নয়াদিল্লি, 16 ফেব্রুয়ারি: দুর্ঘটনা নয়াদিল্লি স্টেশনে ৷ মহাকুম্ভের ত্রিবেণী সঙ্গমে পদপিষ্টে মৃত্যু মিছিলের ঘটনা এখনও তাজা ৷ তারমধ্যে ফের পদপিষ্টে মৃত্যু হল বহু পুণ্যার্থীর ৷ মহাকুম্ভগামী যাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা নয়াদিল্লি স্টেশনে হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে প্রাণ গেল অন্তত 18 জনের ৷ ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ কেন্দ্রীয় সরকার এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
আহত হয়েছেন অন্তত 12 জন ৷ আহতদের চিকিৎসার জন্য় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্ল্যাটফর্ম নম্বর 12, 13, 14, 15 এবং 16 নম্বরে অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে ঘটে দুর্ঘটনাটি। জানা গিয়েছে, মহাকুম্ভে যাওয়ার জন্য নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে ট্রেন ধরতে নয়াদিল্লি স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন শয়ে শয়ে যাত্রী। এদিকে ট্রেন আসতে দেরি হচ্ছিল।
ফের পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ গেল অন্তত 18 জনের (ইটিভি ভারত) রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বারাণসীগামী শিবগঙ্গা এক্সপ্রেস প্ল্যাটফর্মে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন ধরতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় যাত্রীদের মধ্য়ে। তখনই ভিড়ের চাপে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি ৷ তার মধ্যেই পড়ে যান কিছু পুণ্যার্থী, যাত্রী ৷ লোক নায়ক হাসপাতাল প্রশাসন 18 জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মৃতদের মধ্যে 10 জন মহিলা এবং 3 শিশুও রয়েছে ৷
রেল কর্তাদের মতে, রবিবার ছুটির দিন হওয়ায়, শনিবার প্রচুর সংখ্যক মানুষ প্রয়াগরাজে যাওয়ার জন্য জড়ো হয়েছিলেন নয়াদিল্লি স্টেশনে। শনিবারও প্রচুর জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছে। ফলে অতিরিক্ত ভিড়ের চাপ ছিল নয়াদিল্লি স্টেশনে ৷
ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ৷ নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তাঁরা। রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান সতীশ কুমার নয়াদিল্লি স্টেশনে পৌঁছেছেন এবং বিষয়টির উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি রেলস্টেশনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। দিল্লি পুলিশ এবং আরপিএফ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ ভিড় সামাল দিতে বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে।"
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, রেলওয়ে বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক (তথ্য ও প্রচার) দিলীপ কুমার ট্রেন বাতিলের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, "হঠাৎ ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনতে তাৎক্ষণিকভাবে 4টি বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ভিড় অনেক কমে গিয়েছে।
দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মারলেনা সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন, "প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে যাওয়া পুণ্যার্থীদের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। কেন্দ্রীয় সরকার বা উত্তরপ্রদেশ সরকার কেউই মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নয়। প্রয়াগরাজে কোনও ব্যবস্থা নেই, দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত ভক্তদের জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট যান চলাচলের ব্যবস্থাও করা হয়নি। আমি রেলকে অনুরোধ করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জনগণকে সাহায্য করার জন্য।"
এর আগে গত 29 জানুয়ারি মহাকুম্ভের সঙ্গমে পদপিষ্ট ঘটনায় দেখা গিয়েছিল মৃত্যু-মিছিল ৷ সেদিন রাত 1.30 মিনিট নাগাদ সঙ্গমে প্রবল জনজোয়ারের চাপে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷ সেদিনের ঘটনায় মৃত্যু হয় অন্তত 30 জনের। আহত হন 90 জন। মহাকুম্ভে পুণ্যস্নানের জন্য নদীর তীরে সমস্ত ঘাট বরাবর প্রায় 12 কিলোমিটার দীর্ঘ জনসমুদ্র তৈরি হয় ৷ সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে না-পারাতেই ঘটে বিপত্তি ৷