হায়দরাবাদ, 14 সেপ্টেম্বর: স্বনামধন্য নাট্যশিল্পী গৌতম হালদার ৷ নিজের মতো করে জনপ্রিয় চ্যানেলের রিয়েলিটি শোয়ে কবি জয় গোস্বামীর মালতিবালা বালিকা বিদ্যালয় কবিতা অর্থাৎ বেণীমাধব পাঠ করেছিলেন ৷ সেই ভিডিয়ো সামনে আসতেই শিল্পীকে উদ্দেশ্য করে উঠে আসে নানা কদার্য ভাষা ৷ নেটপাড়ায় ছাড়িয়ে যায় আক্রমণের সীমা ৷ এই অবস্থায় গৌতম হালদারের পাশে দাঁড়ালেন সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র ৷
শনিবার তিনি সামাজিক মাধ্যমের পাতায় লেখেন, "গৌতম হালদার। আমি তিন তিন বার তাঁর মেঘনাদ বধ কাব্য মঞ্চে দেখেছি। হ্যাঁ, গৌতম হালদারের মেঘনাদ বধ কাব্য। মাইকেলের নয়। একজন সৃজনশীল নাট্যব্যক্তিত্ব , মননশীল শিল্পী গৌতম হালদার তাঁর মতো করে উপস্থাপন করেছেন, কবি জয় গোস্বামীর মালতিবালা বালিকা বিদ্যালয় কবিতাটি, বিশেষ একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে।..."
এরপর শিল্পী লেখেন, "অনেক শ্রোতা-দর্শকের সেই উপস্থাপনা মনোজ্ঞ মনে হয়নি। সব কাজ সকলের ভালো নাই-ই লাগতে পারে। শিল্প- সাহিত্য, জীবনবোধ, সবটাই, যেটা আমার ভালো, সেটা মন্দ তোমার কাছে। এই নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। 1996 সালে আমার গাওয়া বেণীমাধবও ঠিক লাগেনি, এমন মানুষও অনেক আছেন। কবি জয় গোস্বামীর মালতিবালা, তখন সমীর চট্টোপাধ্যায়ের সুরে আর আমার গলায় বেণীমাধব হয়ে উঠেছিল। স্বয়ং কবি যেদিন প্রথম শুনেছিলেন গানটি, তাঁর প্রশ্ন ছিল , কেন একেবারে শেষে “বেণীমাধব, তোমার বাড়ি যাবো” ফিরিয়ে আনা হল ?..."
এরপরেই নেটিজেনদের একহাত নিয়ে লোপামুদ্রা আরও লেখেন, "অনেক কবিতার গানেরই সমালোচনার সামনে পড়েছিলাম আমরা। কিন্তু কোথাও কোনও অপমানিত হতে হয়নি। শালীনতহানি হয়নি আমাদের। সেই সময়ে তো সোশাল মিডিয়া ছিল না, আর থাকলে কি ঘটতো জানি না। আমার আজকের এই লেখার কারণ হল, শিল্পী, সাহিত্যিক, গায়ক, অভিনেতা, যাঁরা দীর্ঘদিন একটা সাধনার মধ্যে দিয়ে তাঁর নিজের পায়ের তলার জমি তৈরি করেছেন, সম্মান ও শ্রদ্ধার আসন তৈরি করেছেন, তাঁদের তো বটেই, এমনকী, আমরা কোনও মানুষকে প্রকাশ্যে এইভাবে অপমান করতে পারি না। অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলতে পারি না। আমরা আলোচনা করতে পারি, তাঁর উপস্থাপনা নিয়ে, কিন্তু , এরকম উচ্চমানের শিল্পীকে এভাবে কটূক্তি করতে পারি না।"
এরপর শিল্পী জানান, শ্রোতা , দর্শক, পাঠক তাঁদের কাছে ঈশ্বর। এ কথা শিরোধার্য। তবুও গৌতম হালদারকে যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি ৷ এরপরেই লোপামুদ্রা প্রশ্ন তোলেন, "শালীনতা , সম্মান, ভাষার নিয়ন্ত্রণ, সমীহ, শ্রদ্ধা ইত্যাদি শব্দ কি আমরা পুরোপুরি ভুলে গেলাম। আমরা কি অসভ্য হয়ে উঠছি ক্রমশ ?কষ্ট হচ্ছে মেনে নিতে।"