা সক্রিয়ভাবে পুরানো আয়কর ব্যবস্থার অধীনে উল্লেখিত খাতে ছাড়গুলি পেয়েছেন।
1. নতুন আয়কর ব্যবস্থার অধীনে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন:
নতুন আয়কর ব্যবস্থায় আয়ের স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন কার্যকর হয়। পুরানো আয়কর ব্যবস্থার অধীনে প্রযোজ্য কর ছাড়ের অভাবের জন্য আংশিকভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে 50,000 টাকার ছাড় দেওয়া হয়। এই ছাড় পাওয়ার জন্য কোনও নথিপত্র বা রসিদ জমা দিতে হয় না৷ তবে এই সুবিধা আয়করদাতাদের জন্য পুরনো আয়কর ব্যবস্থার মতো উপকারী নাও হতে পারে৷