কলকাতা, 30 জানুয়ারি: দীর্ঘ এক বছর পর টেলিভিশনের কাজে ফিরলেন অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তী । লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নতুন ধারাবাহিক 'চিরসখা' তে দেখা যাচ্ছে সায়ককে । সেই নিয়ে নানা কথা ইটিভি ভারতের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তিনি ৷ জানালেন, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের কথাও ৷
সায়ক বেশ অনেক বছর ধরেই দাপিয়ে অভিনয় করছেন বাংলা ধারাবাহিকে । এমনকি শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং নন্দিতা রায় পরিচালিত 'বেলাশুরু'তে অল্প সময়ের জন্য হলেও দেখা গিয়েছে তাঁকে, অরুণিমা হালদারের প্রেমিকের চরিত্রে । আর 'বয়েই গেল', 'সাধক বামাক্ষ্যাপা', 'গোয়েন্দা গিন্নি', 'মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য', 'নাগলীলা' 'করুণাময়ী রানি রাসমণি', 'আমি সিরাজের বেগম', 'মহাপীঠ তারাপীঠ', 'কাদম্বিনী', 'রামপ্রসাদ'-সহ একাধিক ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন সায়ক । এর মাঝেই ছন্দপতন । টানা এক বছর কোনও ধারাবাহিকে দেখা মেলেনি তাঁর । এবার 'চিরসখা'-তে ফিডেলের চরিত্রে ধরা দিয়েছেন তিনি ।
সায়কের ভ্লগে একবার দেখা গিয়েছিল লীনা গঙ্গোপাধ্যায়কেও । সেখানেই লীনাদি'কে দিয়ে কথা নিয়ে নিয়েছিলেন যে, তাঁকে কাজ দেবেন লীনাদি । হল সেটাই । লীনা গঙ্গোপাধ্যায় কথা রাখলেন । ভ্লগেই সায়ক লেখিকাকে জানিয়েছিলেন যে, গত 10 বছর ধরে নাকি তিনি তাঁকে মেসেজ পাঠান কাজের জন্য । তা শুনে, ভ্লগেই লীনা গঙ্গোপাধ্যায় সায়ককে বলেন, "কত লোকে মেসেজ করে । কী করে বুঝব তুমি লিখছো ?..." কথা দেন অভিনেতাকে নিয়ে তিনি ভাববেন ।
লীনা গঙ্গোপাধ্যায় মুম্বইতে থাকাকালীন নিজেই সায়ককে ফোন করে কাজের কথা জানিয়েছিলেন । বলেছিলেন, সায়ককে অডিশন দিতে হবে । সায়ক তাতেই রাজি হন । উল্লেখ্য, সায়কের পঁচিশটা ধারাবাহিকের অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই । তিন রাউন্ড অডিশন দেওয়ার পর লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন যে, সায়ক থাকছেন তাঁর চিরসখাতে, একজন ভ্লগারের চরিত্রেই । বেশ আকর্ষণীয় একটি চরিত্র ‘ফিডেল’ হিসেবে অভিনেতাকে বেছে নিয়েছেন তিনি ।
এই টানা এক বছর ভ্লগিংই করেছেন সায়ক । ব্যক্তিগত পরিসরে করেছেন ভ্লগিং । করেছেন শুটিং ফ্লোর এবং মেক আপ রুমেও । তাই কি কাজ মেলেনি এতদিন ? এই প্রসঙ্গে অভিনেতা বেশ কিছু মাস আগে নিজেই জানিয়েছিলেন যে, তিনি ভ্লগ করেন বলেই হয়তো কাজ পাচ্ছেন না ।
ইটিভি ভারতের তরফে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় ভ্লগিং তিনি শখে করলেও অভিনয় তাঁর আসল কাজ । এই একটা বছরে কাজ না থাকায় কখনও হতাশা আসেনি তাঁর ?
সায়ক বলেন, "হ্যাঁ ডিপ্রেশন তো আসেই । অনেক সময়েই ভাবি আমার জীবনে কেন একটা প্রেম নেই, ভেবেছি কেন কাজ নেই । এমনও ভেবেছি মরে যাব । আবার পরক্ষণেই ভেবেছি কেন মরব ? এত সুন্দর একটা জীবন পেয়েছি । আমার কাছে মা বাবা রয়েছে । একটা ফ্ল্যাট নিজের টাকায় কিনে লোনও শোধ করে দিয়েছি ৷ কেন মরব ? আমাকে লড়তে হবে । আজ কাজ হচ্ছে না মানে কাল হবে না তা নয় । ভাগ্য একদিন সঙ্গ দেবেই দেবে । আমি যদি নিজেকে সেদিন শেষ করে দিতাম এই সুযোগটা আসত ?..."
ধারাবাহিকে সায়ক ‘অধরা মাধুরী’ বাড়ির সদস্য নয় । সে পাড়ার ছেলে । তবে ফিডেল 'অধরা মাধুরী'তে খুশির হাওয়া নিয়ে আসে । বাড়ির থমথমে পরিবেশ নিমেষে চনমনে করে তোলে সে । কান্নাকাটি, ঝগড়াঝাঁটি সব ধুয়ে মুছে দিতে পারে ফিডেল । সব মিলিয়ে 'চিরসখা'য় সায়ক একেবারে অন্যরকম । এমনভাবে তাঁকে কেউ কখনও দেখেনি আগে । বাস্তবে সে যেমন অনেকটাই এখানে সে তেমন ।