হায়দরাবাদ, 18 জুলাই:দেশের যুবকদের রামোজি গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান রামোজি রাওয়ের থেকে অনুপ্রেরণা নিতে বললেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি এম বেঙ্কাইয়া নাইডু ৷ বুধবার ব্রহ্মকুমারীর পৃষ্ঠপোষকতায় সেকেন্দ্রাবাদের ইম্পেরিয়াল গার্ডেনে প্রয়াত শ্রী রামোজি রাওয়ের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি যুব সম্প্রদায়কে রামোজি রাওয়ের থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে দেশকে শক্তিশালী করার জন্য তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানালেন ৷ গত 8 জুন রামোজি গ্রুপের চেয়ারম্যান রামোজি রাওয়ের জীবনাবসান হয় ৷
অনুষ্ঠানে বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন যে, সমাজ, বিশেষ করে গ্রামীণ মানুষ এবং কৃষকদের খুবই ভালোবাসতেন প্রয়াত রামোজি রাও । নাইডুর কথায়, "তিনি সবসময় মানুষের জীবনে আলো আনতে চেয়েছেন । তিনি সাংবাদিকতায় মূল্যবোধ অনুসরণ করেন । আজকের প্রজন্মকে তাঁর সম্পর্কে জানাতে হবে । অনেক লোক রামোজি রাওয়ের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের কথা এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তাঁরা যে জিনিসগুলি শিখেছে সে বিষয়গুলি ভাগ করে নিচ্ছেন ৷ সবগুলো সংগ্রহ করে ভালো বই হিসেবে আনতে হবে । সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছেন এমন মহান ব্যক্তিদের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করা দরকার । তাঁর অধ্যাবসায়, সমাজের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং মানুষের পক্ষে দাঁড়ানোর ইচ্ছাকে তরুণদের অনুপ্রেরণা হিসাবে গ্রহণ করা উচিত । তাঁদেরও উচ্চ পদে পৌঁছে সমাজকে জাগ্রত করে দেশকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করা উচিত ৷"
নাইডু বলেন যে, প্রয়াত রামোজি রাও যে কোনও বিষয় যত্ন সহকারে অধ্যয়ন করতেন এবং সময়ানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার জন্য তাঁর সুনাম ছিল । প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতির কথায়, "তিনি একটি সাধারণ পরিবার থেকে এসেছেন, তিনি আত্মবিশ্বাসকে বিনিয়োগ হিসাবে ধরে নিয়ে তাঁর যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং একজন অত্যন্ত শক্তিশালী ও দক্ষ যোদ্ধা হয়ে ওঠেন । জীবনে গৃহীত প্রতিটি কর্মসূচিতে তিনি ছিলেন অজেয় ও অনুকরণীয় । তিনি সারা জীবনে কোনও দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেননি ৷ তিনি ব্যবসায় যতই সফল হন বা যতই উপার্জন করুন না কেন, কখনওই প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার করেননি এবং খুব বিনয়ী জীবনযাপন করেননি ৷"
রামোজি রাও - দ্য পিপলস ম্যান
প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন যে, "তেলুগু সমাজ এবং বিশেষত ভারতীয় সাংবাদিকতায় রামোজি রাও-এর প্রভাব অসাধারণ । তাঁকে সাংবাদিকদের কারখানা বলা যেতে পারে । আমরা যদি তেলুগু মিডিয়া সেক্টর, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং ডিজিটাল মিডিয়ার দিকে তাকাই, যে কোনও সংস্থায়, বেশিরভাগ সাংবাদিকের শিকড় ইনাডু এবং ইটিভিতে । তাঁদের অনেকেই উচ্চ পদে আছেন । রামোজি রাওকে সাংবাদিকতায় অনেক লোককে দক্ষ করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়, যাঁরা সাধারণ শিক্ষায় পড়াশোনা করলেও সাংবাদিক হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ তাঁর সংস্থাতেই নিয়েছিলেন । মাটি থেকে মাণিক্য বের করে প্রতিভাকে সম্মানিত করার ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি মেলা ভার ৷"
নাইডু বলেন যে, গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ মিডিয়াকে জনগণের কাছাকাছি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ইনাড়ু-ইটিভি-র প্রচেষ্টা অতুলনীয় । তিনি বলেন, "মানুষকে দ্রুত সঠিক তথ্য সরবরাহ করতে এবং তৃণমূল স্তরে সরকারি প্রকল্পগুলি এবং তাদের বাস্তবায়ন সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা তৈরি করতে তিনি মিডিয়াতে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন, তা লক্ষাধিক মানুষের জীবনে ইতিবাচক ফলাফল এনেছে । যখনই গণতন্ত্রের জন্য বিপদে পড়েছেন এবং যখনই নেতারা স্বৈরাচারী প্রবণতা নিয়ে গণতন্ত্রকে উপহাস করেছেন, তখনই সাহসিকতার সঙ্গে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন রামোজি রাও ৷
দুর্যোগের সময় সাহায্য করায় সবার আগে
প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি বলেন যে, রামোজি রাওয়ের আরেকটি বিশেষত্ব ছিল ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে, তিনি কেবল জমি দান করেননি, সমাজের দাতাদের কাছে আবেদন করেছিলেন এবং তাঁদের সহযোগিতায় তিনি গৃহহীনদের জন্য বাড়ি তৈরির মতো মহৎ কাজগুলিও গ্রহণ করেছিলেন । রামোজি রাও তেলুগু ভাষা সংরক্ষণের জন্যও প্রচেষ্টা করেছেন ।