আসানসোল, 7 অক্টোবর: সকাল হলেই সাইকেলের ঘণ্টি বাজিয়ে পেপারওয়ালাদের আর ততটা ব্যস্ততা দেখা যায় না পাড়ায়। ব্যালকনিতে বাইরে থেকে ছুড়ে দিয়ে যাওয়া কাগজ তুলে চায়ের চুমুক দিতে দিতে সকাল হত বাঙালিদের। কিন্তু যুগের খেয়ালে পালটে গিয়েছে সব। খবরের কাগজ নয়, এখন বেশিরভাগ সবাই খবর পড়েন মোবাইল ফোনে। ডিজিটাল মিডিয়ার যুগ এসে যাওয়াই অস্তিত্ব হারাচ্ছে সংবাদপত্র। আর সেটাকেই পুজোর থিমে তুলে এনেছে চিত্তরঞ্জনের 6-এর পল্লীর সর্বজনীন দুর্গাপুজো ৷
তাদের এবছরের থিম অস্তিত্ব রক্ষায় সংবাদপত্র। এবারে 73 বছরে পদার্পণ করল চিত্তরঞ্জনের 6-এর পল্লীর দুর্গাপুজো। রেলশহর চিত্তরঞ্জনে যে কয়েকটি পুজো বেশ সাড়া ফেলে তার মধ্যে 6-এর পল্লীর পুজো অন্যতম বিখ্যাত।
চিত্তরঞ্জনের 6-এর পল্লীর পুজো (ইটিভি ভারত) প্রতিবারই থিমের চমক থাকে এই পুজোয়। এই বছরও তার অন্যথা হয়নি। ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে সংবাদপত্র। আর সেখান থেকেই মানুষজনকে সংবাদপত্রের প্রতি উৎসাহ বাড়াতে এই থিমের আয়োজন বলে জানিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
চিত্তরঞ্জনের 6-এর পল্লীর মা দুর্গা (নিজস্ব ছবি) মণ্ডপে যা কিছু তৈরি হচ্ছে সবই সংবাদপত্র দিয়ে। খবরের কাগজ দিয়ে বানানোর ঠোঙা, নৌকা, এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মডেল প্রস্তুত করা হয়েছে ৷ চিত্তরঞ্জনের 6-এর পল্লীর পুজোর সদস্য বাপ্পা কুণ্ডু বলেন, "শুধু যে খবরের কাগজ দিয়েই মডেল বানানো হচ্ছে তা কিন্তু নয়। পুজো মণ্ডপে থাকবে বর্তমান সময়ে যে কাগজগুলি চলছে, তার বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি সমস্ত কাগজের সংস্করণ। মণ্ডপে প্রতিমা দেখতে এসে দর্শনার্থীরা সংবাদপত্রের প্রতি উৎসাহিত হোক এমনটাই চাইছি আমরা।"
সংবাদপত্রের প্রতি উৎসাহ বাড়াতে এই থিমের আয়োজন বলে জানিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা (নিজস্ব ছবি) প্রতিমা বানিয়েছেন স্থানীয় শিল্পী পিনাকী পাল। তিনি বলেন, "এর আগে আমার বাবা এখানকার প্রতিমা তৈরি করতেন। কিন্তু বাবা অসুস্থ হওয়ায় আমাকে সেই দায়িত্ব নিতে হয়েছে। ক্লাব কর্তাদের সহযোগিতায় সুন্দর হয়ে উঠছে প্রতিমা। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেও ভক্তিভাব যাতে মানুষের ফুটে ওঠে তেমনি প্রতিমাই করা হচ্ছে।" দুর্গাপুজোয় চারদিনই রয়েছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রয়েছে কলকাতার শিল্পীদের সঙ্গীতানুষ্ঠান ৷