কলকাতা, 16 জানুয়ারি: মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার কারণে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক প্রসূতির মৃত্যু হয় ৷ ওই প্রসূতির সন্তান অসুস্থ ছিল ৷ বৃহস্পতিবার সেই সদ্যোজাতরও মৃত্যু হয় ৷ এই নিয়ে এদিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন সুকান্ত মজুমদার ৷
এদিন বঙ্গ বিজেপির সল্টলেকের দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন দলের রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রের রাষ্ট্রমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ৷ সেখানেই তিনি স্যালাইন-কাণ্ড নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘সাত দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর আজ সদ্যোজাতর মৃত্যু হয়েছে । এটা মৃত্যু নয় । এটা হত্যা । এই মৃত্যুর জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী ।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, খারাপ স্যালাইনের বিষয় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসকদের আগেই সতর্ক করা উচিত ছিল ।
এদিকে এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করেন ৷ সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন ৷ তার মধ্যে অন্যতম 12 জনকে সাসপেন্ড করার বিষয়টি ৷ এই নিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কোনও দায়িত্ব নেবেন না । তিনি সব দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন । উনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন ।’’
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন সারা রাজ্যে 42টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়েছে । তা নিয়ে সুকান্তর কটাক্ষ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু জেলায় সুপার স্পেশালিটির নামে কয়েকটা নীল-সাদা বাড়ি বানিয়ে রেখেছেন । তিনি আরও বলেন, ‘‘এই হাসপাতালগুলোতে কোনোরকম চিকিৎসা হয় না । বেশিরভাগ চিকিৎসক নেই, ওষুধ নেই, পাওয়া গেলেও সেইসব ওষুধ অতি নিম্নমানের ৷ এটা তো রোগীকে হত্যা করার সামিল ।’’
বঙ্গ বিজেপির সভাপতির প্রশ্ন, ‘‘স্যালাইন প্রোডাকশনের ওপর নিষেধাক্ষা থাকলেও তা রোগীর উপরে ব্যবহার করার নিষেধাজ্ঞা কেন জারি করা হল না ? তাহলে কি এই ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যভবন কিংবা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আর্থিক কোনও লেনদেন হয়েছে ?’’
স্কুলের প্রার্থী বেতন নেওয়ার জন্য আটটি স্কুলকে শোকজ করা হয়েছিল জানা গিয়েছে যে আরও বেশ কিছু সরকারি স্কুল বাড়তি টাকা নিয়েছে । এই নিয়ে কেন্দ্রের শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা রাজ্যের বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান যে রাজ্য সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে নচেৎ শিক্ষা ব্যবসায় পরিণত হবে । এই বিষয়ে পরিষ্কার নির্দেশিকা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জারি করা উচিত । পাশাপাশি জেলায় জেলায় স্কুলগুলিতে কোথায় কী রকম টাকা নেওয়া হচ্ছে, এই বিষয়ের উপরে রাজ্য সরকারকে নজরদারি করার জন্য কমিটি তৈরি করা উচিত ।
শিশুদের খাবারের ক্ষেত্রে যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের 60 শতাংশ টাকা আসে, তাই এই বিষয় কোথাও যদি কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকে, তাহলে সেটা বিজেপিকে জানানোর জন্য আবেদন করেন সুকান্ত । তিনি বলেন, ‘‘এই নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্ত করানো হবে । আমি দিল্লিতে এটা জানাব এবং তদন্ত করাব । কমিটি তৈরি করে মুর্শিদাবাদে পাঠাব । বাচ্চাদের খাবারের সঙ্গে দুর্নীতি করা হচ্ছে । মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক এই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন । এবং তিনি এর থেকে আর্থিক লেনদেনও করেছেন ।’’
রাজ্যে দুষ্কৃতীদের রমরমা নিয়ে তিনি তোপ দাগেন রাজ্যের বিরুদ্ধে ৷ সরাসরি পুলিশমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপদার্থ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি ৷