শান্তিপুর, 28 অক্টোবর: চক্ষুদানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় পুজো ৷ 400 বছর ধরে চিরাচরিত প্রথা মেনে পূজিত হন দেবী আগমেশ্বরী কালীমাতা ৷ ভক্তদের দেওয়া দানে সোনার অলংকারে মোড়া মাতৃমূর্তি ৷
পুজোর ইতিহাস-
আজ থেকে প্রায় আনুমানিক 400 বছর আগে আগমেশ্বরী কালীপুজো শান্তিপুরে শুরু করেছিলেন সার্বভৌম আগমবাগীশ। এই সার্বভৌম আগমবাগীশ ছিলেন পণ্ডিত কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের প্রপৌত্র। তিনি ছিলেন তন্ত্রসাধক। তাঁরা আগমশাস্ত্রজ্ঞ ছিলেন বা সেই শাস্ত্রে পাণ্ডিত্য লাভ করেছিলেন বলে তাদের আগমবাগীশ উপাধি দান করা হয়। সেইসময় শাক্ত ও বৈষ্ণবদের মধ্যে বিরোধ চলছিল বলেই শোনা যায় ৷ তাই শান্তিপুরের অদ্বৈতাচার্য্যের পৌত্র মথুরেশ গোস্বামী শক্তি আর ভক্তির মিলনের আশায় তাঁর কন্যার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন সার্বভৌম আগমবাগীশের।
এর ফল তো আশানুরূপ হয়নি, বরং জটিলতা আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় মথুরেশ গোস্বামী তাঁর কন্যা-সহ জামাইকে নিয়ে চলে আসেন শান্তিপুরে। মথুরেশ গোস্বামী শান্তিপুরে তাঁর বসতবাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি পঞ্চমুণ্ডির আসন স্থাপন করে দেন তাঁর জামাইয়ের তন্ত্রচর্চার জন্য। সেখানেই সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন সার্বভৌম আগমবাগীশ। মায়ের নির্দেশে তিনি গঙ্গা থেকে মাটি নিয়ে এসে মূর্তি নির্মাণ করে পুজো করেন তারপরই মূর্তি বিসর্জন দিয়ে দেন ৷
এই প্রাচীন প্রথা আজও হয়ে আসছে মা আগমেশ্বরীর পুজোয়। বর্তমানে এই পঞ্চমুণ্ডির আসন সংলগ্ন স্থানটি আগমেশ্বরীতলা নামেই পরিচিত। এভাবে ঐতিহ্যের সঙ্গে ও আধ্যাত্মিকতার এক উজ্জ্বলতম প্রকাশ দেখা যায় শান্তিপুরের আগমেশ্বরীর পুজোয়। এ তো গেল মাতা আগমেশ্বরীর ইতিহাসের কথা ৷ কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে বেশকিছু সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়।