পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / lifestyle

স্বপ্নাদেশে মন্দির তৈরির আদেশ, শ'খানেক বলি দিয়ে পুজো হত মহিষখাগী কালী মা'র

রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের মহিষখাগীর পুজো ৷ বাঙালি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পুজো করা হয় মহিষখাগী কালীমাকে ৷ মহিষখাগীকে দেওয়া হয় পান্তাভাত, খয়রা মাছ এবং রুইমাছের ভোগ।

KALI PUJA 2024
শ'খানেক বলি দিয়ে পুজো হত মহিষখাগীর (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 5 hours ago

শান্তিপুর, 28 অক্টোবর: "আমার কুঁড়ে ঘরে থাকতে ভালো লাগছে না, তাড়াতাড়ি মন্দির তৈরি করে দে", রাজা কৃষ্ণচন্দ্র স্বপ্নাদেশ দেওয়ার পরে এক ফোঁটাও বিলম্ব করেননি তিনি ৷ ততক্ষণাৎ তিনি মন্দির তৈরি করার কাজ শুরু করেন ৷ এরপর থেকেই 15 ফুট উচ্চতার হাড়িকাটে 108টি মহিষ বলি দিয়ে শুরু হয় জাগ্রত দেবী মহিষখাগীর বিশেষ পুজো অর্চনা।

পুজোর ইতিহাস-

শান্তিপুর শহরের প্রায় 350 বছরের প্রাচীন মহিষখাগী কালীমাতার পুজোর ইতিহাস অনন্য। শোনা যায়, এই স্থানে এক তান্ত্রিকের হাতে পুজোর সূচনা হয় ৷ পরবর্তীতে চট্টোপাধ্যায়ের বংশের কাঁধে পুজোর দায়িত্বভার পড়ে ৷ কিন্তু দেবীর মন্দির না-থাকায় স্বপ্নাদেশে মন্দির নির্মাণ করেন স্বয়ং নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র। বর্তমানে স্থানীয় বারোয়ারির তত্ত্বাবধানেই হয়ে আসছে এই জাগ্রত কালী মায়ের পুজো।

স্বপ্নাদেশে মন্দির তৈরির আদেশ কালী মা'র (ইটিভি ভারত)

মন্দিরের বর্তমান অবস্থা-

প্রথমদিকে, মন্দির ছিল একটি কুঁড়েঘরের আদলে। পুজোটি আগে ছিল চট্টোপাধ্য়ায় বংশের দায়িত্বে ৷ পরে তাঁরা বারোয়ারির হাতে দিয়ে যান পুজোর দায়িত্বভার। আগের মন্দির বহু প্রাচীন হয়ে যাওয়ায় এখন মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ হয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায়।

পুজো কীভাবে হয়-

শোনা যায়, বাঙালি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পুজো করা হয় মহিষখাগী কালী মাকে। মাকে প্রথম পাটে তোলার সময় থাকে একাধিক নিয়মরীতি। পাটে তোলার পরে মন্দির প্রাঙ্গন পরিষ্কার করে সেদিন ভোররাতে হয় দধিমঙ্গল। তারপরে অমাবস্যা শুরু হলে বিয়ের রীতি মেনেই পুজো করা হয় দেবীকে। পরের দিন পালন করা হয় বাসি বিয়ের রীতি। বাসি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পূজিতা হন মা। পুজো সম্পন্ন হওয়ার পর কাঁধে করে মা'কে নিয়ে যাওয়া হয় নিরঞ্জনের জন্যে।

মহিষবলি-

পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে জানা যায়, বহু বছর আগে এই পুজোয় উৎসর্গ করা হত মহিষকে, পরবর্তীতে পাঁঠাবলি। তবে অনেক বছর আগে একবার পূজার্চনা করতে দেরি হয়ে যাওয়াতে বলি উৎসর্গের সময় পেরিয়ে যায় ৷ সেদিন থেকেই মহিষখাগী কালী মায়ের পুজোতে কোনওরকম বলি উৎসর্গ করা হয় না, সেই থেকেই বন্ধ হয়ে যায় মহিষখাগী মাতার পুজোতে বলিপ্রথা। তবে নিরঞ্জনের আগে মাতা মহিষখাগীকে দেওয়া হয় পান্তা ভাত, খয়রা মাছ এবং রুইমাছের ভোগ।

ভক্তদের উপভোগ-

যদিও এই পুজোকে কেন্দ্র করে সারা শান্তিপুরবাসী মেতে ওঠেন দীপাবলির আনন্দে। দেবীর নিরঞ্জনের ক্ষেত্রে রয়েছে দেবী ও ভক্তদের মেলবন্ধন ৷ ভক্তদের কাঁধে করেই নিরঞ্জন যাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয় দেবী মহিষখাগীকে ৷ মনের ভক্তি ও মায়ের আগমনীর আহ্বান জানিয়ে চিৎকার করতে থাকে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ ৷ আর রাস্তার দু'পাশে দাঁড়িয়ে দেখেন এলাকাবাসী ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details