কলকাতা, 21 ফেব্রুয়ারি: বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কেরা বারবার রাজ্যের ঋণ নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেছেন। বিশেষ করে ঋণ প্রশ্নে রাজ্য সরকারের করা সমালোচনা করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী ৷ অবশেষে বিধানসভার ভাষণে রাজ্যের ঋণ প্রসঙ্গে তাঁদের কটাক্ষের জবাব দিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বাজেট বিতর্কের আলোচনা শেষে পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের ঋণের হার মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যের তুলনায় অনেক কম।
রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "সরকার পরিচালনার জন্য প্রতিটি রাজ্যই নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ঋণের সাহায্য নেয়। পশ্চিমবঙ্গও সেই নিয়ম মেনে ঋণ নিচ্ছে । এফআরবিএম (FRBM) আইনের গণ্ডির মধ্যেই রাজ্য সরকার ঋণ নিচ্ছে । এর জন্য কেন্দ্রীয় সীমারেখা কোনওভাবেই লঙ্ঘন করেনি রাজ্য।"
মহারাষ্ট্র-তেলেঙ্গানার তুলনায় কম ঋণ নিচ্ছে বাংলা
দেশের বাকি রাজ্যগুলির সঙ্গে তুলনা টেনে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "আগামী অর্থবর্ষে রাজ্য সরকার আনুমানিক 7 লক্ষ 71 হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার সংস্থান রেখেছে । কিন্তু অঙ্কের বিচারে এই ঋণের পরিমাণ মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা ও উত্তরপ্রদেশের চেয়ে অনেকটাই কম ৷" এই রাজ্যগুলির ঋণের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন । তিনি বলেন, "পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মহারাষ্ট্র তাদের বাজেটে 8 লক্ষ 12 হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে । উত্তরপ্রদেশ ঋণের পরিমাণ রেখেছে 8 লক্ষ 57 হাজার কোটি টাকা ।"
পাশাপাশি কংগ্রেস শাসিত তেলেঙ্গানায় বাজেটে 8 লক্ষ 75 হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার কথার উল্লেখ করেছেন তিনি । অর্থ প্রতিমন্ত্রীর কথায়, "রাজ্যের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের সঙ্গে ঋণের অনুপাত ক্রমশ কমছে । সেই নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ এখন দেশের প্রথম চার সেরা রাজ্যের তালিকায় রয়েছে ।"
বিজেপি শাসিত রাজ্যের ঋণের অনুপাত বেশি
এদিন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও বিহারের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ ৷ এসব রাজ্যের ঋণের পরিমাণ বেশি হওয়ায় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের তুলনায় ঋণের অনুপাতের তালিকায় তারা নীচের দিকে নেমে গিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি । রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের জবাবে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, "পরিসংখ্যানই প্রমাণ করছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক পরিস্থিতি অনেক ভালো।"