বিজাপুর, 6 জানুয়ারি: ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে সাংবাদিক খুনের প্রধান অভিযুক্ত সুরেশ চন্দ্রকরকে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছে সিট-এর সদস্যরা। গত 3 জানুয়ারি সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকর হত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে পেশায় ঠিকাদার ওই ব্যক্তি পলাতক ছিল।
খুনের মামলার তদন্তে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল রবিবার গভীর রাতে সুরেশ চন্দ্রকরকে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন আইজি (বস্তার রেঞ্জ) সুন্দররাজ পি। সোমবার সকালে অভিযুক্তকে বিজাপুরে আনা হয়েছে এবং তাকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন। সুরেশ চন্দ্রকরের ভাই রিতেশ চন্দ্রকর, দীনেশ চন্দ্রকর এবং সুপারভাইজার মহেন্দ্র রামটেককে ইতিমধ্যেই এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান আইজি।
জানা গিয়েছে, গত 1 জানুয়ারি নিখোঁজ হয়েছিলেন মুকেশ চন্দ্রকর (33) ৷ পেশায় ছিলেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ৷ পুলিশ জানিয়েছে, গত 3 জানুয়ারি বিজাপুর শহরের চট্টনপাড়া বস্তিতে সুরেশ চন্দ্রকরের মালিকানাধীন একটি ভবনের সেপটিক ট্যাঙ্কে সাংবাদিকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। নিহত ব্যক্তি এনডিটিভ-র ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি 'বস্তার জংশন' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলও চালাতেন ৷ যার প্রায় 1.59 লক্ষ গ্রাহক রয়েছে। 25 ডিসেম্বর এনডিটিভিতে বিজাপুরে একটি রাস্তা নির্মাণ সংক্রান্ত খবর পরিবেশন করেন মুকেশ। সেখানে নির্মাণের কাজে দুর্নীতি হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এই খবর করার কারণেই তাঁর প্রাণ গিয়েছে। সেই নির্মাণ কাজের সঙ্গে ঠিকাদার সুরেশ চন্দ্রকরের যোগসূত্র ছিল বলেও তদন্তে উঠে এসেছে ৷
ছত্তিশগড়ের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা দাবি করেছিলেন, সুরেশ চন্দ্রকর একজন কংগ্রেস নেতা। তবে বিরোধী দল দাবি করেছে, অভিযুক্তরা সম্প্রতি ক্ষমতাসীন বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। প্রশাসন অভিযুক্তদের অবৈধ সম্পত্তি এবং দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে। বিজাপুর-গঙ্গালুর রোডের পাশে বনভূমি দখলের পর সুরেশ চন্দ্রকরের নির্মিত একটি নির্মাণও ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন ৷
এর পাশাপাশি পুলিশ সুরেশ চন্দ্রকর এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত সুরেশ চন্দ্রকরের তিনটি অ্যাকাউন্টে লেনদেন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রবিবার মাহার সম্প্রদায়ের সদস্যরা সাংবাদিক হত্যার নিন্দা জানাতে এবং অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে মোমবাতি মিছিলও বের করেন। শনিবার, অভিযুক্তদের সাংবাদিকরা রায়পুর প্রেস ক্লাবে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন, বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে। (পিটিআই)