কলকাতা, 8 অগস্ট: প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল 80 বছর। বৃহস্পতিবার সকালে এই খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। প্রবীণ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বাম নেতার প্রয়ানে শোকপ্রকাশ করেছেন টলিউডের একাধিক তারকারা ৷
তারকাদের শেষ শ্রদ্ধার্ঘ প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রতি (ইটিভি ভারত) অভিনেতা তথা বাম নেতা দেবদূত ঘোষ বলেন, "স্বচ্ছতা, সততা এবং আত্মত্যাগের যে রাজনীতি তার মশাল বাহক ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আদর্শগত অবস্থান ছাড়া রাজনীতি করা যায় না। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। ওঁকে দেখেই রাজনীতিতে আসা। যতদিন বাঁচব ওঁর প্রভাব আমার উপরে থাকবে। আজকাল যাঁরা রাজনীতিতে আসছেন তাঁরা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো আত্মত্যাগী রাজনীতি শিখলে দেশের মানুষের মঙ্গল।"
অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেন, "স্তম্ভ চলে গেলেন। আমার বিয়েতে জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দুজনেই এসেছিলেন। সত্যি কথা বলতে, আমাদের সমাজকে উর্বর করেছেন জ্যোতি বাবু এবং বুদ্ধদেব বাবু দুজনেই। " তিনি আরও বলেন, "পলিটিক্যাল স্টলওয়ার্ড ছিলেন বুদ্ধবাবু। ওঁর দান অফুরান। আদর্শ থেকে সরেননি কখনও। ওঁকে সেলাম জানাই। ওঁর পরিবারের জন্য রইল সমবেদনা।"
অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় ইটিভি ভারতকে বলেন, "বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চলে যাওয়া আমার নিজস্ব ক্ষতি। অনেকদিন ধরেই খবর পাচ্ছিলাম অসুস্থ। আজ বেশি কাল কম। তবু তো ছিলেন। আজ টের পাচ্ছি আপন কেউ চলে গেলেন।" ঊষসী চক্রবর্তী বলেন, "আমার তো মা ছিল না। বিমান কাকু, বুদ্ধদেব মামার কাছ থেকে আদর প্রশ্রয় দুইই পেয়েছি। আজ যাঁকে হারালাম তাতে আমার নিজস্ব ক্ষতি হয়ে গেল অনেকটা। যে স্বচ্ছ রাজনীতি উনি করে গিয়েছেন সেটা যদি ফিরিয়ে দিতে পারি তা হলে ওঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।"
কিছুদিন আগেই অভিনেত্রী-পরিচালক মানসী সিনহা রাজনীতির স্টলওয়ার্ট বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে এক বই লিখেছেন ৷ সোশাল মিডিয়ায় সই বইয়ের ছবিও সামনে আনেন ৷ তিনি লিখেন, "জীবনে যাঁর সঙ্গে একটা কথাও হয়নি কোনদিন, অথচ গোটা জীবনটাই যাঁর প্রভাবে প্রভাবিত, এই দু'মলাটের মধ্যে তাঁর সঙ্গেই বলা অনেকগুলো কথা..মনে মনে। ঘরে বাইরে" পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত হতে চলেছে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রিয় মানুষ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে আমার প্রথম বই 'নক্ষত্র যাপন ' ৷" সেই বুদ্ধদেববাবুর প্রয়াণে মানসী সিনহা গভীরভাবে শোকাহত।
উল্লেখ্য, 2000 থেকে 2011 সাল- টানা 11 বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সম্প্রতি মিঠুন চক্রবর্তী ভোটের আবহে তাঁকে নিয়ে বলেন, "সাদা ধুতিতে একটা কাদা ছেটাতে পারেনি কেউ কোনওদিন। এমনই সৎ, নির্ভীক রাজনীতিবিদ ছিলেন তিনি।"