কলকাতা, 27 জানুয়ারি: প্রিয়জনকে হারানোর পর অপরাধীর ফাঁসির দাবি প্রায় সবক্ষেত্রেই শোনা যায় পরিজনদের গলায় ৷ নারী নির্যাতন বা ধর্ষণের মতো ঘটনার ক্ষেত্রে এই দাবি সবচেয়ে বেশি ওঠে ৷ কিন্তু আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ-খুন করা হয়, তাঁর মা-বাবা ঘটনায় দোষী সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চান না ৷
সোমবার এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে রাজ্যজুড়ে ৷ বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে যে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা-বাবা ৷ এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদেরও ৷ সোমবার সেই প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন নিহত চিকিৎসকের বাবা৷ জানিয়েছেন, কেন তিনি এই কথা বলেছেন ?
উল্লেখ্য, গত 18 জানুয়ারি শিয়ালদা আদালতে আরজি কর মামলার রায়দান হয় ৷ আদালত মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কেই দোষী সাব্যস্ত করে ৷ 20 জানুয়ারি মামলার সাজা ঘোষণা হয় ৷ আদালত আমরণ কারাবাসের সাজা দেন সঞ্জয়কে ৷ যদিও পরদিনই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার ৷ তারা সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির আবেদন করে ৷ সিবিআই-ও পৃথকভাবে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে সঞ্জয়ের ফাঁসির আবেদন করেছে ৷
সোমবার হাইকোর্টে এই নিয়ে শুনানি হয় ৷ সেখানে নির্যাতিতার পরিবারের তরফে সঞ্জয়ের ফাঁসির বিরোধিতা করা হয় ৷ কলকাতা হাইকোর্টে একথা জানান পরিবারের আইনজীবী শামিম আহমেদ ৷ আদালতে অবশ্য নির্যাতিতার বাবা এই নিয়ে মুখ খুলতে চাননি ৷
পরে তিনি বলেন, ‘‘তদন্তের সমস্ত মানিক আমাদের হারিয়ে গিয়েছে ৷ একটা মানিক আছে, আমরা ওটাকে আর হারাতে চাইছি না ৷ তদন্তের সাক্ষ্য যে একটা মানিক আছে, ওটাকে আমরা হারাতে চাইছি না ৷ ওটা আমরা চাইছি পকেটে করে রাখতে ৷’’
আরজি করের ঘটনায় শুধু সঞ্জয় নয়, আরও অনেকে জড়িত আছে বলে বারবার বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়েছে ৷ একই কথা শোনা গিয়েছে নির্যাতিতার মা-বাবার মুখে ৷ সঞ্জয় জীবিত থাকলে যে নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীরা ধরা পড়বে বলেই যে তারা মনে করছেন, তা এদিন নির্যাতিতার বাবার কথায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷
যদিও আদালত তাঁদের আইনজীবী শামিম আহমেদের কথাতেও সেটা স্পষ্ট হয়েছিল ৷ তিনি জানিয়েছিলেন, আসল অপরাধীরা এখনও ধরা পড়েনি ৷ তাদের ধরে কঠোর শাস্তি দিতে হবে ৷ সেই কারণেই ফাঁসি চাইছেন না তাঁরা ৷ আদালতে দাঁড়িয়ে একই বক্তব্য রেখেছিলেন আরজি করে নির্যাতিতার বাবা ৷
