পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / entertainment

তালের জগৎ তার সোম হারাল- জাকির হুসেনের স্মৃতিতে ভাসলেন পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ - BICKRAM GHOSH ON ZAJIR HUSSAIN

তবলা বাদক জাকির হুসেনের প্রয়াণে বাক্যহারা বিশিষ্ট তবলা শিল্পী, বাদ্যযন্ত্র শিল্পী পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ। হুসেনের সঙ্গে কাটানো নানা মুহূর্ত শেয়ার করলেন বিক্রম ৷

Etv Bharat
জাকির হুসেনের স্মৃতিতে ভাসলেন পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Entertainment Team

Published : Dec 16, 2024, 11:25 AM IST

কলকাতা, 16 ডিসেম্বর: সঙ্গীত দুনিয়ায় নক্ষত্র পতন ৷ প্রয়াত বিশিষ্ট তবলা বাদক জাকির হোসেন। 'তালের জাদুকর' বললেও কম বলা হয় তাঁকে। 'কিংবদন্তি' শব্দটাও যেন ক্লিশে তাঁর জন্য। তাঁর তুলনা তিনি স্বয়ং। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছেন আরও একজন গুণী মানুষ তথা বিশিষ্ট তবলা শিল্পী, বাদ্যযন্ত্র শিল্পী পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ। ওস্তাদ জাকির হোসেনকে নিজের দাদার মতো ভালোবাসতেন তিনি। শিল্পীর প্রয়াণে বাক্যহারা বিক্রম ৷

ইটিভি ভারতকে বিক্রম বলেন, "তালের জগৎ তার সোম হারাল। সোম হল যে কোনও সাইকেলের প্রথম বিট। এবং যে কোনও তালেরই কেন্দ্রে আছে সোম। যাকে ঘিরে তালের ব্রহ্মাণ্ডটা ঘোরে। জাকির জি'ও সেই 'সোম'। যাঁকে ঘিরে তালের ব্রহ্মাণ্ডটা ঘুরত। আমাদের সকলের জীবনেই ওস্তাদ জাকির হোসেন একটা কেন্দ্রের মতো। ওঁর চলে যাওয়াটা অকল্পনীয়। 73 বছর বয়সটা ঠিক চলে যাওয়ার বয়স নয়। কত কাজ বাকি ছিল ওঁর। হুট করে ওঁর মতো একজন মানুষের চলে যাওয়াটা ঠিক হল না। আমার কাছে বড় দাদার থেকে কিছু কম ছিলেন না।"

বিক্রম ঘোষ আরও বলেন, " আমরা ছোট বেলায় একই বাড়িতে থাকতাম। আমেরিকায় একটা বাড়িতে বাবা, মা আর আমি উপরতলায় থাকতাম। আর নীচে জাকির জি আর পণ্ডিত চিত্রেশ দাস কত্থক মায়েস্ত্রো থাকতেন। জাকির জির তখন 18- 19 বছর বয়স। বাবা মা অনেক সময়েই ওঁর কাছে আমাকে রেখে যেত। আমার তখন 3-4 বছর বয়স। সারাজীবন ধরেই আমাকে অনেক রাস্তা দেখিয়েছেন মানুষটা। আমাকে স্নেহ করতেন। ওঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা তো রয়েইছে। আর যে ভালোবাসাটা আছে সেটা দেখা হলেই বোঝা যেত। আমরা দু'জনেই অনুভব করতাম। আমাকে দেখা হলেই আদর করতেন। বলতেন এই তো কদিন আগে তোকে বেবি সিট করতাম। এখন কত বড় হয়ে গেছিস। আমার এই বয়সেও আমাকে গাল টিপে দিতেন, জড়িয়ে ধরে আদর করতেন, গাল ধরে চুমু খেতেন, মাথার চুলটা নাড়িয়ে দিতেন।"

কথা বলতে বলতে বিক্রম ঘোষের গলা ভারী হয়ে আসে। তিনি বলেন, "গত বছর 15 ডিসেম্বরেই আমার ছোট ছেলেকে আদর করে আমার সঙ্গে কত ইয়ারকি, ঠাট্টা করেছিলেন। আর এ বছর মানুষটা নেই। আমি আজ গোয়ায়। গত বছর এখানেই দেখা হয় আমাদের। আমাকে অনেক ভাবে পথ চলার রাস্তা দেখিয়েছেন, বাজনার রাস্তা দেখিয়েছেন। ভারত কেন পৃথিবীর বুকে এরকম একটা আর্টিস্ট কল্পনা করা যায় না। সঙ্গীত জগতের যে ক্ষতিটা হল এটা অকল্পনীয়। আরও দশটা বছর বাঁচতে পারতেন জাকির দা। কাজ করতে হয় করছি। কিছুই ভালো লাগছে না আর। জাকির ভাই, জাকির জি বলে আর কাউকে ডাকব না কোনওদিন। ভাবতেই পারছি না।..."

ABOUT THE AUTHOR

...view details