রুদ্রপ্রয়াগ, 1 অগস্ট: ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড ৷ কেদারনাথ যাত্রাপথে রুদ্রপ্রয়াগে প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে দুটি সেতু ৷ গৌরীকুন্ডে ভেসে গিয়েছে তপ্তকুন্ড ৷ এই পরিস্থিতিতে আপাতত স্থগিত করা হল কেদারনাথ যাত্রা । মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি আজ রুদ্রপ্রয়াগ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির আকাশপথে পরিদর্শন করবেন।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে কেদারনাথ ধামে ভারী বৃষ্টিপাত ৷ এর কারণে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে । মুষলধারে বৃষ্টিতে মন্দাকিনী নদী ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে ৷ কেদারনাথের ফুটপাথের অনেক জায়গায় তলিয়ে গিয়েছে । রাস্তাও ভেসে গিয়েছে অনেক জায়গায় । এমন পরিস্থিতিতে পুণ্যার্থীদের সমস্যা বেড়েছে । সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কেদারনাথের ভীমবালি ও লিঞ্চোলিতে । কেদারনাথ রুটে ভীমবালি পোস্টের প্রায় 70 মিটার সামনে রাস্তার ক্ষতির কারণে 200 তীর্থযাত্রীকে জিএমভিএন এবং পুলিশ পোস্টে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে রাখা হয়েছে ।
কেদারনাথের রামবাড়ায় মন্দাকিনী নদীর উপর অবস্থিত দুটি সেতু ভেসে গিয়েছে । এই সেতুগুলো ছিল পুরনো রুটে । ভ্রমণকারীরা এবং ঘোড়সওয়াররা এই সেতুগুলিকে শর্টকাট রুট হিসাবে ব্যবহার করত । জেলাশাসক সৌরভ গহরওয়ার ফোনে ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন, কেদারনাথ ধামে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে । এ কারণে মন্দাকিনী নদীর জল বৃদ্ধি পেয়ে গাদেরাতে নেমে এসেছে । গদারের জল বৃদ্ধি পাওয়ায় ফুটপাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । মন্দাকিনী নদীর জল বৃদ্ধির কারণে গৌরীকুন্ডে অবস্থিত তপ্তকুন্ডটি ভেসে গিয়েছে ৷ সব যাত্রী নিরাপদে রয়েছে । প্রশাসনও যথাসময়ে সোনপ্রয়াগের হোটেলটি খালি করেছে । প্রতিটি ঘটনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি করা হচ্ছে ৷
অন্যদিকে, তেহরি জেলায় জাখানিয়ালিতে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে একটি হোটেল। ওই হোটেলের ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের তিন জনের । এসডিআরএফকে ওই তিনজনকে উদ্ধার করতে হিমশিম খেতে হয় । অনেক চেষ্টার পর উদ্ধারকারী দল তাঁদের খুঁজে বের করে ৷ তবে ঘটনাস্থলেই দু'জনের মৃত্যু হয় ৷ একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ পরে তাঁরও মৃত্যু হয় ৷
মৃতরা হলেন জখানিয়ালির সারোলি টোকের বাসিন্দা ভানু প্রসাদ (50) এবং তাঁর স্ত্রী নীলম দেবী (45) এবং ছেলে ভিপিন (28) ৷ বৃষ্টির জেরে মুয়ালগাঁওয়ের ঘানসালি-চিরবিটিয়া মোটরওয়ের সংযোগকারী কালভার্টটিও ভেসে গিয়েছে । ঘটনাস্থলে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ করছে এসডিআরএফ । জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা আধিকারিক তেহরি ব্রিজেশ ভাট জানিয়েছেন, জেসিবি মেশিন দিয়ে ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ চলছে ।
হরিদ্বারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ধীরাজ সিং গারবিয়াল জানিয়েছেন, মহব্বত ওরফে কালার বাহাদরাবাদ থানার ভাউরি ডেরায় বাড়ি রয়েছে । বৃষ্টিতে ওই বাড়ির ছাদ ধসে পড়ে ৷ এই ঘটনায় বাড়িতে থাকা 11 জন ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান । যাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে । তবে ছাদ ধসে ঘটনাস্থলেই 10 বছর বয়সি আস মহম্মদ ও 8 বছরের নাগমার মৃত্যু হয় এবং আহত হয়েছেন 9 জন । আহতদের জিডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।