মুম্বই, 13 জুন: তীব্র গরমে শরীরটা একটু ঠান্ডা করার আশায় অনলাইনে আইসক্রিম অর্ডার দিয়েছিলেন এক মহিলা ৷ ফুড ডেলিভারি অ্যাপের এনে দেওয়া সেই আইসক্রিম যে শুধু শরীর নয়, একেবারে হাড়হিম করে দেবে তা বোধহয় দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি তিনি ৷ তাঁর আনানো সেই আইসক্রিমের 'কোন'-এ কামড় দেন তাঁর ডাক্তার ভাই ৷ তখনই মুখের ভেতর অদ্ভুত কিছু একটা শক্ত বস্তুর উপস্থিতি বুঝতে পারেন তিনি ৷ প্রথমে ভেবেছিলেন বাদাম বা বড় চকোলেটের কোনও টুকরো ৷ তবে সন্দেহ হওয়ায় সেটিকে মুখ থেকে বের করে এনে তিনি দেখেন, আইসক্রিমের সঙ্গেই তাঁর মুখে গিয়েছে মানুষের একটি কাটা আঙুল ৷ সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ খবর দেয় এই পরিবার ৷
মুম্বইয়ের মালাদের ঘটনা ৷ শহরের এক ডাক্তারের অভিযোগ, তাঁর বোন 12 জুন অনলাইনে তিনটি আইসক্রিমের 'কোন' অর্ডার করেছিলেন ৷ একটি খাবার ডেলিভারি অ্যাপের মাধ্যমে সেই আইসক্রিম তাঁর বাড়িতে আসে ৷ আর তারপরেই এই বিপত্তি ৷
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া সেই আইসক্রিমের একটি স্ন্যাপশটে দেখা যাচ্ছে, একটি মানুষের কাটা আঙুল আইসক্রিমটির উপরের অংশ থেকে বেরিয়ে এসেছে । হাতের সেই আঙুলে আবার একটি নখও দেখা গিয়েছে ৷ মুখের ভেতর থেকে বের করা বস্তুটি মানুষের কাটা আঙুল - এটা দেখেই আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে যায় ওরলেম ব্রেন্ডন সেরাওয়ের ৷ 27 বছরের চিকিৎসক তাঁর বোনের সঙ্গে মালাদ থানায় গিয়ে আইসক্রিম সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন । পুলিশ আইসক্রিমটি তদন্তের জন্য নিয়েছে এবং আঙুলটি ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠিয়েছে ।
পুলিশ জানিয়েছে যে, যেখানে ওই আইসক্রিমটি তৈরি হয়েছে এবং তার প্যাকেজিং করা হয়েছে, সেই জায়গাটি অনুসন্ধান করবেন আধিকারিকরা । পুলিশের ওই আধিকারিকের কথায়, "মামলার অভিযোগকারী, এমবিবিএস ডিগ্রিধারী ডাক্তার থাকেন মালাদ পশ্চিমে ৷ তিনি একটি বাটারস্কচ আইসক্রিমের কোন অর্ডার করেছিলেন । আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই মামলা গ্রহণ করেছি । কর্মচারী আহত হওয়ার পরে আঙুলটি আইসক্রিম মেশিনে পড়ে থাকতে পারে ৷"
অভিযোগকারী সেরারাও বলেন যে, তিনি একটি বাটারস্কচ আইসক্রিম-সহ তিনটি আইসক্রিম 'কোন' অর্ডার করেছিলেন । তিনি জানান, "কোনটি থেকে আইসক্রিম খাওয়ার সময় মাঝপথে এসে আমি আমার মুখে কিছু একটা অদ্ভুত শক্ত জিনিস অনুভব করি । প্রথমে ভেবেছিলাম বাদাম বা চকোলেট ৷ পরে তা বের করে ভালোভাবে যখন দেখলাম, তখন বুঝতে পারলাম যে, এটি একটি মাংসের টুকরো যার একটি নখও আছে । দেখে মনে হল, মানুষের আঙুল ৷ আর তখনই ঘাবড়ে যাই ৷ পুলিশের কাছে প্রমাণ হিসেবে দেখানোর জন্য আমি এটি আলাদা করে রেখে দিয়েছিলাম ৷"
এই বিশ্রী অভিজ্ঞতার পর গতকাল থেকে তিনি তাঁর জিভে অসাড়তা অনুভব করছেন বলে জানান ওই চিকিৎসক । তাঁর কথায়, "আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না যে, আমি কীভাবে আমার মুখের মধ্যে মানুষের শরীরের একটি অংশ ধরে রেখেছিলাম । প্যাকেজটি এক মাস আগে তৈরি করা হয়েছিল। আমাদের দেশে খাদ্য সরবরাহ পরিষেবার অবস্থা এমন । হতে পারে যে মানুষের আঙুলের থেকে ওই আইসক্রিমটি এতদিনে দূষিত হয়ে পড়েছে ৷ তাই আমার পুঙ্খানুপুঙ্খ রক্ত পরীক্ষা করা উচিত বলে আমার মনে হয় ৷" তাঁর পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার থাকায় এদিনের ঘটনার কথা মনে পড়লেই তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন বলেও জানান ওই চিকিৎসক ৷