নয়াদিল্লি, 19 জানুয়ারি: রাম মন্দিরের উদ্বোধন ও রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের জন্য ভগবান রামচন্দ্রের উপহারের তালিকায় রয়েছে কনৌজের বিশেষ পারফিউম, অমরাবতী থেকে 500 কেজি 'কুমকুম' পাতা, দিল্লির একটি রাম মন্দিরে সংগ্রহ করা শস্য, ভোপালের ফুল এবং মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা থেকে 4.31 কোটি বার লেখা 'প্রভু রাম' লেখা কাগজ ।
রাম মন্দির পরিচালনা কমিটি একটি 108 ফুট ধূপকাঠি, 2100 কেজির ঘণ্টা, 1100 কেজি ওজনের একটি বিশাল প্রদীপ, সোনার পাদুকা, একটি 10-ফুট উঁচু তালা ও চাবি এবং একই সঙ্গে আটটি দেশের সময় দেখা যায় এমন একটি ঘড়ির মতো অন্যান্য উপহার পেয়েছে ।
নেপালের জনকপুরে সীতার জন্মস্থান থেকেও তিন হাজারের বেশি উপহার এসেছে । এর মধ্যে রয়েছে জনকপুর ধাম রামজানকী মন্দির থেকে প্রায় 30টি গাড়ির একটি কনভয়ে আনা হয়েছে রূপোর জুতো, অলঙ্কার এবং কাপড় । শ্রীলঙ্কার একটি প্রতিনিধি দল রামায়ণে উল্লিখিত অশোক ভাটিকার বাগান থেকে একটি বিশেষ উপহার নিয়ে এসেছে ৷
মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের একটি নার্সারি অযোধ্যায় 10 হাজার বোগেনভেলিয়া ফুল পাঠিয়েছে যা মন্দির প্রাঙ্গণকে সাজাতে ব্যবহার করা হবে । শুক্রবার, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব উজ্জয়নের মহাকালেশ্বর মন্দিরে তৈরি করে পাঁচ লাখ লাড্ডু পাঠাচ্ছেন ৷ যা নিয়ে পাঁচটি ট্রাক ইতিমধ্যেই অযোধ্যার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে ৷ প্রতিটি লাড্ডুর ওজন প্রায় 50 গ্রাম, এবং পুরো ট্রাকটিতে রয়েছে 250 কুইন্টাল লাড্ডু ।
মথুরার শ্রী কৃষ্ণ জন্মস্থান সেবা সংস্থাও নৈবেদ্য হিসাবে 200 কিলোগ্রাম লাড্ডু পাঠাচ্ছে ৷ তিরুপতির শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের সরকারি তত্ত্বাবধায়ক তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম এক লক্ষ লাডু দেবে । নাগপুর-ভিত্তিক শেফ বিষ্ণু মনোহর ঘোষণা করেছেন যে তিনি অনুষ্ঠানে ভক্তদের জন্য 7 হাজার কেজি 'রাম হালুয়া' নামে একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি তৈরি করবেন ৷ ফিরোজাবাদ থেকে 10 হাজারেরও বেশি চুড়ি শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে । হিন্দু ও মুসলিম উভয় শ্রমিকদের কয়েকমাস পরিশ্রমে তৈরি এই চুড়িতে ভগবান রাম, দেবী সীতা এবং ভগবান হনুমানের ছবি রয়েছে ।
অযোধ্যা মন্দিরের প্রাপ্ত উপহারগুলির মধ্যে রয়েছে আগ্রার বিখ্যাত 56 রকমের পিঠা, একটি রত্ন-খচিত পোশাক এবং রূপোর থালা ৷ রামলালার জন্য কনৌজের সুগন্ধি প্রস্তুতকারকরা বিশেষ পারফিউম এবং ঠান্ডা থেকে রক্ষা করার জন্য একটি 'আত্তার শামামা' দিচ্ছে । ইটা শহরের বাসিন্দাদের কাছ থেকে একটি 2 হাজার 400 কেজি ঘণ্টা দেওয়া হয়েছে ।
ঐতিহ্যবাহী নৈবেদ্যগুলির মধ্যে গুজরাত থেকে 500 কেজি ওজনের একটি 'নাগাদা' (বাদ্যযন্ত্র) এসেছে এবং কেরালার বিখ্যাত পদ্মনাভস্বামী মন্দির একটি 'ওনাভিলু' (এটি একটি সহজ, সংক্ষিপ্ত, ধনুক আকৃতির বাদ্যযন্ত্র এবং অন্যান্য দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায় এটি 'ধনুক' হিসেবে পরিচিত) দিয়েছে । অযোধ্যার অমাভা রাম মন্দিরও 2.5 কেজি ওজনের ধনুক দিচ্ছে ৷
ছত্তিশগড় থেকে গত মাসে 300 টন চাল ছাড়াও সম্প্রতি দুটি সবজি বোঝাই ট্রাক পাঠানো হয়েছে । দিল্লির একটি রাম মন্দিরে, চাল, গম এবং অন্যান্য ধরনের শস্য সংগ্রহ করা হচ্ছে অযোধ্যায় রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে পাঠানোর জন্য । গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল এর জন্য আমেদাবাদে 44 ফুট দীর্ঘ পিতলের পতাকা খুঁটি এবং অন্যান্য ছোট 6টি পতাকা খুঁটি পতাকা তুলেছেন ।
দেশের প্রধান টেক্সটাইল হাব সুরাতে তৈরি একটি বিশেষ শাড়ি মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে । এতে ভগবান রাম এবং অযোধ্যা মন্দিরের ছবি ছাপানো হয়েছে ৷ এটি সীতার জন্য দেওয়া হচ্ছে ।
এক হীরা ব্যবসায়ী রাম মন্দিরের থিমে 5 হাজার আমেরিকান হীরা ও 2 কেজি রূপো দিয়ে নেকলেস তৈরি করেছেন ৷ 40 জন কারিগর 35 দিনের মধ্যে নকশাটি সম্পূর্ণ করেছেন ৷ নেকলেসটি রাম মন্দির ট্রাস্টকে উপহার দেওয়া হয়েছে । ভগবান রামের প্রতি অটল ভক্তি এবং তাঁর 'কর সেবক' পিতার স্বপ্নপূরণের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে হায়দরাবাদের 64 বছর বয়সি চল্লা শ্রীনিবাস শাস্ত্রী সোনার প্রলেপ দেওয়া পাদুকা উপহার দেওয়ার জন্য প্রায় 8 হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে পায়ে হেঁটে অযোধ্যায় পৌঁছেছেন ৷ ভাদোদরার এক কৃষক অরবিন্দভাই মঙ্গলভাই প্যাটেল 1 হাজার 100 কেজি ওজনের একটি বিশাল বাতি তৈরি করেছেন ৷
উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দিরে ভগবান রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান রয়েছে 22 জানুয়ারি অযোধ্যায় আয়োজন করা হবে । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সহ উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং সারা দেশ থেকে হাজার হাজার বিশিষ্টজনকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ।