কলকাতা, 31 জুলাই: কলকাতা, 31 জুলাই: সোম এবং মঙ্গলবার পরপর দু'দিন শুটিং বন্ধের পর আজ বুধবার থেকে ফের চেনা ছন্দে ফিরল টলিপাড়া । শুটিং শুরু হয়েছে ফ্লোরে । ফের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই সমস্যা মিটল টলিপাড়াতে । ডিরেক্টরস গিল্ড এবং ফেডারেশনের মধ্যে যে চাপানউতোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার মীমাংসা প্রথমে তাদেরকেই করে নিতে বললেও, পরে তাঁকেই ময়দানে নামতে হয় । পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি কোনও গিল্ড । আর এখানেই এক প্রকার আপত্তি ছোট পর্দার ব্যস্ত অভিনেতাদের । তাঁদের প্রশ্ন, কেন বারবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেই সব ব্যাপারে হস্থক্ষেপ করতে হবে ?
অভিনেতা তথা আর্টিস্ট ফোরামের সদস্য দিগন্ত বাগচী এ ব্যাপারে বলেন, "শুটিং বন্ধ হোক এটাই কোনওদিন চাই না আমরা । তাই শুরু হলেও আনন্দ উচ্ছ্বাসের প্রশ্ন আসে না । প্রশ্ন একটাই, বন্ধ হল কেন ? খুব কম মানুষ নিয়ে সিরিয়ালে কাজ হয়, খুব কম টাকা রোজগার হয় এখান থেকে ৷ দিনের দিন রোজগার আমাদের । দু'দিন চলে যাওয়া মানে অনেকটা ক্ষতি । সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ হওয়ার কারণ বুঝলাম না ।"
তিনি আরও বলেন, "আগে সিরিয়াল মোটামুটি এক বছর তো চলতই । ফলে একটা নিশ্চিন্তির জায়গা ছিল । এখন বেশিদিন চলেও না । কাজ চলে গেলে আবার কবে কাজ আসবে, সেই নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায় । ফলে কাজ বন্ধ হওয়া অভিপ্রেত নয় ।"
আর্টিস্ট ফোরামের আরেক সদস্য অভিনেতা সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, "কেন যে কোনও সমস্যায় বারবার যেতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ? কেন আমরা নিজেরা নিজেদের সমস্যার সমাধান করতে পারছি না ? আমরা বোধহয় এখনও সাবালক হইনি । তাই আমাদের সমস্যা মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও এসে মেটাতে হয় । ইন্ডাস্ট্রির পরিকাঠামো ঠিক হওয়া দরকার । সেটা কীভাবে চালানো হবে সেই বিষয়টা পরিষ্কার হওয়া দরকার । ক্রিয়েটিভিটির নামে যা খুশি করা যায় না সেটা বুঝতে হবে । কিছু পরিকাঠামো আইনগতভাবে ঠিক করা দরকার বলে আমি মনে করি । যাঁরা প্রচুর টাকা রোজগার করেন শুধু তাঁদের নিয়ে আর্টিস্ট ফোরাম নয়।"
আর্টিস্ট ফোরামের সদস্য অভিনেতা ভরত কলের কথায়, "আমাদের এই ক'দিনের ক্ষতিপূরণ কে দেবে ? আর্টিস্ট ফোরামের সদস্য যদি চার হাজার হন, তা হলে নব্বই শতাংশ টেলিভিশনে কাজ করে খান । তাঁদের কথা কেউ জানতে চান না । অথচ তাঁরা দিন আনেন দিন খান । শুটিং বন্ধ করার আগে কেউ তাঁদের কথা জানতে চাইল না একবারও যে, তাঁরা কী চান । তাঁদের কতটা অসুবিধা হতে পারে শুটিং বন্ধ হলে ? বেশিরভাগ শিল্পীর সংসার চলে এই টাকায়, অনেককে অনেক রকমের ইএমআই দিতে হয় । এ ছাড়াও অনেককে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয় এই রোজগার থেকে । তা হলে এই সবদিক না ভেবেই হঠাৎ করে শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হল কেন ? এটা তো ফেডারেশন করেনি ।"