হায়দরাবাদ, 12 এপ্রিল: জালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যা ৷ 1919 সালের 13 এপ্রিল ঘটেছিল পঞ্জাবের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ৷ 105 বছর আগের সেই দিনটিকে এখনও ভারতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিন বলা হয় ৷ যে ঘটনার অভিঘাতে ব্রিটিশদের দেওয়া ‘নাইটহুড’ উপাধি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৷
কী ঘটেছিল সেদিন: বৈশাখী উপলক্ষ্য়ে 1919 সালের 13 এপ্রিল প্রায় 15-20 মানুষ জালিয়ানওয়ালাবাগে হাজির হয়েছিলেন ৷ পঞ্জাবের অমৃতসরের ছ’সাত একরের ওই মাঠে তাঁরা হাজির হয়েছিলেন ড. সত্যপাল ও ড. সইফুদ্দিনের গ্রেফতারির প্রতিবাদ করার জন্য ৷ কারফিউ উপেক্ষা করেই তাঁরা সেখানে হাজির হন ৷ ব্রিটিশ বাহিনীর নির্বিচারে চালানো গুলিতে সেদিন বহু মানুষের প্রাণ যায় ৷
কতজন মারা গিয়েছিলেন, সেই নিয়ে দ্বিমত রয়েছে ৷ ব্রিটিশ সরকার তদন্তের পর জানায় যে মৃতের সংখ্যা 379 ৷ কিন্তু কংগ্রেসের দাবি ছিল হাজারখানেকের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন ৷ এখনও সেখানে বুলেটের দাগ দেখা যায় ৷ এই ঘটনা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অভিমুখ অনেকটাই বদলে দিয়েছিল ৷
উধম সিংয়ের প্রতিশোধ: জেনারেল ডায়ারের নির্দেশেই সেদিন গুলি চলেছিল ৷ সেই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী ছিলেন উধম সিং ৷ চোখের সামনে সেদিন তিনি হাজার হাজার নিরাপরাধ মানুষকে মারা যেতে দেখেছিলেন ৷ তাই তিনিও প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন ৷ ওই ঘটনার সময় পঞ্জাবের গর্ভনর ছিলেন মাইকেল ও’ডয়ের ৷ 1940 সালে লন্ডনে তাঁকে হত্যা করেছিলেন উধম সিং ৷ তবে ততদিনে মারা গিয়েছেন জেনারেল ডায়ার ৷ 1927 সালে তিনি মারা যান সেরিব্রাল হেমারেজ ও আর্টেরিওস্কোলেরোসিসের কারণে ৷
জালিয়ানওয়ালাবাগ নিয়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী: 10 এপ্রিল 2019, ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন ৷ ওই বছর ওই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের শতবর্ষ ছিল ৷ সেই প্রেক্ষিতেই ব্রিটেনের হাউস অফ কমন্সে তাঁর সাপ্তাহিক প্রশ্নের শুরুতে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন । এই ঘটনাকে তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় ইতিহাসে ‘লজ্জাজনক দাগ’ হিসাবে বর্ণনা করেন ।