মেমারি, 31 অক্টোবর: গ্রামে ঢুকলেই দর্শন পাওয়া যাবে বড়মার । কিছুটা এগোলেই পরপর দেখা মিলবে মেজ মা, সেজ মা ও ছোট মায়ের । পূর্ব বর্ধমানের মেমারির আমাদপুর গ্রামে এইভাবেই কালীর চারবোনের পুজো হয়ে থাকে । শুধু তাই নয়, গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে পুজো হয় সিদ্ধেশ্বরী ও বুড়িমা-সহ একাধিক কালীর । সেই কারণেই আমাদপুর কালীগ্রাম নামে খ্যাত ৷
কথিত আছে, এই অঞ্চল দিয়েই তখন প্রবাহিত হত বেহুলা নদী । যদিও এখন তা খালের রূপ নিয়েছে । প্রাচীন রীতি মেনে আজও মায়ের ঘটে গঙ্গাজল ব্যবহার করা হয় না । পরিবর্তে বেহুলা নদীর জল ব্যবহার করা হয় । সেই সময় নাকি এই জলপথে বণিকরা ব্যবসা বাণিজ্য করতেন । সেখানেই ছিল জলদস্যুর ভয় ।
বড় মা (ইটিভি ভারত)
ব্যবসা বাণিজ্য করে ফেরার পথে প্রায় সব কিছু জলদস্যুরা লুটপাট করে নিয়ে পালিয়ে যেত । সর্বস্বান্ত হয়ে যেতেন বণিকরা ৷ এইভাবে চলতে থাকায় বণিকরা বড় মায়ের শরণাপন্ন হন । তারপর থেকে তাঁরা রক্ষাও পান । সেই সময় থেকেই টানা চলে আসছে বড় মায়ের পুজো । তারপর থেকে তাঁর তিন বোন অর্থাৎ, মেজ-সেজ ও ছোট মায়ের পুজো শুরু হয় ৷
মেজ মা (ইটিভি ভারত)
আমাদপুর বড় কালীমাতা পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ তথা পুরোহিত পূর্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য বলেন, "প্রায় 400 বছর আগে জলদস্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতে বণিকরা মা কালীর কাছে মানত করে ব্যবসা বাণিজ্য করতেন । সেই সময় থেকে মায়ের পুজো টানা চলে আসছে । এখানে পুজোতে গঙ্গাজল ব্যবহার করা হয় না । বেহুলা নদীর জলে পুজো করা হয় । 13 রকমের ভাজা, খিচুড়ি, পায়েস, লুচি, শোল মাছ পোড়া, রুই মাছের তেলঝাল, লাউ চিংড়ি, চালতার টক দিয়ে মাকে ভোগ নিবেদন করা হয় । এখানে চাঁদা তুলে পুজো হয় না । মনোবাসনা পূর্ণ হলে ভক্তরা নিজের খুশিমতো পুজো দিয়ে যান ।"
সেজ মা (ইটিভি ভারত)
পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি 1 নং ব্লকে অবস্থিত আমাদপুর গ্রাম । এখানে বারোয়ারী কালীপুজো ছাড়াও প্রায় বেশিরভাগ বাড়িতেই কালীপুজো হয় । সংখ্যাটা 100 ছাড়িয়ে যায় । 2011 সালের জনগণনা অনুযায়ী আমাদপুর গ্রামের জনসংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি । বর্তমানে সেই সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে । বর্ধমান সদর থেকে আমাদপুর গ্রামের দূরত্ব প্রায় 29 কিলোমিটার । কলকাতা থেকে আমাদপুর গ্রামের দূরত্ব 88 কিলোমিটার ।
ছোট মা (ইটিভি ভারত)
আমাদপুর গ্রাম যাওয়ার পথ নির্দেশিকা :
আমাদপুর গ্রামে যাওয়ার জন্য মেমারি কিংবা নিমো স্টেশনে নেমে যাওয়া যেতে পারে ।