কলকাতা, 3 মার্চ: 'ন্যাশনাল ফিল্ম আর্কাইভ অফ ইন্ডিয়া'র উদ্যোগে উদ্ধার হল ত্রিশ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া প্রায় 450টি ছবি। এর মধ্যে থেকেই বেশ কিছু ছবি বেছে নিয়ে দেখানো হবে 'এসআরএফটিআই' আয়োজিত 'আরকিউরিয়া' নামের একটি আন্তর্জাতিক মানের ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। বারীন সাহা পরিচালিত বাংলা ছবি 'তের নদীর পারে' তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি। সূত্রের খবর, অরুন্ধতী দেবী পরিচালিত 'ছুটি', তপন সিনহার 'আদমি অউর অওরত' রয়েছে তালিকায়।
"আরকিউরিয়া এ বছর চলবে 16-22 মার্চ। 'আর্কাইভিং কিউরেশন' এবং 'রেস্টোরেশন'- এই তিন শব্দ মিলিয়ে 'আরকিউরিয়া'। এই ইভেন্টের অনেকগুলো পার্ট রয়েছে। তারই একটা অংশ হল 'ফেস্টিভ্যাল অফ রেস্টোরড ফিল্ম'। যে সমস্ত ছবি এখনও অবধি পুনের 'ন্যাশনাল ফিল্ম আর্কাইভ অফ ইন্ডিয়া'র দ্বারা রে-স্টোরড করা হয়েছে তার মধ্যে থেকে বেছে নিয়েই দেখানো হবে প্রায় হারিয়ে যেতে বসা কিছু ছবি। জানা গিয়েছে, বারীন সাহার 'তের নদীর পারে' ছবিটির নির্মাণ শেষ হয়েছে 1961 সালে ৷ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে 1969 সালে। নব্বই দশকের গোড়ায় শেষ বার এই ছবি দেখানো হয়েছিল। তারপর থেকে তিন দশক দেখানো হয়নি।
একটি চলমান সার্কাস কীভাবে বাণিজ্যিক চাপের শিকার হয় তার গল্প বর্ণনা করা হয়েছে ছবিতে। একজন ক্লাউন (জ্ঞানেশ মুখার্জি) সার্কাসে নাচের মেয়েদের নিয়োগের প্রবণতাকে প্রতিহত করে এবং একজন নতুন নর্তকীর (প্রিয়ম হাজারিকা) আগমনে সে বিরক্ত হয়। এরপর সে যখন দুর্ঘটনার শিকার হয় তখন তাকে সেবা করে সেই নর্তকীই। তবে সেই ক্লাউন পাগল হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, বারীন সাহা প্রথম বাঙালি যিনি বিদেশে গিয়ে ফিল্ম নিয়ে পড়াশুনা করেন। পঞ্চাশের দশকে ফ্রান্সে গিয়ে তিনি ডিরেকশন, এডিটিং পড়ে আসেন। রোমে সিনেমাটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশুনা করেন। নিজেদের টাকাতেই উনি এবং ওনার দাদা বানান এই 'তের নদীর পারে'। ছবিটি 78 মিনিটের। তাই সেই সময়ে প্রেক্ষাগৃহে ছবি মুক্তির ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল ৷ জানা যায়, একটাই ফিচার ফিল্ম বানিয়েছিলেন বারীন সাহা। তাঁর বানানো একটি শর্ট ফিল্ম 'শনিবার'। যেখানে বাদল সরকার অভিনয় করেন। বারীন সাহা এবং বাদল সরকার বন্ধু ছিলেন। দু'টি তথ্যচিত্র বানান বারীন সাহা। এরপর একটা সময়ে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যান এবং সেখানে গ্রামোন্নয়নের কাজ করেন।