কলকাতা, 19 ফেব্রুয়ারি: চা বাগানের 30 শতাংশ জমি শিল্পপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার ৷ তাদের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিজেপি বিধায়করা বিধানসভা অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করার সিদ্ধান্ত নেন । বিধানসভার কক্ষ থেকে বেরিয়ে বিধানসভার সাউথ গেটে এই নিয়ে অবস্থানে বসেন বিজেপি বিধায়করা ।
চা বাগানে 30 শতাংশ জমিকে ফ্রি হোল্ড করা নিয়ে বুধবার বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাব নিয়ে আসে বিজেপি । অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সেই আবেদন খারিজ করে দেন । যেহেতু এদিন বাজেট নিয়ে আলোচনা রয়েছে তাই তিনি জানিয়ে দেন, এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব গ্রহণ করা সম্ভব নয় । এক্ষেত্রে অধ্যক্ষ বিষয়টি নিয়ে পরে বিধানসভায় পাঠের অনুমোদন দেন । যদিও স্পিকারের এই সিদ্ধান্ত খুশি করতে পারেনি বিজেপি বিধায়কদের ৷ তাঁরা প্রথমে বিধানসভায় হইচই করেন ৷ পরে বিধানসভা থেকে স্লোগান দিতে দিতে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা ।
প্রসঙ্গত, আগে চা বাগানের 15 শতাংশ জমিতে ফ্রি হোল্ডের মাধ্যমে পর্যটন শিল্প করার রীতি ছিল । শেষ বৈঠকে রাজ্য মন্ত্রিসভার তরফে এই ফ্রি হোল্ডের পরিমাণ বাড়িয়ে 30 শতাংশ করা হয় । এদিন সেই বিষয়টি নিয়েই মূলত প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিজেপি । মুলতুবি প্রস্তাব এনে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা চেয়েছিল গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা । এ দিন বিধানসভার প্রথম অর্ধের শেষ দিকে বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামা, মনোজ ওরাওঁ, শঙ্কর ঘোষ, নিরজ জিম্মা, বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা সম্মিলিতভাবে এই মুলতবি প্রস্তাব আনেন ।
বিশাল লামা বলেন, "চা বাগানের জমি 30 শতাংশ ফ্রি হোল্ড করার কথা রাজ্য জানিয়েছে । এর বিরোধিতায় মুলতবি প্রস্তাবে আমরা আলোচনা চাই । স্পিকার পাঠ করতে দিলেও আলোচনার দাবি খারিজ করে দেন । এরপরেই বিক্ষোভ শুরু হয় হাউজে । বিজিবিএসে 30 শতাংশ চা বাগানের জমি ফ্রি হোল্ড করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যা উত্তরবঙ্গ-সহ পাহাড়ের চা বাগানের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক হতে চলেছে ।"
বিজেপির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার চা শিল্প এবং এর শ্রমিকদের কল্যাণে কিছুই করেনি । বরং চা শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে ৷ 30 শতাংশ জমি বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণভাবে চা শিল্পকে প্রভাবিত করতে পারে ৷ বেকারত্ব বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে ।"
তাঁর সংযোজন, "রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি । রাজ্য সরকার সব সময়ই চা শ্রমিকদের প্রতি অন্যায় করেছে ৷ তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উপর ক্ষুব্ধ চা শ্রমিকরা । রাজ্য সরকারকে চা শ্রমিকদের উন্নয়নে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সেই সঙ্গে 60টি জমি লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে । নইলে আমাদের আন্দোলন চলবে ৷ পর্যটন শিল্পের নাম করে চা শিল্পের জমিকে ধ্বংস করতে দেব না ৷"