রানাঘাট, 8 অক্টোবর: নদিয়ার রানাঘাট শুধু নয়, এই জেলার প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম ঘোষ বাড়ির দুর্গাপুজো। অভুক্ত বাংলার তৃতীয় কিংবা চতুর্থ বর্ষ ৷ 1520 সালে চৈতন্যচরণ ঘোষ হুগলি জেলার আকনা থেকে ব্রহ্মডাঙায় আসেন ৷ যা পরে রানাঘাট নাম হয় ৷ সেখানেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তারপর শুরু হয় দুর্গাপুজো।
চৈতন্যচরণ ঘোষ নিঃসন্তান ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর ছোট ভাই মকারন্ধ ঘোষের বংশধররা দুর্গাপুজো করে আসছেন ৷ এখন বংশপরম্পরায় এই পুজো হয়ে আসছে ৷
পুজো শুরু রানাঘাটের ঘোষবাড়িতে (ইটিভি ভারত) পুজোর সূচনা:বংশের 29তম পুরুষ রণজিৎ ঘোষ বলেন, "প্রথম দুর্গাপুজো যখন শুরু হয় তখন যে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরি হয়েছিল ৷ সেই মাটি দিয়ে আজও প্রতিমা তৈরি হয়ে আসছে ৷ প্রতিবারই কিছু মাটি তুলে রাখা হয়। তার সঙ্গে নতুন মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরি হয় বছরের পর বছর। 504 বছর ধরে হয়ে আসছে এই পুজো। একটা সময় 51টি পাঁঠা ও মোষবলি হত ৷ 1934 সালে পাঁঠা বলি বন্ধ হয়ে যায় স্বপ্নাদেশে। ঘোষ বংশের রামগোপাল ঘোষ মারা যান। পরিবারের ক্ষয়ক্ষতিও হয় ৷ তারপর থেকে আর বলি হয়নি ৷
রানাঘাটের ঘোষ বাড়ির দুর্গা (ইটিভি ভারত) পুজোর বিশেষত্ব:এই বাড়ির পুজোতে পঞ্চমীতেই বোধন বসে ৷ তারপর অধিবাসের সময় রক্ষা প্রদীপ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রদীপ জ্বালান এই বংশের পুরুষ ৷ তা আর নেভে না। বিসর্জন হয়ে গেলে জ্বালিয়ে রাখা প্রদীপ বাড়ির বিভিন্ন ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই প্রদীপের আলোতে 108 বার দুর্গা নাম লেখা হয় কলাপাতার ওপর ৷ আর তা চূর্ণী নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় ৷
নবমীর দিন থোর ও মোচার ভোগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি কাদা খেলা হয়। দশমীর দিন শুক্ত, মাছ-ভাত খাইয়ে বরণ করা হয়। ওই দিন বাশি ফুলে পুজো হয় মায়ের। এভাবেই রানাঘাটের ঘোষ বাড়ির পুজো আজও তার ঐতিজ্য বহন করে চলেছে।