অম্বিকাপুর (ছত্তিশগড়), 20 জুলাই: রক্ষকই ভক্ষক ! 12 বছরের নাবালিকাকে প্রথমে জেঠু ও পরে ধর্ষণ করেছে বাবা ৷ শুক্রবার দুই দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল অতিরিক্ত দায়রা জজ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট ৷
বিশেষ আদালতে পকসো আইনে বিচারক কমলেশ জগদল্লার এজলাসে এই মামলার শুনানি হয় । শুনানিতে সরকারের পক্ষে সওয়াল-জবাব করেন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর রিতা সেন । আদালত এই ঘটনাটিকে গুরুতর এবং বিরল বলে বিবেচনা করেছে ৷ কারণ মেয়েকে রক্ষা করার বদলে বাবাই তার উপর শারীরিক নির্যাতন করেছে ।
এই মামলায় আদালত জেঠুকে 506 (2) ধারায় 2 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও 100 টাকা জরিমানা, 376(এ) (বি) ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (আমুত্যু) এবং 50,000 টাকা জরিমানা, ধারা 376(2)(এফ) এর অধীনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (আমৃত্যু) এবং 500 টাকা জরিমানা, ধারা 5(এন) এবং (ই)/6-এর অধীনে শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ প্রতিরোধ আইনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (আমৃত্যু) এবং 500 টাকা জরিমানা করেছে ।
পুলিশে অভিযোগ দায়ের করায় বাধা ও হুমকি দেওয়ার জন্য দোষী বাবাকে 202 ধারায় 6 মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং 100 টাকা জরিমানা, 506 ধারার অধীনে 2 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং 100 টাকা জরিমানা করা হয়েছে ৷ এই মামলায় আদালতের তরফে ক্ষতিপূরণ হিসাবে নাবালিকাকে 5 লক্ষ টাকা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে ৷
দ্বিতীয় মামলায় নিজের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের জঘন্য কাজ করায় নৃশংস বাবাকে সাজা দিয়েছে আদালত ৷ অতিরিক্ত দায়রা জজ ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশাল কোর্টের বিচারক কমলেশ জগদল্লা পকসো আইনে এটিকে একটি গুরুতর এবং বিরল মামলা বিবেচনা করে 342 ধারার অধীনে 1 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং 500 টাকা জরিমানা, 376 (2) (এফ) ধারার অধীনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (আমৃত্যু) সাজা দিয়েছেন এবং সঙ্গে 500 টাকা জরিমানা ৷ ধারা 376(3) এর অধীনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (আমৃত্যু) এবং ধারা 5(এন)/6 যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইনের অধীনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (আমৃত্যু) এবং 500 টাকা জরিমানা করা হয়েছে ৷
অম্বিকাপুর আদালত তরফে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে 2020 সালের 18 নভেম্বর ৷ গান্ধিনগর থানা এলাকায় 12 বছরের নাবালিকা তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দাদু-দিদার বাড়িতে গিয়েছিল । সেসময় নাবালিকাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে জেঠু । মেয়েটি শব্দ করার চেষ্টা করলে তাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সে ৷ এরপর নাবালিকা বাড়ি ফিরে মাকে ঘটনাটি জানায় ।
এরপর ক্ষুব্ধ মা লাঠি দিয়ে মারধর করেন নাবালিকার জেঠুকে । তারপর মেয়েকে নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে যেতে গেলে স্বামী মহিলাকে বাধা দেন এবং মানহানির অজুহাত দেখিয়ে অভিযোগ করতে বারণ করেন । নাবালিকার মা এরপরেও অভিযোগ জানাতে যাবেন বলে মনস্থির করেন ৷ তখন ওই ব্যক্তি অভিযোগ জানাতে গেলে নাবালিকা মেয়ে ও স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয় । ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মা ও মেয়ে ৷ তারা আর পুলিশের দ্বারস্থ হয় না ৷
কাট টু 2021 সালের 18 জুলাই ৷ এই ঘটনার কয়েক মাস পরে ওইদিন সন্ধ্যায় নাবালিকাকে তার বাবা বোরওয়েল পাম্প বন্ধ করতে পাঠায় । মেয়েটি সেখানে পৌঁছলে বাবা তাকে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে । প্রথমে জেঠু এবং পরে নিজের বাবার নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতায় বিরক্ত হয়ে মেয়েটি তার মাকে ঘটনাটি জানায় । এরপরেই মেয়েটির মা সাহস সঞ্চয় করে তার বাপের বাড়ির পরিবারকে ঘটনাটি জানান । তারপরে মেয়েটির দাদু-দিদা এবং মামাদের সঙ্গে তিনি 19 জুলাই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন । মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ জেঠু ও বাবাকে গ্রেফতার করে সংশোধনাগারে পাঠায় ।