ক্ষীরপাই, 30 অক্টোবর:45 ফুটের বড়মা ৷ কালীপুজোর বিশেষ তিথি ও অমাবস্যা ছাড়া অন্য সময় গেলে আপনিই পূজারি ৷ দেবীকে আপন হাতে পুজো করতে পারবেন ৷ আশ্চর্য লাগলেও এটাই সত্যি ৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাইয়ের বড়মার পুজো এবার 24 বছরে পদার্পণ করল ৷ মূর্তি প্রথমে ছোট ছিল তখন দেবী ছোটমা হিসেবে পরিচিত ছিলেন ৷ প্রতিষ্ঠার এক বছর পর কংক্রিটের 45 ফুটের মূর্তি হওয়ায় তখন থেকে বড়মা হিসেবে পরিচিত হন ৷ তবে বর্তমানে মন্দিরে বড়মায়ের পাশাপাশি বিরাজ করেন ছোটমাও ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই পৌরসভার 1 নং ওয়ার্ড চিরকুনডাঙা এলাকায় রয়েছে মন্দির । 23 বছর আগে ক্ষীরপাই এলাকায় শ্মশানের উপর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা শুদ্ধদেব রায় । মূর্তির রূপেও রয়েছে বৈশিষ্ট্য ৷ বড়মায়ের এক হাতে রয়েছে পৃথিবী আর এক হাতে সাদা পায়রা । বাকি দুই হাতে খাঁড়া ও কাটামুণ্ড । রূদ্ররূপের পাশাপাশি ধরিত্রীর রক্ষাকর্তা ও শান্তির বাহক হিসেবে দেবীর একহাতে পৃথিবী ও অপর হাতে পায়রা রয়েছে বলে জানা যায় ।
প্রথমে মাটির চালায় ছোট প্রতিমা তৈরি করে পুজো শুরু হয় । যাকে ছোট মা নামেই ডাকা হত । প্রতিষ্ঠার পরের বছর বন্যায় ছোট মায়ের মাটির চালা ডুবে গিয়ে মূর্তি ভেঙে যায় । যদিও প্রতিমার একটি ভাঙা হাত রয়ে গিয়েছিল ৷ যা এবারের বন্যায় তলিয়ে যায়। বন্যা মিটতেই ছোট মায়ের মূর্তি ও মন্দির সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে ৷
জেলা তথা রাজ্যেও এত বড় মাপের কালী প্রতিমা নেই বলে মত প্রতিষ্ঠাতা ও ভক্তদের । তবে শ্মশানকালী হলেও পুজোয় বলি হয় না ৷ পুজোর পরের দিন মায়ের খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ করা হয় দর্শনার্থীদের । অমাবস্যা তিথি ও কালীপুজোর সময় ছাড়া বড়মায়ের মন্দিরে কোনও পুরোহিত থাকেন না । সেই সময় আগত দর্শনার্থীরাই পুজো করেন ৷ ভক্তদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয় মন্দিরের পুজো অর্চনার কাজ । মন্দির চত্বরের কোথাও নেই প্রণামী বাক্স ৷ নেই দক্ষিণা দেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই ৷
অনেক ভক্তের দাবি, মায়ের কাছে মন থেকে কিছু চাইলে তা পূরণ হবেই । বিভিন্ন রোগের নিরাময়ের জন্যও অনেকে মায়ের স্মরণাপন্ন হন ৷ মন্দিরে লেখা রয়েছে, 'অর্থের বিনিময়ে নয় নিজ হাতে পুজো করুন ৷'